somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যবসায় সাংবাদিকতা: করার আছে অনেক কিছুই

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দ্রুতই জনপ্রিয় হচ্ছে ব্যবসায় সাংবাদিকতা বা অর্থনৈতিক সাংবাদিকতা। অথচ, সাংবাদিকতার এই শাখাকে অনেকেই মূল ধারার সাংবাদিকতা হিসেবে মানতে নারাজ। আবার অনেকেই মূল ধারার সাংবাদিকতার মতোই এই শাখাকেও সমান জনপ্রিয় মনে করেন। যা হোক, বিশ শতকের শুরুর দশক পর্যন্ত ব্যবসায় সাংবাদিকতা তেমন কোনো মনোযোগ টানেনি। রাজনীতি, সরকার, অপরাধ ইত্যাদি বিষয়ে মানুষের আগ্রহ ব্যবসায় সংবাদ থেকে বেশি ছিল। অর্থনীতির নানা প্রবণতা, ব্যবসার নানা বিষয় জানিয়ে দেওয়া, এই ব্যবসায় সাংবাদিকতার সূচনা মধ্যযুগে। কিছু ব্যবসায়ী পরিবারের যোগাযোগের স্বার্থেই এই সাংবাদিকতার প্রচলন হয়। ১৮৮২ সালে চার্লস ডাও, এডওয়ার্ড জোনস এবং চার্লস বার্গস্ট্রেসের একধরনের ওয়ার সার্ভিস চালু করেন, যার সাহায্যে ওয়াল স্ট্রিটের বিনিয়োগ হাউসগুলো সংবাদ পেতে শুরু করে। ১০০ বছরের বেশি সময় পর শেয়ারবাজারে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ বাড়তে থাকায় গণমাধ্যমে ব্যবসায় সাংবাদিকতা প্রাধান্য লাভ করতে থাকে। ইউরোপে পণ্যের মূল্যসংক্রান্ত খবর প্রকাশ শুরু হয় অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম ব্যবসায় পত্রিকা বাজারে আসে ১৭৯৩ সালে। ১৮৪৯ সালে জুলিয়াস রয়টার্স ইউরোপে বিজনেস সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করেন। যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের আÍপ্রকাশ ১৮৮৯ সালে। (সূত্র: ব্যবসায় সাংবাদিকতা, অজয় দাশগুপ্ত, রোবায়েত ফেরদৌস সম্পাদিত) বাংলাদেশে ব্যবসায় সাংবাদিকতা মনোযোগ পাচ্ছে খুব বেশি দিন ধরে নয়, কিন্তু এরই মধ্যে সাংবাদিকতার এই শাখায় কাজ করতে অনেকেই আগ্রহী। টেলিভিশন এবং পত্রিকায় অর্থনীতির সংবাদ সংগ্রহ করতে বিশেষায়িত সাংবাদিক তৈরি করা হচ্ছে। কোনো কোনো পত্রিকায় অর্থনীতি থেকে উচ্চ শিক্ষা নেওয়া, লোক নিয়োগ দেওয়া হয়, যাদের একাডেমিক রেজাল্ট অনেক ভালো। আর প্রতিটি পত্রিকাতে এখন আলাদা বিজনেস ডেস্ক আছে। সেখানে একজন বিভাগীয় সম্পাদকের তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক কাজ করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ে আলাদা পাতা বের হয় সেসব পত্রিকাতে। নতুন যেসব টেলিভিশন স¤প্রচারে আসার অপেক্ষায় আছে, সেখানেও আলাদা বিজনেস ডেস্ক করা হচ্ছে বলে শোনা যায়। এ ছাড়া স¤প্রচারে আছে এমন প্রতিটি চ্যানেলেই বিজনেস নিউজের পাশাপাশি এ বিষয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানও প্রচার করে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য এগিয়ে আছে একুশে টিভি। সকালে প্রায় চার ঘণ্টার বেশি ‘একুশে বিজনেস’ নামে একটি লাইভ অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়, যেখানে ব্যবসা বিশেষ করে শেয়ারবাজারের সংবাদ গুরুত্ব পায় বেশি। শেয়ারের মূল্যের ওঠানামা টিকারে প্রচার এবং