সত্যি কথা বলতে গেলে, লেখার কাজটা খুবই ঝামেলাপূর্ণ। মনে হয়, মাথার ভিতর চিন্তাভাবনাগুলো ত্রিমাত্রিকভাবে থাকে। তাই যেভাবেই উল্টাও না কেন, বদলাবে না। কিন্তু লিখতে গেলে তাকে বানাতে হবে সরলরেখার মতো। তা না হলে পাঠককে বুঝানো মুশকিল। তাই বলে, পাঠকদের আমি ছোট করছি না। আমার মনে হয়েছে, আমাদের চিন্তাধারা ব্যক্ত করার প্রক্রিয়াটা ত্র“টিপূর্ণ। আর এজন্যই, অনেক চিন্তাশীল, ভালো সাহিত্যিক নন; আবার অনেক সাহিত্যিক আদৌ কোন চিন্তাশীল ব্যক্তি নন।
যাই হোকÑ আজকে আমি সত্য নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।
তিনটি কাল বা সময়ের কথা আমরা জানি। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত। মূলত, আমরা এই স্রোতে ভাসছি। ভেসে যাচ্ছি। অর্থাৎ একদিন হারাতে হবে। কিন্তু আমাদের কোন বিকার নেই। আমরা কোথা থেকে এসেছি জানি না, কোথায় যাবো তাও জানি না। আর এজন্যই হয়তো দশ বছর আগে যা ছিলাম, আজ আমি তা নই। দশ বছর পরে আরো অন্যরকম হবে। কিন্তু আপনাদের কি মনে হয়, মূল সত্য এটাই?
হ্যা, এইবার প্রশ্ন আসবে, মূল সত্যটা তাহলে কি? এই মূল সত্যের অন্বেষন করাটাই সবচেয়ে ঝামেলা। এজন্যই ‘দান্তে’ কে ইতালির তরুনীরা পাগল বলল আর অ্যাপোলোর ডেলফি থেকে স্বীকৃতি পাওয়া সক্রেটিস ষড়যন্ত্রের শিকার হলো। কিন্তু সত্যিকার অর্থে কে জিতল? সময়ের স্রোতও এই সত্যান্বেষীদের ভাসাতে পারল না। মনে হচ্ছে, আমাদের মাথার জট কিছুটা খুলতে শুরু করেছে।
এখানে দুটো দল। একদল স্রোতে ভেসে যাচ্ছে, আরেকদলকে স্রোত ভাসাতে পারছে না। সময়ের গন্ডি পেরিয়ে তারা ‘মহাকাল’ এ প্রবেশ করেছে। যেখানে কোন অতীত, বর্তমান কিংবা ভবিষ্যত নেই। সবাই মিলে একটি ব্যক্তিত্ব , যার চিন্তাধারা বিভিন্ন। অনেকটা আতশবাজির মত, উৎস একই অথচ নি:স্বরিত হচ্ছে বিভিন্নধারায় এবং চিরস্থায়ীভাবে।
এখন হয়তো চারিদিকে রব উঠবে, আমরাও সত্যোন্বেষী হতে চাই, মহাকালে পা রাখতে চাই। অবশ্যই। আপনি স্বাগতম। কিন্তু তার জন্য কি আপনি প্রস্তুতি নিয়েছেন? যদি প্রশ্ন করা হয়,আপনার ২৫ কিংবা ৩০ ন্ত যা শিখেছেন, সবই কি ঠিক? একটু চিন্তবছর বয়স পর্যায় পড়ে যাবেন। কারণ, আপনি যা জানেন, তার অনেক কিছুই ভুল। মিথ্যা। যা দেখেছেন, তার সবকিছুই কি ঠিক? না, সব ঠিক নয়। তাই র্যাবো বলেন “হয়তো দেখছি তারে, লোকে যারে বলে দেখা যায়।” কিন্তু এর মধ্যে তো কোন সমাধান নেই। তাহলে সমাধানটা কোথায়? নতুন করে সব শিখতে হবে। কিন্তু কিভাবে? তাই এখন চলে আসে ইতিহাস পর্যালোচনার কথা। একেকজন এক একভাবে চেষ্টা করেছেন। আপনি যেকোন পদ্ধতি গ্রহন করতে পারেন। অথবা নিজেও একটি পদ্ধতি তৈরি করতে পারেন। ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে 'দেকার্ত’ এর ‘ডিসকোর্স অন মেথড’ ভালো লেগেছে। জ্ঞানের পদ্ধতি বিষয়ক পর্যালোচনার ব্যাপারটি যতটা কঠিন মনে হচেছ, আসলে ততটা কঠিন নয়। শুধুমাত্র আপনাকে শুরু করতে হবে। বাকিটা প্রকৃতির নিয়মেই চলবে, সেখানে আপনি অবিচেছদ্য অংশ হিসাবে থাকবেন।...(চলবে)
-সাদী

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




