somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পপসিকল স্টিকসে আমার পুতুলের ঘর বাড়ি টেবিল চেয়ার টিভি

২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছোট্টবেলায় পুতুল খেলা খেলেনি এমন মেয়ে মনে হয় বাংলাদেশে তথা সারা বিশ্বেই খুঁজে পাওয়া যাবে না। দেশ বর্ণ জাতি ভেদেও সব মেয়েই ছোট্টবেলায় পুতুল খেলে। আবার কেউ কেউ বড় বেলাতেও খেলে, যেমন আমি। ছোট্টবেলাতে পুতুল খেললে কেউ কিছু বলে না কিন্তু বড় বেলাতে পুতুল খেললেই যত সমস্যা। মানুষ হাসবে, বলবে বুড়ি ধাড়ির ঢং দেখো। :( তাতে অবশ্য আমার কিছুই যায় আসেনা। তাই আমি মনের আনন্দে পুতুল খেলি মানে ইচ্ছে হলেই পুতুল কিনি, সাজাই, এমনকি বানাইও, তাদের জন্য ঘরবাড়িও বানিয়ে দেই। এ আমার আজকের শখ না। অনেক আগে থেকেই এমনটাই চলে আসছে। পুতুল বানাতে মাটি, কাপড় কাগজ চামচ হাড়ি কুড়ি কিছুই বাদ রাখিনি। আসলে যা ইচ্ছে তা দিয়েই যা ইচ্ছে তাই করা যায়, তাই করতে হয়। তাতে মাঝে মাঝে ফেইল করতে পারি বাট ডোন্ট মাইন্ড। একবার না পারিলে দেখো শত বার........ :)



আচ্ছা পুতুল আর আমার ছোট্টবেলার বৌ পুতুলের লাল টুকটুক শাড়ি নিয়ে একটা ঘটনা শেয়ার করি। তখন আমি ৩ কি ৪। ছোট থেকেই দারুন এডভেঞ্চারপ্রিয় ক্রিয়েটিভ বেবি ছিলাম কিনা তাই সব কিছুতে কৌতুহলও ছিলো তেমনই দারুন। তো একদিন মনে হলো বাহ আমেনা কি সুন্দর বটি দিয়ে কচ কচ করে কাঁটে শাক সব্জি মাছ মাংস! আর আমার এলুমিনিয়ামের হাড়ি পাতিলের বটিটা দিয়ে মাছ মাংস তো দূরের কথা একটা কাগজও কাটা যায় না। ধ্যাৎ। তো আমাকে নিজেকেই পরখ করে দেখতে হবে বটি দিয়ে মজাদার কাটাকাটি কচাকচ! কিন্তু মা কি আর দেবে? জীবনেও না। সব কিছুতেই তার বাড়াবাড়ি এটা করবি না সেটা ধরবি না। তো নো প্রবলেমো। মা থাকেন ডালে ডালে আমি পাতায় পাতায়.... আমার মাথায় যত বুদ্ধি আছে কি তার মাথায়!

ভেবেই তক্কে তক্কে থাকলাম রোজ দুপুরে যখন ঘুমায় মা। সেদিন দুপুরে যেই না মা দুপুরবেলা খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়েছেন। সাথে আমেনা বুয়া এবং বাড়ির সকলেই। ঠিক দুক্কুর বেলা আমার মাথার ভূতে মারে ঠেলা। আমি চুপি চুপি কিচেনে গিয়ে সেল্ফের তলা থেকে টেনে বের করলাম আমার পরম আরাধ্য চকচকে ধারালো বটিখানি। তারপর কাঁচা আম নিয়ে সেই বটিতে কচাকচ কাটার ওভার কনফিডেন্সের আশা নিয়ে ধারালো বটিটাতে বসিয়ে দিলাম কাঁচা ম্যাংগো। আর ওমনি ঘ্যাচাং! বটিও তার ওভার কনফিডেন্ট ধারালো দাঁত বসিয়ে দিলো আমার হাতেই। প্রথমে ঘটনার আকস্মিকতায় ব্যাথা ট্যাথা বুঝিনি। রক্ত টপটপ করে মাটিতে পড়তেই বুঝে গেলাম। ওরে বাবারে মারে এটা কি হলো রে!!! কিন্তু নিজের মুখ তো নিজেই চেপে রাখতে হবে। কাজেই মুখে স্পিকটি নট করে তাড়াতাড়ি কিচেনের পাশের স্টোর রুমে ধমাধম চালান করে দিলাম আমগুলো। আর বটিটাকে সেল্ফের নীচে ছুড়ে দিয়ে ভাবতে লাগলাম। তাড়াতাড়ি হাত ব্যান্ডেজ করতে হবে। কোথায় পাবো এখন গজ ব্যান্ডেজ তুলো!