বাজার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ, বাজার চলাকালে প্রচার করে এরই মধ্যে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে ব্যবসানির্ভর অনুষ্ঠানটি। এর কারণ পুঁজিবাজারের জনসম্পৃক্ততা। প্রায় ২৬ লাখ বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে এখন ঢাকার শেয়ারবাজারে। এদের মধ্যে অন্তত ১৫ লাখ বিনিয়োগকারী নিজেদের বিনিয়োগের খোঁজখবর রাখেন নিয়মিত। অঙ্কের হিসাবে যদি পাঁচ লাখ বিনিয়োগকারী নিজেদের শেয়ারের ওঠানামার খবর রাখতে আগ্রহী থাকেন, তবে সেই দর্শকদের নিজেদের পক্ষে রাখা একটি বুদ্ধিমান সিদ্ধান্তই বটে। একই সঙ্গে তা ব্যবসায় সাংবাদিকতার গুরুত্বও বাড়ায়। ফোনে শেয়ার কেনাবেচার অর্ডার দেওয়ার সুযোগ বিনিয়োগকারীদের আছে। সে সুযোগ কাজে লাগাতে নিজেদের শেয়ারের সর্বশেষ দামটি জানা দরকার। ইন্টারনেট এবং একুশে, দুটো মাধ্যমেই তা জানতে পারছেন চাকরিজীবী বা গৃহবধূ বা অন্য পেশার কর্মব্যস্ত বিনিয়োগকারীরা। ফলে এই অনুষ্ঠানের টিআরপি রেটিং ঊর্ধ্বমুখী। সব কটি চ্যানেল যখন রাজনীতি এবং বিভিন্ন চলমান ঘটনার সংবাদ প্রচার করে, তখন বিশেষায়িত চ্যানেলের দিকে দর্শক ঝোঁকে বেশি বলে মনে করেন একুশে টিভির বিজনেস এডিটর আহমেদ রাজু। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি উদীয়মান, ফলে অর্থনীতি বিষয়ে টেলিভিশনে আরও অনেক কিছুই করার সুযোগ রয়েছে। একুশে টিভির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম এই অনুষ্ঠানটি শুরু করতে সাংবাদিক শওগাত আলী সাগরকে বেছে নেন। তিনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন। পরে, আরও বেসরকারি চ্যানেলে শেয়ারবাজার নিয়ে অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। অবশ্য, অর্থনীতি বিষয়ে যত বেশি অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে, প্রতিযোগিতা তত বাড়বে। এতে ব্যবসায় সাংবাদিকতার মান যেমন বাড়বে, তেমনি উপকৃত হবে দেশের অর্থনীতিও। শেয়ারবাজারের খুঁটিনাটি অবশ্য দৈনিক পত্রিকাগুলোতে দেওয়া হয় প্রতিদিন। সেগুলোর পাঠকসংখ্যাও কম নয়। তবে সংবাদপত্র বা ইলেকট্রনিক এই দুই মাধ্যমে ব্যবসায় সাংবাদিকতার তুলনা করলে এগিয়ে থাকবে সংবাদপত্র। যদিও অনেকে বলে থাকেন, ব্যবসায় সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কিংবা কারও মতামত পাওয়া টেলিভিশনের সাংবাদিকদের জন্য সহজ। অনেক সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নিয়ে তা দিয়েই বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করতে পারে টিভি সাংবাদিক। কিন্তু যখন কোনো সংবাদ কারও বিপক্ষে যায়, তখন তাকে টেলিভিশনের সামনে আনা বেশ কঠিন। