somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনাড়িদের জন্য পেন্সিল স্কেচ - ব্যাকরণবিহীন অব্যর্থ শিক্ষণ :) :) :)

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রায়ই কিছু কিছু ছবি দেখে আমি বুঝতেই পারিনা সেটা নাকি হাতে আঁকা! অবিকল যেন সত্যিকারের মানুষ, পশু, পাখি বা প্রকৃতির ছবি! আমি মুগ্ধ হয়ে যাই! অবাক চেয়ে রই! এই মুগ্ধতা বা অবাক হবার ব্যাপারটা আমার আজকের নয়। এই মুগ্ধতার শুরু সেই ছোট্টবেলায়।একদা আমাদের বাড়িতে এলেন এক চাচ্চু।
তিনি আমার টোনাটুনির গল্পের বই থেকে সাধারণ পেন্সিলেই এঁকে ফেল্লেন জলজ্যান্ত দুটি টোনা আর টুনিপাখি। চাচুটা চলে গেলেন দুদিন পরেই কিন্তু আমি সারাদিন চেয়ে রই সেই খাতার পাতার টোনাটুনির ছবিতে। কি আশ্চর্য্য! পেন্সিলেও এঁকে ফেলা যায় এমন সত্যিকারের মতন! আমার ভাবনার সেখানেই শুরু। ভাবনা নিয়েই বসে থাকলাম না আমি। সাথে শুরু হলো অক্লান্ত প্রচেষ্টা। যেখানে সেখানে আঁকাআঁকি। শ্লেটে, মেঝেতে, চকখড়িতে, কাঠ কয়লায়, বই এর পিছের শেষ পাতাটায়, ক্যালেন্ডারের উল্টোপিঠে মানে বাড়ির যত শুন্যস্থান পূর্ন হয়ে উঠতে লাগলো আমার আঁকাআঁকিতে। অবশ্য এ কারনে আমার শূন্য পিঠেও মাঝে মাঝে কিছু দুমদাম পূর্ণতা পড়তো, তাতে কি কিছুই যায় আসে? এত অল্পে দমে যাবো, সে পাত্র আমি নহি।


তবুও মায়ের সহ্য হয় না আমার এই আঁকাআঁকিটাই। আমার নাকি লেখাপড়ার চাইতে তাতেই সময় বেশি নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে পড়ালেখার পাশাপাশি নাচ বা গানের স্কুলে পাঠালেও উনি কখনই আমাকে পাঠাতে রাজী হলেন না ছবি আঁকার স্কুলে। কিন্তু আমার আঁকাআঁকি তাই বলে থামাতে পারলেন না তিনি। আমিও যেখানেই এক টুকরো জায়গা পাই, সেই রাজকুমারী কাঁকনমালা থেকে শুরু করে স্নো-হ্যোয়াইট যা মনে চায় এঁকেই চলি, এঁকেই চলি। এরপর যখন থেকে আমার বাচ্চাদের স্কুলে জয়েন করা, আমাকে আর পায় কে?? এক নিমিষে বোর্ডে হাম্পটি ডাম্পটি বা হিকরী ডিকরী মাউস এঁকে তাক লাগিয়ে দেই আমি বাচ্চাদেরকে। তারা ঠিক আমার ছোটবেলার মতনই অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে আমার এই যাদুকরী হাতের দিকে। :)


এইভাবে অনেকগুলো বছর কাঁটাবার পরেও আমার ঠিক শান্তিু হত না আঁকাআঁকিটা নিয়ে। ভাবতাম কই হলো না তো ঠিক সত্যিকারের মানুষের মত চোখের জ্বলজ্বলে ভাষাটা। নাকটাও তো চেপ্টে লেগেই আছে মুখে। নাক, ঠোঁট বা কানের ওঠা ওঠা ভাবটা, কি করে আসবে এসব ছবিতে? তারপর একদিন ব্রত নিয়ে বসলাম যেমন করেই হোক আঁকতেই হবে আমাকে সত্যিকারের মানুষের মত দেখতে মানুষের মুখ, নাক, চোখ বা ঠোঁট এবং এসবের সমন্বয়ে অবিকল মানুষের মুখ। সারাজীবন আমি একটা জিনিসই শিখেছি সেটা হলো ব্রত। কঠিন ব্রত নিয়ে বসলে হবেনা এমন কোনো কথা নেই। নাই বা হলো পিকাসো বা ভ্যানগগ, নাইবা হলাম কামরুল হাসান বা হাশেম খান আমি তবুও আমিই হবো....



