somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কপি পেষ্ট

১৭ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাইয়ার স্কুল বন্ধু নুরন্নবি গত হয়েছেন। তাকে নিয়ে এটা ভাইয়ার মৃত্যু পরবর্তী দ্বিতীয় পোষ্ট ফেইসবুকে। প্রথমটাও আমার এখানে সামু ব্লগে শেয়ার করেছি, এটাও করলাম।

Syed Ahmed Shameem
12m ·
প্রাণের দোস্তকে নিয়ে আরও কী লিখবো আল্লাহ জানে
আত্মার যে চোখ তাকে তো আমরা দেখি না
তথাপি আত্মার চোখে দেখি
আত্মাকে আমাদের চর্মচক্ষুর পাতে রেখে যখন তাকাই, চক্ষের দীনতা সত্ত্বেও, জগত আনন্দে ও ভয়ে বিহ্বল হয়ে পড়ে, ও রকম চর্মচক্ষের গভীরতা আমি পেতাম আমার মরহুম বন্ধু নুরুন্নবীর কণ্ঠে : দোস্ত, আমি ঘরবাড়ী বানাইছি দেখতে আসিও!
টলস্টয়ের গল্প না থাকলে নুরুন্নবীকে আমি ব্যাখ্যা করতে পারতাম না।
একবার তার বাড়ীতে গিয়েছি রাত্রি বেলা অনেক বছর পর, সে কী আশা করেছিল আর তার স্ত্রী কন্যা পরিজন পুছল না এ তোমার বাল্যের প্রিয় বান্ধব কিনা
এই ঘটনার কোনো আঞ্চলিক ভাষা ব্যাখ্যা না দিয়ে কেবল অজাগতিক করুণ এক হাসি হেসেছিল
নুরুন্নবীর দুঃখগুলো ফাদার সিয়ের্গি গল্পের পাশেনকার মতো, হয়তো অত গৌরবের নয় তথাপি তার দুঃখের নিচে পিংক কালার মেঘ ভেসে বেড়াতো হেসে হেসে
প্রাণের দোস্ত আত্মার বন্ধু এই শব্দগুলো আমি কোনোদিন বলতাম না নুরুন্নবী মারা না গেলে
অথচ এই অসংস্কৃত কালারলেস শব্দগুলোর মাঝে তেতাল্লিশ বছর ধরে সত্যসাধ লুকিয়ে ছিল!
নুরুন্নবীকে আমি আসলে চিনেছিলাম! নিজের প্রতি মূর্খ সরল পাগল যা তা ইত্যাদি আরোপের পর সে হা হা করে হাসতো। পাগলামি দেখে আমি অট্টহাসি দিতাম না কিন্তু এক অবিচ্ছিন্ন রম্যভাব দলবেঁধে আমার মনে ঘুরতো, অন্তর্গত এক হাসির রোল পেটের চাম ব্যথা করে দিত। এগুলো আমার আর নুরুন্নবীর যৈবক বয়স পর্যন্ত ঘটনার ইতিহাস। ঐসময় তরুণদের যেসব যৈবককালিন আন্তঃঅনাচার, নুরুন্নবী সেসব হতে অন্তত আমার অভিজ্ঞতায় আশ্চর্য মুক্ত। সে নিজেকে কখনও এতিম বলত না কিন্তু এতিমের এক আশ্চর্য সৌন্দর্য তার বিশাল শরীরজুড়ে ছায়া ছায়া ঘুরে বেড়াত আর প্রতিকার হিসেবে আমি তার আত্মঅবমাননামূলক সমস্ত হাসিঠাট্টা সরল অথচ বলিষ্ঠ রম্য বাক্যাবলী এমন সাদরে উপভোগ করতাম, সে কৃতার্থ হয়ে কেঁদে দেবার বদলে হেসে দিত। আমাকে সে কী মনে করতো স্পষ্ট কোনোদিন বলেনি। আমি যে লেখিটেখি এটা হয়তো তাঁকে আশ্চর্য অভিভূত করে দিত। আমিতো লেখার ভান করতাম খ্যাতির লোভে। মেহের আফজল হাই স্কুলে বাপের কবিতাখাতা নিজের নামে প্রচার করে দারুণ সাড়া ফেলে দিয়েছিলাম। আমার চোখে অভিজাত ছাত্র টিটু(পুরো নাম মনে নাই) বলেছিল, শামীম আমার আপা তোমার কবিতার খাতাটা নিতে বলেছে! এইরকম কবিখ্যাতি। একটুও গ্লানি আসে নাই যে পুরা খাতাটাই বাপের লেখা পদ্য দিয়ে ভরা। স্কুলের বাংলা স্যার(ইব্রাহিম স্যার?) পদ্যগুলো পড়ে বেকুব বনে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তুমি লিখেছ! শরমে মরে যাই আরকি। তবে শেষের দিকের কয়েকটা পদ্য স্বরচিত ছিল। হাতের লেখা দুইরকম অথচ কারো নজরে পড়লো না। এইরকম দুর্ধর্ষ খ্যাতির কালে নুরুন্নবীর সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেল!
প্রায় অবসরে তাঁর বাড়ীতে যাই। দুইজনে কী কী কথা বলি। স্কুল লেখাপড়া এসব কোনোদিন আলোচনার বিষয় ছিল না। আমি তো কবি। আর নুরুন্নবী পাগল। কোথায় লেখাপড়া। সে কারাতে শিখতো শাহজাদার কারাতে স্কুলে। বাড়ীর বাগানে সেসব প্রাকটিস করতো। মাঝে নেসাগু(মাঝে লোহা স্টিলের চেইন দুইদিকে কাঠের দুটি দণ্ড)র নেশা পেয়ে গিয়েছিল। আশ্চর্য দক্ষতা। কিন্তু মনে মনে আমি এসবের প্রতিপক্ষ খুঁজে নাকাল হয়ে যেতাম। নুরুন্নবী এসব ডেশিং একশন কার ওপর প্রয়োগ করবে! তার কোনো শত্রু আবিষ্কার করতে না পেরে কেমন যেন আউলবাউল লাগতো। সামনে কোনো সম্ভাব্য দুশমন না থাকলেও কীসের প্রেরণায় কারাতে, নেসাগুর পেছনে সে জীবনযৈবন ঢেলে দিয়েছিল, তখন বুঝতাম না। এখন বুঝি। সে আসলে কবি। সৃজন বিনে এক মুহূর্ত থাকতে পারে না। যখন কিছু করতো না শুধু কথা বলতো। আত্মঅবমাননামূলক রসিকতা।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:০৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×