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে অন্যান্য শাখার মতো পত্রিকার ব্যবসায় সাংবাদিকেরা এগিয়ে। তারা একটি ঘটনার সূত্র ধরে অন্য আরেকটি ঘটনা খুঁজে বের করতে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন। কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে তা স¤প্রচার উপযোগী করতে দ্রুত অফিসে ফিরতে হয় টিভি সাংবাদিককে। অবশ্য কোনো একটি অনিয়ম উদ্ঘাটন করতে টিভির কর্তারা এগিয়ে এলে, টিভি রিপোর্টারদের পক্ষেও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করা খুব একটা কঠিন নয়। অজয় দাশগুপ্ত ও রোবায়েত ফেরদৌস সম্পাদিত ‘ব্যবসায় সাংবাদিকতা’ বইয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০২ সালের ৭ আগস্টে প্রথম আলোতে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ব্যাংক থেকে দেড় শতাধিক কোটি টাকা হাতিয়ে মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী উধাও। টিকাটুলিতে জোড়া খুনের যোগসূত্র কী? প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাংলাদেশ ব্যাংক অনুসন্ধান চালিয়ে একটি হুন্ডি চক্রের সন্ধান পায়। এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদক শওগাত আলী সাগর অজয় দাশগুপ্তকে বলেছেন, তিনি বন্ধুর সঙ্গে আড্ডায় কথা প্রসঙ্গে এ বিষয়ে জানতে পারেন। তার কথার সূত্র ধরেই ওই বন্ধুর পরিচিত এক ব্যাংকারের কাছ থেকে, কয়েক দিনের চেষ্টায় তিনি এই খবর বের করেছিলেন। যা হোক, গত ৮-১০ বছরে ব্যবসায় সাংবাদিকতায় পত্রিকার কোনো কোনো সাংবাদিকের ম্যাক্রো ইকোনমিতে এতটাই দখল এসেছে যে, তার ব্যাখ্যায় অর্থনীতিবিদদের চেয়ে কোনো অংশেই কম যাবেন না সেই সাংবাদিক। এই মন্তব্য করেছেন প্রথম আলোর জয়েন্ট অ্যান্ড বিজনেস এডিটর শওকত হোসেন মাসুম। তবে বেসরকারি খাতের করপোরেট কোম্পানির সংবাদ পত্রিকায় আসে কম। এর কারণ তিনি মনে করেন দুটো, এক. অনাগ্রহ বা প্রভাব বা যে কারণেই হোক, সাংবাদিকেরা এ ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারেননি। দুই. কোম্পানিগুলোর তথ্য পাওয়া যায় না। করপোরেট কোম্পানিগুলো সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে যতটা সোচ্চার, নিজেদের স্বচ্ছতা নিয়ে ততটা সোচ্চার নয় বলে মনে করেন শওকত হোসেন মাসুম। এদিকে, টেলিভিশনে বা পত্রিকায় বিশ্লেষণধর্মী ব্যবসায় প্রতিবেদনের অভাব বোধ করেন, অ্যামচেমের প্রেসিডেন্ট ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আফতাব উল ইসলাম। তিনি মনে করেন বাংলাদেশে ব্যবসায় সাংবাদিকতা আরও বিকাশের সুযোগ আছে। কোনো একটি ব্যবসা বাংলাদেশে কী অবস্থায় আছে, অন্য দেশে সে ব্যবসার অবস্থা কী, সংশ্লিষ্ট খাতে প্রতিযোগী কারা, তাদের সামর্থ্য কতটুকু, স্থানীয় বা আঞ্চলিক বাজারে সেই ব্যবসার সুযোগ আছে কতটুকু, সেসব বিষয়ে কোনো বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন পাওয়া যায় না সংবাদপত্রে বা টিভিতে, যা পেলে পাঠক বা শ্রোতা সেই ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা নিতে পারতেন। