একদা শ্মশান ঘুরে এসেছিলাম। মলিন ঘাস-মাটির খেলা, ক্ষণে ক্ষণে মৃত আত্মার লেবাস ছড়ানো ঘ্রাণ। অনেকগুলো পোড়া কাঠ দেখলাম, মনে হচ্ছিলো যে তেল চিপচিপে করে পোড়ানো হয়েছে সেই কাঠগুলোকে। আগুনের সেই আগুনে ভাবটা তখনো বেশ জ্বলছিলো, মাটি কামড়ে বেঁচে থাকা অনুজীব তখনো বাঁচার পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে। যাক, দেহ পোড়ানো গেলো, অবশেষে, কর্তার ইচ্ছায় তখনো মুখচ্ছবি নিয়ে শ্মশানের সদ্য বর্ধমান অংশটায় সাদা কাপড়ে অপেক্ষায় গুটিকয়েক অপরিচিত মুখ। হয়তো অপেক্ষা করছে, চূড়ান্ত কোনো সংবাদের -- 'মৃত্যু সংবাদ'!
জাগতিক ব্যবচ্ছেদ তখনো ম্রিয়মাণ, আত্মার যদি কোনো আত্মিক খোঁজ পাওয়া যায়, সেই ব্যর্থ হিসেব নাকি দিতে হবে উপরতলার বাসিন্দাকে। আচ্ছা, এই হিসেব-নিকেশ করে কি হবে এবার? পঁচা-গলা একটা দেহের না হয় সৎকার করেই পার পাওয়া গেলো, তবে আত্মার সৎকার করেও কি এবার দেখা লাগবে কি আছে এতো ভেতরে যে ভোজবাজির মতো পাল্টে গেলো সব অংকের হিসেব __ কিছু তো ছিলো বৈকি।
আমরা আবার শ্মশানে ফিরে গিয়েছিলাম। এবার আর উপতলার মালিককে হিসেব দিতে হয়নি শুনেছিলাম। পোড়া কিছু মানব অস্থি আমাদের ততোটা স্বস্তি দেয়নি। আত্মার খোঁজে যে গিয়েছিলাম; দেহে কি আর মন ভরে তবে- আচ্ছা, আত্মার দেখা পেলাম না কেনো?
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:০৬