এমন একটা উপভোগ্য ঘটনার পরও ঝুমুর মনটা ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করলো। এই আলো ঝলমলে সকাল। চারিদিকে কর্মময় জীবনের ব্যস্ততা। পথচারীরা হেঁটে যাচ্ছে। স্কুলের বাচ্চারা , সাথে তাদের মায়েরা, হকার ও নানা শ্রেনীর মানুষে রাজপথটা মুখরিত। এমন একটা প্রাণ চন্চল সকালে চারিদিকে কোনো কিছুর অভাব নেই অথচ ঝুমুর জন্য এসব কোনোকিছুরই মূল্য নেই আজ আর।
ওর গোমড়া মুখের দিকে তাকিয়ে ওর দিকে এগিয়ে আসে দীপ্ত। কখন যে সে উঠে গিয়ে সামনের চা ওয়ালা, মুড়িওয়ালা ও পিচ্চিপাচ্চি সব টোকাইদেরকে পর্যবেক্ষণ করে এসেছে সেসব বিন্দুমাত্র খেয়ালও করেনি ঝুমু। ওর মন অন্য কোথাও ডুবে গিয়েছিলো।
-এই যে ম্যাডাম এমন গোমড়া মুখ করে আর লাভ নেই। এসব দেখার জন্য এখন আর কেউ বসে নেই। এখন আপনি সুখ দুঃখ হাসি কান্না সব কিছুর উর্ধে।
এমন পেঁচার মত মুখ করে বসে না থেকে চলেন টিএসসিতে গিয়ে বন্ধুদেরকে দেখে আসি।
দীপ্তের কথা শুনে আরো বেশী মন খারাপ হলো ঝুমুর। দিব্যচোখে দেখতে পেলো ওর ক্লাসরুমটা , ক্লাসের সারি সারি চেয়ার। মনে করতে চেষ্টা করলো এখন ঠিক কোন ক্লাসটা হচ্ছে। ভ্রু কুঁচকে আকাশের দিকে তাকিয়ে , রোদ্দুরের ঝাজ দেখে, সময় আঁচ করার চেষ্টা চালালো। সাড়ে ১১টার মত হবে এখন।চোখের সামনে আবারও ভেসে উঠলো, ক্লাসরুম ,প্রিয় বন্ধুরা সব। পি.কে স্যারের হাত পা নাড়িয়ে লেকচার আর সব সহপাঠীদের গম্ভীর মুখে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকার দৃশ্য।ধীরে ধীরে মুখখানা হয়ে গেলো যেন আষাড়ের মেঘলা আকাশ। দীপ্ত সেমুখ দেখে আবার ফান করতে যাবার আগেই ফ্যাচ ফ্যাচ কান্না শুরু করলো মেয়েটা।এবার ভড়কে গেলো দীপ্ত। হঠাৎ ওর মনটাও খারাপ হতে শুরু করলো। কিছু না বলে ধীরপায়ে হেঁটে এসে ওর পাশে বসে রইলো সে কিছুক্ষণ।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১০ বিকাল ৩:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