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংবাদ গণমাধ্যমে এখন গুরুত্ব পেতে শুরু করলেও তা তেমন নজরে আসছে না বলে মনে করেন আফতাব উল ইসলাম। এ ক্ষেত্রে ব্যবসায় সাংবাদিকদের অনেক কিছুই করার আছে বলে মনে করেন তিনি। যা হোক, সংসদে বাজেট উত্থাপনের দিনটি অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের কাছে, অন্যান্য যেকোনো দিনের চেয়ে আলাদা। উত্তেজনা ও আনন্দের একটি দিন। সে দিনটি অবশ্য পুরো গণমাধ্যমজুড়েই, মনোযোগের কেন্দ্রে থাকেন ব্যবসা-বাণিজ্য ডেস্ক ও এই ডেস্কে কর্মরত ব্যক্তিরা। ইলেকট্রনিক মিডিয়া অর্থাৎ টেলিভিশন বা রেডিওর সংবাদের প্রায় পুরোটাজুড়েই প্রচার করা হয় বাজেটের সংবাদ। কত টাকার বাজেট হলো, ঘাটতি কত, নতুন শুল্ক আরোপ করা হলো কি না, অর্থনীতিবিদদের দেওয়া বাজেটের ব্যাখ্যা, ব্যবসায়ী নেতাদের মন্তব্য আর সরকার ও বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়াÑসবই গুরুত্বপূর্ণ সেদিনের সংবাদে। যদিও কোনো দ্রব্যের দাম কত কমল, কত বাড়ল, সে প্রতিবেদনটিই সব মহলের নজর কাড়ে বেশি। তার পরও আগামী একটি বছর সরকার কীভাবে দেশ চালাবে, তার একটি নকশা জনগণের চোখের সামনে রাখা হয় সেদিন। আর এ বিষয়ে সব মহলকে বাজেটের প্রেক্ষাপটে সঠিক ধারণা দেওয়ার কাজটি বর্তায় অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের কাঁধে। বাজেটের পরদিন পত্রিকার পাতার প্রথম পৃষ্ঠার পুরোটাই দখলে থাকে অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের। তবে দেশে অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা ঘটলে তা আলাদা বিষয়। অবশ্য বাজেট পেশের বেশ কিছুদিন আগে থেকেই, বাজেটের প্রস্তুতি, কেমন বাজেট চাই, সেসব সংবাদ প্রকাশ পেতে শুরু করে। বাজেট উত্থাপন সরাসরি স¤প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভি। অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অবশ্য সরাসারি বাজেট-সম্পর্কিত অনুষ্ঠান স¤প্রচার করে থাকে। সেখানে অর্থমন্ত্রীর বক্তৃতা শুনে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডির গবেষকেরা, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নেতারা। এমনকি কোনো কোনো চ্যানেল পথচারী জনতার কাছেও জানাতে চায় তাদের বাজেট প্রতিক্রিয়া। বাজেট ছাড়া সাধারণত সরকারের নানা অর্থনৈতিক পলিসি, অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রীর নানা কার্যক্রম ও মূল্যায়ন, দাতা সংস্থার সহায়তা বা ঋণ অনুমোদন, বিনিয়োগ পরিবেশ বা বিনিয়োগের ঘোষণা, রেমিটেন্স, দ্রব্যমূল্য, ব্যবসায়ী সংগঠন, এনবিআরের নানা পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত, বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা সিদ্ধান্ত, শেয়ারবাজারের নানা দিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে অর্থনৈতিক সংবাদ এখন গণমাধ্যমে আসে। যেহেতু, জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নানাভাবে একজন মানুষকে নানা সেবা নিতে হয়, তাই নানা রকম ব্যবসা রয়েছে চারদিকে। ব্যবসায় সাংবাদিকতা তাই পরিসংখ্যান আর প্রবণতার গণ্ডি পেরিয়ে, হতে পারে আরও বর্ণিল আরও জীবনঘনিষ্ঠ। আমাদের তে স্বল্পোন্নত দেশে অর্থনৈতিক ইস্যু কেবল অর্থনীতিতে সীমিত থাকে না, তা কখনো কখনো এমনকি দ্রুতই রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন। অবশ্য বলা হয়, রাজনীতির সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক বেশ নিবিড়। অর্থনীতিকে বলা