ব্যাস প্রথমেই লাগলাম চোখের পিছে..... আর যেহেতু একটু আধটু আঁকতে জানতাম আগে থেকেই কাজেই খুব কম সময়েই চোখগুলো প্রায় সত্যিকারের চোখ মানে রিয়েলস্টিক ছবির মতনই হয়ে গেলো আর আমি নিজের আঁকা চোখে নিজেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকি আর আমার আঁকা চোখটাও তাকিয়ে থাকে ঠিক আমারই দিকে। আমার আর কোনো কাজে মন বসেনা, সকালে উঠেও খাতা খুলে বসে থাকি, মুগ্ধতা মুগ্ধতা! স্কুলে যেতেও ভালো লাগেনা আমার, ইচ্ছে করে সারাটাদিন নিজের আঁকা চোখে তাকিয়ে থাকি চব্বিশ ঘন্টা। আমাদের স্কুলের আর্ট টিচার আমার অনেক প্রিয় বন্ধু সে বলে আরে চোখের পাঁপড়ি একটু অগোছালো করো, ভ্রুগুলাও তোমার বড্ড সাজানো কিন্তু আমি কানে তুলিনা কারো কথাই। আরে বাবা আমি মানুষটাও তো বড্ড গোছালো, এমন অগোছালো ছবি আঁকতে যাবো কেনো?


একটু এডিটিং আর স্টাইলিং এর পরে.....যখন আমি আরও মুগ্ধ এবং মুগ্ধ!!!!! :) :) :) :)

যাইহোক শুরু হলো আমার নিরলস ব্যাকারণবিহীন রিয়েলস্টিক ছবির অঙ্কন চর্চা। পেন্সিল দিয়ে আমিও শিখে গেলাম আঁকতে, ঠিক ঠিক চোখে লাইট রিফ্লেক্ট করলে যেমনই চকচকে হয় সেই ভাবটাও আনতে।



যাইহোক আমার মত ব্যাকরনবিহীন রিয়েলস্টিক অঙ্কন যারা যারা শিখতে চাও তাদের জন্য আমার টিউটোরিয়াল...... প্রথমেই লাগবে নানা রকম পেন্সিল, HB, 2B,3B,4B,5B,6B,8B,10B,12B এমন সব পেন্সিল পাওয়া যায় প্রায় সব খাতা পেন্সিলের দোকানগুলোতেই। এখন শিখিয়ে দেই.......

হাউ টু ড্র আ রিয়েলিস্টিক আই.........


১) প্রথমেই চোখের আউটলাইনটা খুব হালকা করে এঁকে নিতে হবে। যদিও এই আঁকাটা একেবারেই আনাড়ির জন্য খুব সহজ নহে তবুও চেষ্টায় কি না হয়। একবার না পারিলে দেখো শত বার! :) আর হালকা করে আঁকতে বলেছি এই জন্য যেন দরকার হলেই ইজিলি মুছে ফেলা যায়। আই মিন কারেকশন।:) আঁকতে খুব বেশি কষ্ট হলে আয়নায় গিয়ে নিজের চোখটা দেখে আসতে হবে এতে সত্যিই আঁকাটা সহজ হয়ে যাবে। এটা কিন্তু ফান না মোটেও, সত্যিই জরুরী এবং ড্রইং এ পুরাটা সময় জুড়ে শার্পড পেন্সিল রাখাটাও অতীব জরুরী। এতে কাজটা নিঁখুত হয়।


