somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুমি আমার প্রথম সকাল ....তুমি আমার সারাবেলা....

১৪ ই জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘুমের মাঝেই বালিশের তলা থেকে ফোনটা টেনে বের করে এক নাগাড়ে বেজে চলা এলার্মটা বন্ধ করলো মৌমিতা। অনেক কষ্টে চোখ মেললো এইবার। ভোর ৬:০৫।আবার ঝুপ করে চোখ বুজে ফেললো সে। পাশ ফিরে হাত বাড়িয়ে খুঁজলো কাউকে। শূন্য বিছানা। এক সেকেন্ডের মধ্যে তন্দ্রা কেটে গেলো ওর। আলস্যি ঝেড়ে উঠে বসলো বিছানার উপর।

লম্বা করিডোর আর লিভিংরুমটা পেরিয়ে দরজা ঠেলে ঢুকলো একটা সাজানো গোছানো অফিস রুমে। রুমি এতটাই কাজে নিমগ্ন ছিলো যে স্বয়ং যমদূত তার পিছে এসে যে দাঁড়িয়েছে খেয়ালই করলো না একেবারে। রুমির এই ভাবে সারারাত জেগে কাজ করাটা একদমই পছন্দ না মৌমিতার। ভীষন রকম বিরক্ত হয় সে এই বেহিসেবী নিয়ম কানুন না মানা অবাধ্য ছেলেটার কান্ড কারখানায়।

রুমি আর মৌমিতা স্বভাবে, আচার আচরণে, পছন্দে অপছন্দে যেন দু মেরুর বাসিন্দা। তবুও তবুও ওর হৃদপিন্ডের ঠিক মধ্যিখানে ছোট একটা কুঠুরীতে শুধুই রুমির বাস। কবে কখন কিভাবে যে এই দুর্বোধ্য অবাধ্য ছেলেটা ওর হৃদপিন্জরে জায়গা করে নিলো সে তা নিজেও জানেনা।এই দুরন্ত অশান্ত ছেলেটা যে এক শিশুর মত পরাজিত ওর আশ্চর্য্যরকম সেই ভালোবাসার কাছে সেটা ভেবেও ঘোর লাগে মৌমিতার।

- সারারাত্রী এক ফোটাও ঘুমাওনি তুমি? পরম বিস্ময় আর বিরক্তি নিয়ে জিগাসা করে মৌমিতা।
-কাজটা শেষ হয়নি তো। তিনদিনের মধ্যে শেষ করতেই হবে আর তাছাড়া ঘুম আসছিলোনা আমার।
-চুপ করো। এখুনি উঠো । উঠো বলছি।
এগিয়ে এসে রুমির শার্টের হাতা ধরে টেনে উঠাতে চেষ্টা করে মৌমিতা।
- আরে আরে কি করিস তুই? সব এলোমেলো হয়ে যাবে তো।
- চুপ। সব নষ্ট হয়ে যাক । তুমি এখুনি উঠবে। এখুনি ঘুমাতে হবে তোমাকে।আর হ্যা তোমাকে না বলেছি আর তুই তুই করবেনা। নো মোর তুই তুই ? মনে থাকে না ....... .... .....রুদ্র মূর্তী ধারণ করে মৌমিতা এই সাত সকালে।
- আচ্ছা আচ্ছা বাবা আর বলবো না, তুই আমার শার্ট তো ছাড়।
- কিসের ছাড় ছাড়?? ফের তুই তুই? রক্তচক্ষু মেলে মৌমিতা।
হো হো করে হাসতে থাকে রুমি। ওর হাসি দেখে আরও গা জ্বলে যায় মৌমিতার। রুমি দুষ্টুমী করে রিভলভিং চেয়ারটা ঘুরিয়ে কোমর জড়িয়ে ধরে ওর।


তড়িঘড়ি ফ্রেশ হয়ে বাটারটোস্ট আর চা দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে রুমির জন্য সিরিয়ালের প্যাক আর মিল্ক ডাইনিং টেবিলের উপর রেডী করে রেখে বেড রুমে আসে মৌমিতা।ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুলে ব্রাশ চালাতে চালাতেই খেয়াল করে গভীর ঘুমে অচেতন রুমিকে। আরও একবার রাগ হয় ওর। রাত জাগা যে শরীরের জন্য কতখানি খারাপ এই ছেলেটা যে কবে বুঝবে?

চুলে ক্লিপ লাগিয়ে, শাড়ীটা ঠিকঠাক করে পিন লাগিয়ে বেডের পাশে এসে দাঁড়ায় মৌমিতা। অকাতরে ঘুমাচ্ছে রুমি। রুমির ঘুমন্ত মুখটা দেখে ভীষণ মায়া হয় ওর। বেডের পাশে মেঝের উপর হাঁটু গেড়ে বসে ও। ঠিক যেন ছোট্ট এক দুরন্ত শিশু । ঘুমিয়ে পড়েছে ক্লান্ত হয়ে। আলতো করে ঠোঁট ছোয়ায় ও রুমির গালে। কপালের উপর দিয়ে এসে পড়া এলোমেলো চুলগুলো সরিয়ে দেয়।
চোখ মেলে তাকায় রুমি। কপালের উপর হাতটা চেপে ধরে ওর। টেনে এনে ঠোঁটে ছোয়ায়।
-বাই রুম্মুসোনা। টেবিলে ব্রেকফাস্ট রেডী করা আছে। ঠিকঠাক খেয়ে নিও ওকে?
-ওকে বেবী। বাই বাই। তাড়াতাড়ি চলে এসো।

মেইন দরজার লক চেপে দিয়ে বেরিয়ে আসে মৌমিতা। গ্যারাজ থেকে গাড়ি বের করে স্টার্ট দেয়।


চলবে.....
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১১ রাত ৯:৫৭
১৩৬টি মন্তব্য ১৩২টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×