ব্রয়লার মুরগি নিয়ে কালেরকণ্ঠে একটি সংবাদ ঘুরে ফিরে প্রকাশিত হচ্ছে। কালেরকণ্ঠের নিউজের মান কতটা উন্নত তা পাঠক ভাল করেই জানেন। আর যদি তা লাইভস্টক সেক্টর নিয়ে হয় তবে বলা যায় সত্যতার পরিমাণ নেই বললেই চলে।
[ব্রয়লার মুরগি খেলে কমবে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা, ক্যান্সারও হতে পারে! http://archive.is/6MA1v] লিঙ্কটিতে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন সংবাদটি। সেখানে ৫ টি বিপদের কথা বলা হয়েছে। আসুন সেই বিপদগুলো আসলেই বিপদ নাকি গাঁজাখুরি কথা তার ব্যাখা করি।
১. ব্রয়লারের ওজন বৃদ্ধিকে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও এন্টিবায়োটিকের উপর চাপিয়েছে। যদি এগুলোই মুরগির ওজন বৃদ্ধির কারণ হয় তবে দেশি মুরগিকে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে দেখুক।
আবার বলছে, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ব্রয়লারে এন্টিবায়োটিক প্রদান করা হচ্ছে! আসলে যারা খামার করেনি/খামারের কাছেই যায়নি তারা কিভাবে বুঝবে ব্রয়লারে এন্টিবায়োটিক কেন, কি কারণে, কোন উপায়ে দেয়া হয়? তাছাড়াও কত মাত্রায় ব্যবহার করা ক্ষতিকর? আর খামারে সার্বক্ষণিক ভেটেরিনারিয়ান তথা প্রাণিচিকিৎসক থাকেন। তারা অবশ্যই জেনে-বুঝেই যথাযথ মাত্রায় ওষুধ ব্যবহার করেন।
২. কাঁচা মাংসে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে? ১ নং টপিক্স এ বলল একাধিক এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করে! তাহলে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করার পরও ব্যাকটেরিয়া থাকে কিভাবে? তা আর বলেনি। তাছাড়াও আমরা কিন্তু কাঁচা মাংস খাইনা। বিষয়টি পরের দিকে বলছি।
৩. এখানে বিশেষজ্ঞের বরাদ দিয়ে বলছে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে! আবার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ায়! কিন্তু তারাই বলছে এটার স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পায়নি। তাহলে প্রমাণ পাওয়ার আগেই ছড়ানোর কারণ কি?
বাস্তবতা হচ্ছে-কোলেস্টেরল জমা ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় বলে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন মুরগির মাংস ও মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। [মুরগির মাংসের উপকারিতা নিয়ে আরও জানতে পড়ুন:
http://www.somoyerkonthosor.com/2016/12/17/76735.htm/amp ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো: মুরগির মাংস এবং মাছ খেলে কলোরেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। তবে এই তথ্যের পক্ষে এখনও জোরালো ভিত্তি পাওয়া যায়নি। - বাস্তবতা হচ্ছে কান্সারের ঝুঁকি বাড়ানো কিংবা কমানো দুটোর ক্ষেত্রেই কোনো যুক্তিযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
৪. বলছে ফুড পয়জনিং হবে। কারণ এখানে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া থাকে। সাধারণত ১৬০ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় এই ব্যাকটেরিয়া বাঁচে না। সুতরাং ভালভাবে রান্না করা মাংসে এই ব্যাকটেরিয়া থাকার সম্ভাবণা নেই।
৫. শুধু ব্রয়লার মুরগির জন্য কেন? যেকোনো কিছুই ব্যবহারের পর ব্যবহারকৃত বস্তু উত্তমরূপে ধুয়ে ফেলতে হয়। তাই এটা নিয়ে আর বেশিকিছু বলছি না।
আশা করছি উপরের আলোচনায় কিছুটা হলেও বোঝাতে পেরেছি যে ব্রয়লার মাংস নিয়ে এত ভীতির কোনোই কারণ নেই। সুতরাং নিঃসন্দেহে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ব্রয়লার মুরগির মাংস খেতে পারেন।
কালেরকণ্ঠের ভূয়া তথ্যের লিঙ্ক: http://archive.is/6MA1v
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০৯