২)এরপর চোখের মনিটাকে গাঢ় করতে শুরু করতে হবে। খুব জোরে ঘষে ঘষে পেন্সিল ইউজ করার দরকার নেই। হালকা হালকা টানে কালারটাকে গাঢ় করে তুলতে হবে। এরপর চোখের আইরিসে হালকা শেড দিতে হবে। আমি ২বি ইউজ করেছি এখানে। ফার্স্ট লেয়ার শেডিং হলেই পরবর্তী ডার্কার শেডে যেতে হবে। আইরিসের আউটলাইন ডার্কার হবে এবং উপরের হাফ পোর্শন দিকটা আরও বেশি ডার্কার হবে।


৩)আইরিশকে এবার একটু ব্লেন্ড করে দিতে হবে। অনেকভাবেই তা করা যায় তবে আমি কটনবাড বা টিস্যু দিয়েই এটা করে থাকি। ব্লেন্ডিং এর পরে আরও গাঢ় পেনসিল দিয়ে আইরিশটাকে ডার্ক করতে হবে। আমি ৩বি ইউজ করেছি। এইভাবে যতক্ষন পর্যন্ত ঠিক ঠাক সুন্দর আইরিশ না লাগে ততক্ষণ ব্লেন্ডিং এ্যান্ড ডার্কার শেডিং চলতেই থাকবে।


৪) এরপর আইরিশকে আরো আকর্ষনীয় করতে কিছু ঢেউ এর মত হাল্কা আঁকিবুকি টানা যেতে পারে। কিছু ওয়েভস বড়, কিছু ছোট হবে। এইভাবে পুরো আইরিশকে হাল্কা ঢেউ ঢেউ আবার সোজা সোজাও আঁকিবুকি দিয়ে ঢাকতে হবে।


৫) এখন চোখের সাদা অংশে কিছু শেড দিতে হবে। চোখের ঢালটা আনতে কিনারে একটু বেশি গাঢ় শেড আর মাঝে একদম হাল্কা শেড।


৬) এবার টিয়ার ডাক্ট। এখানে গাঢ় ও হালকা শেডে গভীরতা এনে একটা ভেজা ও চকচকে ভাব দিতে হবে।


৭) এখন চোখের বাকী অংশে হালকা শেড দিতে হবে ও ওয়াটারলাইন সাবধানে শেড করতে হবে।চোখের পাতার নীচ অংশে গাঢ় শেড দিতে হয়। এই আউটলাইনগুলোতে একটু ইরেজারের ছোয়া দিয়ে স্কিনের টোনটা ফুটিয়ে তোলা যায়।


৮) এইবার আইল্যাশ বা চোখের পাঁপড়ি। উপরের পাঁপড়িগুলি বড় ও বাঁকানো থাকে। নীচের গুলিও বাঁকানো তবে একটু ছোট। পাঁপড়ি আঁকার সময় একটু এলোমেলো ভাব আনলে বেশি রিয়েলস্টিক হয়।


৯) এখন চোখের মনিটার মাঝে লাইট রিফ্লেকশন আনতে একটা (বা দুটোও) ছোট্ট অংশ খালি রাখা হয়েছিলো। সেই অংশটাতে পেপার হ্যোয়াইট করে দিতে বা চকচকে রিফলেকশন আনতে ইরেজার দিয়ে একটু মুছে দেওয়া যেতে পারে।


১০) লাস্ট পার্ট হলো ফিনিশিং পার্ট। ভালো করে তাকিয়ে দেখতে হবে কোথায় হাইলাইট করতে হবে আর কোথায় ডার্ক করতে হবে । ভালো করে পরখ করে নিজে যতক্ষন স্যাটিসফায়েড না হওয়া যায় শেডিং , ডার্কিং এ্যান্ড হাইলাইটিং করতে হবে। তবে উপরের পদ্ধতিগুলো ব্যাবহার করলে আর বেস্ট এফোর্ট দিলে সফল না হয়ে কোনো উপায়ই নেই! কাজেই লেগে পড়ো আমার মত চক্ষু অংকনে!!!!!!!!!

