somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার হলো শুরু (ভার্সিটি)

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৪:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত দিন প্ল্যান ছিল ভার্সিটির প্রথম দিন মানে ওরিয়েন্টেশন নিয়ে লিখব। শেষে হিসু কাহিনী চলে আসায় আর লিখা হয়নি, দেখা যাক আজ কাহিনী কোন দিক থেকে কোন দিকে যায়। আমার লিখার এটুকু সীমাবদ্ধতা আমি মেনেই নিয়েছি।

ভর্তির যাবতীয় কাজ আগেই শেষ করা ছিল, মোটামুটি থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা হল (এসব নিয়ে অবশ্য অন্য আরেকটা পোষ্ট দিব), সময় হাতে রেখেই সবাই ওরিয়েন্টেশনে উপস্থিত হলাম। প্রথম দিন বলে কথা, এখন থেকেই সিজিপিএ ফোর রাখার ক্ষেত্রে সিরিয়াস থাকতে হবেতো আমাদের, পিছিয়ে পড়া যাবেনা কিছুতেই!!! আবার বেশ মাঞ্জা ও মারলাম আমরা। বলা যায়না প্রথম দিনই যদি কাউকে ভাল লেগে যায়, দেরি করা কি ঠিক হবে, আজকাল সব কিছুতে যা কম্পিটিশন!!!

মাঞ্জা নিয়ে একটা গল্প আছে, সেটা আগে বলে নিই, পরে আবার ভুলে যাব। মাঞ্জা মানে স্টাইল, স্টাইলটাকে আমাদের এক বন্ধু (আমাদের মেসের পাঁচ রকম পাঁচ চীজের একজন, সেসব গল্পও হবে) এত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে তাকে আমরা মাঞ্জা নামেই ডাকতাম, ওই বন্ধুটি টি শার্ট আর গেঞ্জি ধুয়ে বালিশের তলায় ভাঁজ করে রাখতো ভার্সিটি যাওয়ার জন্য।

তো ওরিয়েন্টেশনে সবাই মিনি অডিটরিয়ামে ভদ্র ভাবেই বসে আছি, চার পাশে খালি ছেলে আর ছেলে, ছেলে সমুদ্র। মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল, তবে কি ভার্সিটি সম্পর্কে সারা জীবন ভুলই জেনে আসলাম। একটা জিনিস ভেবে ভাল লাগল, মেয়ে না থাকায় ক্যাডেট জীবন এর মত পূর্ণ মাত্রায় পুংটামি করা যাবে, এই ছি! জাতিয় ন্যাকামি শুনতে হবেনা, প্রেমের মত সস্তা আবেগে জড়াতে হবেনা। আসলে আঙ্গুর ফল টক আর কি।

স্টেজের দিকে একটু নজর দিলাম, দেখি লম্বা মত ফর্সা মত একটা লোক টেবিল চেয়ার পরিস্কার করছে, বাহ বাহ ভার্সিটির পিয়ন কত্ত স্মার্ট আর হ্যান্ডসাম, গর্বে বুক ফুলে উঠলো, কিছুক্ষণ পরে দেখি বেশ সুন্দর একজন মেয়ে অডিতে ডুকলো, তাড়াতাড়ি আমি সরে বসলাম, আমার পাশের সিটটা যেন খালি থাকে, বেচারা মেয়েটার প্রতি আমার একটা দায়িত্ব আছেনা, কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম মেয়েটা স্টেজে চলে যাচ্ছিল। এর মধ্যে স্টেজে দেখি আরও কয়েকজন, ওনারাও দেখি টেবিল চেয়ার মুছে সবাই মিলে বসলেন। এবার একজন মাইকের সামনে দাড়িঁয়ে সবার পরিচয় দিলেন, নিজের ভুল বুঝলাম, ওই সুন্দর মেয়েটা আমাদের ম্যাডাম, বুকটা একটু মোছড় দিয়ে ঊঠলো, এখানেই শেষ নয়, ওই স্মার্ট আর হ্যান্ডসাম লোকটা আর কেউনা, আমাদের MZI (কোন একটা রহস্যময় কারণে স্যারকে আমি শ্যামলা আর বেঁটে বলে ধরে নিয়েছিলাম, আর তাছাড়া এখনকার স্যার এর ছবি পেপারে বা টিভি তে এত কমন ছিলনা). মনে মনে ভাবলাম, ভাব নিছে আর কি আমাদের সামনে, কিন্তু পরের পাঁচটি বছর বুঝেছি আসলে ভুল ভেবেছি, এমনি আমাদের স্যার, কত ছুটির দিনে দেখেছি উনি নিজেই দেয়াল রঙ করছেন, কিংবা নিজেই অন্যদের সাথে নিয়ে ল্যাব বা কোন রূম গুছাচ্ছেন, কেউ যদি একটু অবাক হয়ে কিছু বলতাম উনি পাত্তাই দিতেননা, যেন উনি যা করেন তার মধ্যে কোন বিশেষত্ব নেই, এটাই স্বাভাবিক।

যাই হোক, ওরিয়েন্টেশনের মত ফরমাল আর বক্তব্য নির্ভর পোগ্রামও যে মজার আর আন্তরিক হতে পারে সেটা সেদিন বুঝলাম, স্যার-ম্যাডামরা সবাই বললেন অল্প অল্প করে, আমাদেরকেও বলতে বলা হল, বিভিন্ন গ্রূপ থেকে, যেমন নটরডেম, ঢাকা কলেজ, ক্যাডেট কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, আবার সিলেট, মেয়েদের পক্ষ থেকে। এভাবে যেন মোটামুটি সবার প্রতিনিধিত্ব থাকে। আমাদের দু সেকশনে ভাগ করা হলো, কোন জোড়-বিজোড় বা অন্য কোন টিপিক্যাল ভিত্তিতে নয়। সেটাও করা হলো ওই যে গ্রূপ গুলি থেকে, যেন সবার সাথে সবার মিশার সূযোগ হয়, আসলেই দারুন আইডিয়া, এরকম আরো অভিনব আইডিয়ার প্রমাণ পরের পাঁচ বছর ধরে পেয়েছি।

আমাদের একজনকে লটারী করে প্রাইজ দেয়া হল, সেটাও একটা আভিনব পদ্ধতিতে, জাষ্ট একটা কয়েন এর হেড আর টেল এর মাধ্যমে আমাদের ১২০ জন থেকে ১ জন বেছে নেয়া হয়েছিল, পরে বুঝেছিলাম কম্পিউটার সায়েন্স এরই বেসিক একটা জিনিস আমাদেরকে কত সহজভাবে বুঝানো হয়েছিল।

এখন আর লিখার মত জ্বালানী পাচ্ছিনা, তবে কাহিনী এখানেই শেষ নয়, যেহেতু এটা জীবনের গল্প, এর কোন শেষ নেই, চলতে থাকবে হয়তো এই নামের ২য়, ৩য়... পর্ব হিসেবে বা অন্য কোন নামে। সেই পর্যন্ত আর সব সময়ই ভাল থাকুন সবাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:৩১
১৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা শহর ইতিমধ্যে পচে গেছে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



স্থান: গুলিস্থান, ঢাকা।

ঢাকার মধ্যে গুলিস্থান কোন লেভেলের নোংড়া সেটার বিবরন আপনাদের দেয়া লাগবে না। সেটা আপনারা জানেন। যেখানে সেখানে প্রসাবের গন্ধ। কোথাও কোথাও গু/পায়খানার গন্ধ। ড্রেন থেকে আসছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×