হয় সমুদ্রের বরফের সেই ৯০ ভাগ, যা লুকিয়ে থাকে পানির নিচে। সেটা দেখা যায় না। আর রাজনীতিকে বলা হয় একই বরফের ১০ ভাগ, যা বুক চিতিয়ে থাকে পানির ওপরে, সেটা দেখা যায়। এদিকে কৃষি অর্থনীতির সংবাদ, গুরুত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়াটি মাত্র শুরু হয়েছে বলে মনে করেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক বার্তা ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। অজয় দাশগুপ্ত ও রোবায়েত ফেরদৌস সম্পাদিত ব্যবসায় সাংবাদিকতা বইয়ে লেখা হয়েছে, কৃষি বা গ্রামের অর্থনীতি যে কেবল ধান-পাট নয়, এর বাইরেও রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা, সে চিত্র উঠে আসে শাইখ সিরাজের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানে। প্রত্যন্ত গ্রামে ছড়িয়ে থাকা কৃষি ও কৃষকের সাফল্য তিনি তুলে ধরেন একের পর এক। মাছ চাষ জনপ্রিয় করার জন্য যেমন প্রতিবেদন প্রচার করা হয়, তেমনি শহরে বসেও বাড়ির ছাদে ফুল-ফল চাষ কিংবা রোগীর খামার কীভাবে গড়ে তোলা যায়, তার বাস্তবধর্মী টিপস দেওয়া হতে থাকে ‘মাটি ও মানুষে’র মাধ্যমে। বনেদি পরিবারগুলোও এতে উদ্বুদ্ধ হয়। এ অনুষ্ঠান দেখে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যেও কৃষিকাজ কিংবা মৎস্য-হাঁস মুরগি-গবাদিপশুর খামার গড়ে তোলায় আগ্রহ সৃষ্টি হয় বলে লেখা হয়েছে বইটিতে। পরবর্তীকালে বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল, চ্যানেল আইতে ‘হƒদয়ে মাটি ও মানুষ’ নামে কৃষিভিত্তিক অনুষ্ঠান করেন তিনি। অন্যান্য বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতেও কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান দেখা যায়। আর পত্রিকাগুলোতে কৃষিবিষয়ক আলাদা পাতা বের করা হয়। চ্যানেল আই স¤প্রতি ‘কৃষি সংবাদ’ নামে একটি আলাদা বুলেটিন চালু করেছে, যেখানে কৃষি অর্থনীতির নানা বিষয়ে প্রতিবেদন থাকে। কিন্তু এসবই কৃষির মতো বড় একটি খাতের সংবাদ জনতার সামনে নিয়ে আসার জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন শাইখ সিরাজ। ১৬ পৃষ্ঠার একটি পত্রিকায় সপ্তাহে এক দিন কৃষিবিষয়ক পাতা বা টেলিভিশনে সপ্তাহে ৩০ মিনিটের একটি কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচারকে যথেষ্ট বলছেন না তিনি। এর মাধ্যমে কৃষি অর্থনীতির সংবাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে মাত্র, তা আরও ব্যাপক হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মিডিয়াওয়াচকে জানান তিনি। জলবায়ু পরিবর্তনে নানা জটিলতার ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশ। এর প্রভাব বাংলাদেশের কৃষিতে কীভাবে কতটুকু পড়বে, সেই ঝুঁকি মোকাবিলায় কী করা যায়, সেসব বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান করে, চমৎকার সব প্রতিবেদন টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ।
@আনোয়ার সাদী
প্রথম প্রকাশ : মিডিয়াওয়াচ
মিডিয়াওয়াচ
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×