আমার আঁকা নানা রকম চোখ!!!!!!!!!!!! :)


অবাক চোখ


জিজ্ঞাসু চোখ

বিস্মিত চোখ


জিনিভাইয়ার রাগী চোখ


আহমেদ জি এস ভাইয়ার জন্য আঁকা চোখ


পিকাচুর জন্য অপ্সরা চোখ....


অবাক চোখ ও দুঃখী চোখ


দূর দিগন্তে তাকিয়ে থাকা দুই চোখ


চোখের সাথে প্রজাপতির ঝিলিমিলি...


আমার আঁকা মৌন বিধুর নীল নয়না......

এবার আসি ঠোঁট.....রিয়েলস্টিক ঠোঁট বা ঠোঁটের ফোলা ফোলা ভাবটা আনা কিন্তু খুব সহজ কাজ না যদি তা ঠিক ঠাক আঁকতে না জানা যায়......


এবারে আমি আর কিছুই বললাম না সোজা অডিও ভিজুয়াল ট্রেনিং নেওয়া যেতে পারে।
কেমন করে আঁকবো আমরা রিয়েলস্টিক অধর কিংবা ঠোঁট
আমার ধারণা ঠোঁটই একমাত্র বস্তু যাহা মুখচ্ছবি আঁকতে সবচেয়ে বেশি সময় নেয়। তাই মন দিয়ে আঁকতে হবে, হাতে সময় নিয়ে শিখতে হবে।
ওহ আই অঙ্কন শিখিয়ে দিয়েছি কিন্তু আইব্রোটা বাদ গেছে। সেটা আঁকাটা যদিও খুব কঠিন না তবুও একটু নিজে চোখেই দেখে নিলে ভালো হয় সত্যিকারের শিল্পীরা তা কেমনে আঁকে।
How to draw Realistic eyebrow
এবার আসি নাসিকা বা নাকে। এটা মোটেও সহজ শিক্ষা নহে। এই নাসিকা অঙ্কন আদতে অল এবাউট শেড। আর সাথে একটু মাপ জোকের ব্যাপার।
নাক বা নাসিকা অঙ্কন
এবার পুরো ফেস কেমনে আঁকা যায় তার সহজ বর্ণন
স্কিন বা স্কিন টোন ফুটিয়ে তোলাটা মহা ধৈর্য্যের ব্যাপার। আমাদের শামীম বলে উফ আপনার বিরক্ত লাগে না আপা এই এট্টু এট্টু করে এইসব বানাতে! সে কি আর বুঝবে বিন্দু বিন্দু এই জলকনায় কি মহাসাগর সৃষ্টির আনন্দ পাওয়া যায়! যাইহোক স্কিন টোনটা একেবারেই রিয়েলস্টিক করা যায় যদি কেউ ধৈর্য্য নিয়ে এটা প্রাকটিস করে থাকে....
স্কিন টোনের অবাক যাদু
এবার আসি চুলে। চুলের শেডিংও এক মজার খেলা। নানা রকম শেড আর হাইলাইটে নিয়ে আসা যায় সত্যিকারের মত চুলের চেহারাটাই
চুলের শেডে মজার খেলা


আমার আঁকা চুল


আর আলুথালু বেনী.....


আমার আঁকা ছোট্টবেলা....


অনেক ফল্ট নিয়েও আমার প্রিয় একটা অঙ্কন....





আমার আঁকা প্রিয় একটি ছবির কয়েকটি রূপ। এডিটিং ও ব্লেন্ডিং এর মজার খেলা.......
এডিটিং ও ব্লেন্ডিং এর মজার খেলা


পেন্সিল শেডে আঁকা মুখ তবে এই ছবিটা আঁকতে গিয়েই আমি চুল আঁকবার সময় হাতের টানটা বুঝে গেলাম! আর ঠোঁটটাতেও সফট আর ফোলা ভাবটা আনা জেনে গেলাম।


যদিও পেন্সিল সেডই সর্বশ্রেষ্ট তবে হলুদ রঙ্গে রাঙ্গিয়ে দেবার পরে মনে হচ্ছিলো এই অভিমানিনী মেয়েটা গাইছে, রাঙ্গিয়ে দিয়ে যাও, যাও, যাওগো এবার যাবার আগে।
যাইহোক,
আঁকাআঁকি আর এডিটিং ব্লেন্ডিং এর আরও আরও মজার খেলাটা আমি পরে কখনও শিখিয়ে দেবো। অবশ্য শুধুই আমার আনাড়িভাইয়া আর আপুদের জন্য। :)



এটা আমার মুখচ্ছবি অঙ্কন প্রাকটিসের পরের অধ্যায়। সেসব নিয়েও না হয় টিউটোরিয়াল বানানো যাবে কোনো একদিন....


কালার পেন্সিলে আঁকা ছবি। আরেক এক্সপেরিমেন্ট আরেক অধ্যায়.....

নীচে পেন্সিল স্কেচ বা রিয়েলস্টিক ড্রইং এর কিছু ভিডিও লিঙ্ক দেওয়া হলো....
realistic drawing for beginners-নবীনদের জন্য

Realistic Drawing Tips and Techniques - How To Draw Realistic Portraits

Pencil portrait in about 7 minutes

How to draw a portrait from photo

Portrait-Pro Drawing Course

Pencil portrait - drawing a beauty

আরও কিছু চিত্রাঙ্কন শেখার নিয়ম কানুনের পেইজের লিঙ্ক.... যারা পড়ে পড়ে শিখতে চায় তাদের জন্য....
Free Photorealistic Pencil Drawing Tutorial Step by step advanced graphite drawing techniques

50 Clever Tutorials and Techniques on Traditional Drawing

Portrait Tutorial - How to Draw a Face Step by Step

Pencil Art, Pencil

SHADING TECHNIQUES WITH PENCIL

DRAWING A PENCIL PORTRAIT - LINE, SHAPE AND PROPORTION

এই গেলো নিয়মকানুন শিক্ষা দীক্ষার নানা পেইজ এবং ভিডিও লিঙ্কগুলি। তবে একবার মুস্তাফা মনোয়ারভাইয়া আমাকে বলেছিলেন ছবি আঁকার শুধু একটাই নিয়ম। এই নিয়মটা জানলে পৃথিবীর সব ছবিই আঁকা সম্ভব। সেই নিয়মটা হলো, ছবি আঁকার কোনো নিয়মই নেই। শুধু মন দিয়ে যা আঁকবো তা যেন দেখি, চোখ বুজে ভাবি একটা পাতার ঠিক কেমন চেহারা, কেমন তার ধারগুলো, কেমন তার শিরাগুলো.... আর সেভাবেই সেভাবেই পেন্সিলে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এঁকে ফেলি একটা পাতার ছবি।

আর আমার নিয়ম হলো ছবি আঁকার শুধু দুইটাই শর্ত, অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর মন দিয়ে আঁকাআঁকি......

আর তারপর সৃষ্টির আনন্দ যে কি তা মন দিয়েই ফিল করাটা....আর তাই এই নিজের আনন্দ অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই এই পোস্টের অবতারণা। আমি চাই সবাই আমার মত এঁকে এঁকে মজা পাক.....

এ আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সব খানে, সব মনে......

সবশেষে পাতা পাতা আঁকাআঁকি বলতে বলতে আমার মনে পড়ে গেলো পাতার গান, জলের গান....
পাতার গান, জলের গান


যদি কেউ আঁকতে গিয়ে মনে করে পাতাটা হয়ে গেলো ছাতা কিংবা মাথাটা হয়ে গেলো হাতাই তবুও নো প্রবলেমো!!!!!!!! আনন্দ নিয়ে আঁকতেই থাকো, আঁকতেই থাকো.........ঠিক আমার মতন........:) :) :)


এই লেখা আমি উৎসর্গ করছি মোটা ফ্রেমের চশমাভাইয়াকে। ভাইয়াটা আমাকে এমন একটি টিউটোরিয়াল লিখতে বলেছিলো। ভাইয়ামনি আমার এই লেখাটা তাই তোমার জন্য.....


হাউ টু ড্র আ রিয়েলিস্টিক আই.........


১) প্রথমেই চোখের আউটলাইনটা খুব হালকা করে এঁকে নিতে হবে। যদিও এই আঁকাটা একেবারেই আনাড়ির জন্য খুব সহজ নহে তবুও চেষ্টায় কি না হয়। একবার না পারিলে দেখো শত বার! :) আর হালকা করে আঁকতে বলেছি এই জন্য যেন দরকার হলেই ইজিলি মুছে ফেলা যায়। আই মিন কারেকশন।:) আঁকতে খুব বেশি কষ্ট হলে আয়নায় গিয়ে নিজের চোখটা দেখে আসতে হবে এতে সত্যিই আঁকাটা সহজ হয়ে যাবে। এটা কিন্তু ফান না মোটেও, সত্যিই জরুরী এবং ড্রইং এ পুরাটা সময় জুড়ে শার্পড পেন্সিল রাখাটাও অতীব জরুরী। এতে কাজটা নিঁখুত হয়।


২)এরপর চোখের মনিটাকে গাঢ় করতে শুরু করতে হবে। খুব জোরে ঘষে ঘষে পেন্সিল ইউজ করার দরকার নেই। হালকা হালকা টানে কালারটাকে গাঢ় করে তুলতে হবে। এরপর চোখের আইরিসে হালকা শেড দিতে হবে। আমি ২বি ইউজ করেছি এখানে। ফার্স্ট লেয়ার শেডিং হলেই পরবর্তী ডার্কার শেডে যেতে হবে। আইরিসের আউটলাইন ডার্কার হবে এবং উপরের হাফ পোর্শন দিকটা আরও বেশি ডার্কার হবে।



৩)আইরিশকে এবার একটু ব্লেন্ড করে দিতে হবে। অনেকভাবেই তা করা যায় তবে আমি কটনবাড বা টিস্যু দিয়েই এটা করে থাকি। ব্লেন্ডিং এর পরে আরও গাঢ় পেনসিল দিয়ে আইরিশটাকে ডার্ক করতে হবে। আমি ৩বি ইউজ করেছি। এইভাবে যতক্ষন পর্যন্ত ঠিক ঠাক সুন্দর আইরিশ না লাগে ততক্ষণ ব্লেন্ডিং এ্যান্ড ডার্কার শেডিং চলতেই থাকবে।


৪) এরপর আইরিশকে আরো আকর্ষনীয় করতে কিছু ঢেউ এর মত হাল্কা আঁকিবুকি টানা যেতে পারে। কিছু ওয়েভস বড়, কিছু ছোট হবে। এইভাবে পুরো আইরিশকে হাল্কা ঢেউ ঢেউ আবার সোজা সোজাও আঁকিবুকি দিয়ে ঢাকতে হবে।


৫) এখন চোখের সাদা অংশে কিছু শেড দিতে হবে। চোখের ঢালটা আনতে কিনারে একটু বেশি গাঢ় শেড আর মাঝে একদম হাল্কা শেড।


৬) এবার টিয়ার ডাক্ট। এখানে গাঢ় ও হালকা শেডে গভীরতা এনে একটা ভেজা ও চকচকে ভাব দিতে হবে।


৭) এখন চোখের বাকী অংশে হালকা শেড দিতে হবে ও ওয়াটারলাইন সাবধানে শেড করতে হবে।চোখের পাতার নীচ অংশে গাঢ় শেড দিতে হয়। এই আউটলাইনগুলোতে একটু ইরেজারের ছোয়া দিয়ে স্কিনের টোনটা ফুটিয়ে তোলা যায়।


৮) এইবার আইল্যাশ বা চোখের পাঁপড়ি। উপরের পাঁপড়িগুলি বড় ও বাঁকানো থাকে। নীচের গুলিও বাঁকানো তবে একটু ছোট। পাঁপড়ি আঁকার সময় একটু এলোমেলো ভাব আনলে বেশি রিয়েলস্টিক হয়।


৯) এখন চোখের মনিটার মাঝে লাইট রিফ্লেকশন আনতে একটা (বা দুটোও) ছোট্ট অংশ খালি রাখা হয়েছিলো। সেই অংশটাতে পেপার হ্যোয়াইট করে দিতে বা চকচকে রিফলেকশন আনতে ইরেজার দিয়ে একটু মুছে দেওয়া যেতে পারে।


১০) লাস্ট পার্ট হলো ফিনিশিং পার্ট। ভালো করে তাকিয়ে দেখতে হবে কোথায় হাইলাইট করতে হবে আর কোথায় ডার্ক করতে হবে । ভালো করে পরখ করে নিজে যতক্ষন স্যাটিসফায়েড না হওয়া যায় শেডিং , ডার্কিং এ্যান্ড হাইলাইটিং করতে হবে। তবে উপরের পদ্ধতিগুলো ব্যাবহার করলে আর বেস্ট এফোর্ট দিলে সফল না হয়ে কোনো উপায়ই নেই! কাজেই লেগে পড়ো আমার মত চক্ষু অংকনে!!!!!!!!!

এই পোস্ট গত ৩ রা ফেব্রুয়ারী ২০১৭ এ প্রকাশিত হয়েছিলো এবং আজ ৩ মাস পর হঠাৎ গত কয়েকদিন যাবৎ একজন ব্লগারের আমার মতে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে আমার এই পোস্ট নিয়ে তার চরম আপত্তি এবং ক্রমাগত অভব্য ভাষার ব্যাবহার ( যা পরবর্তীতে মডারেটর এবং কিছু ব্লগারের কারণে পরিমার্জিত) ও আমিসহ নানা ব্লগারের মন্তব্য প্রতি মন্তব্যের আচরণে সন্মান খুন্নিতে এবং ব্লগের পরিবেশ দুষিত হয়ে ওঠায় আমি এই পোস্ট এডিট মানে আগের পোস্টটি অবিকৃত রেখে আমার নিজের হাতে আঁকা ছবিগুলি স্টেপস সংযুক্ত করে আজ ২৬।৫।২০১৭ তে এডিট করলাম।

তার দাবী -

১. আমার চোখের জল আঁকা ছবিটি আমি তার ছবি দেখে এঁকেছি যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং তার কল্পনা প্রসুত এবং যার প্রমান আমার এই পোস্টে দেওয়া আছে

২. আরও এক দাবী আমার একজন নারীর পিঠের ছবিটি আমি নাকি কার্বনে এঁকেছি যা সম্পূর্ণ ভাবে তার মস্তিস্ক ধারনা সেটিরও তার দাবীর ভুলের প্রমান ও ব্যাখ্যা এখানে দেওয়া হয়েছে।

আর বাকী ৩ নং যে দাবীটি ছিলো আমার নেট থেকে পাওয়া পেইজ থেকে শেখা টিউটোরিয়ালের লেখনীতে আমার স্বহস্তে আঁকা ছবি না দিয়ে আমি কেনো সেই পেইজের ছবি দিলাম এবং আমার টিউটোরিয়াল বললাম এই দাবীটি কিছুটা পরিনত হওয়ায় আমি নীচে সেই পেইজের লিংকটি যুক্ত করে দিলাম।


৩রা ফেব্রুয়ারী ২০১৭ এ এই পোস্টে প্রকাশিত আমার বাংলায় লেখা টিউটোরিয়ালে আমার মত করে বুঝে নিয়ে আমি যে লেখাটি লিখেছিলাম ও তার সাথে আামার শেখা যে পেইজটি থেকে কিছু স্টেপসের ছবি দিয়েছিলাম সেই পেইজটির লিঙ্ক


যারা এ অস্থিরতায় এ কলুষতায় সকল প্রকার সহযোগীতা দিয়ে মানষিক দৃঢ়তা দিয়ে আমার পাশে ছিলেন, তাদের সকলের প্রতি রইলো কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৭ দুপুর ২:২৭
১৯৭টি মন্তব্য ২০৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×