সাথে সাথে মাথায় এলো বৌ পুতুলের লাল টুকটুকে সাধের শাড়িটা! আহা এর আগে এই শাড়ি মায়ের ফেলে দেওয়া শাড়ির টুকরো পাড়ে বানানো শাড়িটা কত বন্ধুরা চেয়েছে, ধরে দেখেছে আহা উহু প্রশংসা করেছে অথচ ওদেরকে ধরতেও দেইনি। আজ বিপদের দিনে তার সৌন্দর্য্য ভুলে এক টানে খুলে নিয়ে কাটা আঙ্গুল বাঁধার চেষ্টা করতে লাগলাম। তারপর কোনো মতে জড়িয়ে ঘড়িয়ে নিয়েই মায়ের পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম। ঘুমের ফাঁকে হঠাৎ মায়ের চোখ পড়লো কাঁচুমাচু চোখে এই বিশ্ব শয়তান মেয়ে এমন করে দাঁড়িয়ে আছে কেনো! নিশ্চয় কোনো অঘটন! লাফ দিয়ে উঠে বললেন, কি হয়েছে রে! আমার তো স্পিকটি নট।

মা আঙ্গুলে তাকিয়ে টপাটপ রক্ত ঝরা দেখে ইয়া আল্লাহুমা সাল্লেওয়ালা করে এক বিষম চিৎকার দিয়ে অজস্র বাক্যবাণে শাপশাপান্তে তাড়াতাড়ি হাত টাত ধুঁয়ে টুয়ে স্যাভলন ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দুনিয়ার লোকজনকে ডেকে ডেকে তার গুণধর কন্যার এডভেঞ্চারের করুন কাহিনী শোনাতে লাগলেন। আর আমি আমার বৌ পুতুলের পরম প্রিয় রক্তের ছোঁপ লাগা শাড়িটার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে উঠাতে গিয়েই ধমক খেলাম। খবরদার!!
এই নোংরা কাপড়ে হাত লাগাবি না! :( আহারে আমার বৌ পুতুলের লাল শাড়িটা! আজও মনে পড়ে তাহার দুস্ক! :(

:P
যাইহোক এর আগেও অপ্সরা আইডিতে আমার মাথায়চাপা পুতুল ভূতেদের অনেক গল্প আছে। ভূতগুলো তো কখনই মাথা থেকে নামেইনি আসলে কিন্তু আমি অনেকদিন তাদের নিয়ে কিছু আর লিখিনি এই আর কি। তো আজ মনে হলো তাদের জন্য আমার লেখা উচিৎ আর শুধু তাই না আমাকে দেখে যদি সুরভীভাবী বা নিদের পক্ষে রাজীবভাইয়া তার পরীদের জন্য পুতুল বা পুতুলের বাড়িঘর বাদ্যযন্ত্র বানিয়ে খুশি করে দিতে পারে এই করোনার কালে কিংবা ঢুকিচেপা আপু কিপপুসটামী ছেড়ে তার অনাগত নাতি নাতনীদের জন্য বলতে গেলে নিখরচায় উপহার বানাতে পারে বা মা হাসান ভাইয়া খাটা মিঠা বানানোর পাশাপাশি একটু কার্পেনটারগিরি শিখে নিতে পারে তো ভালোই হয়। সাথে কামরুজ্জামান ভাইয়া ওমেরা আপু পাগলা আপু, তারাও দেখে নিতে পারে কেমনে কেমনে নাই কাজ খই ভাজেদের মত মজাদার কান্ড কারখানা নিয়েও জীবন কাটিয়ে দেওয়া যায়। আর যদি আয়না পুতুল আপু আয়না দিয়েও নিজেকে বানানোর ট্রাই করে........ আর খলিলভাইয়া তো কদিন পরে শ্বশুর হবে। কাজেই আগে থেকেই নাতিপুতিদেরকে খুশি করার জন্য পুতুলের বাড়ি ঘর, টিভি গাড়ি সব বানানো শিখতে পারে যদি। যাই হোক বক বক ছেড়ে দেখাই আমার পুতুলদের পৃথিবীতে পুতুলদের জীবন।


করোনায় অনলাইন ক্লাসের নিত্য নতুন বাহানায় আমি এখনও করোনাক্রান্ত না হলেও মরোনাক্রান্ত হবার পথে ।তারই মাঝে চোখে পড়লো এক মজাদার পিয়ানো। পুতুলের বাড়ির জন্য বানানো পিয়ানো। তাও আবার আইসক্রিম খেয়ে যে ফেলে দেয় স্টিক তাই দিয়ে। এ তো সে ছোট্ট বেলা থেকেই ফেলে দিয়ে আসছি আর এই নিয়ে কিনা পিয়ানো!!! ও মাই গড! আমার চক্ষু চড়ক গাছ, তাল গাছ বা নারকেল খেঁজুর গাছ সব গাছেই উঠে গেলো। আবার দেখলাম আইসক্রিম স্টিকসকে আজকাল নাকি মানুষ পপসিকল স্টিকস বলে। আরে এটাও তো জানতাম না।

দেখামাত্রই হাক ছাড়লাম - শামীমমমমমমমমমমমমমুলললল যা নিয়ে আয় আমার পপসিকল যেখান থেকে পারিস সেখান থেকেই । সে বলে হায়হায় এই সব কই পামু? আমি বললাম জানিনা!!!!!!!!!!!!!! না পাওয়া পর্যন্ত বাসায় ফেরা নাই। এমনিতে আইস্করিম স্টিকস লাল নিল হলুদ সবুজ নিউমার্কেটে পাওয়া যায় ভুরি ভুরি কিন্তু গুলশানে কই পাই! শেষে নাকি সে সাইকেল নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে গিয়ে পেলো গুলশান দুই নাম্বার কাঁচাবাজারে। যাক তাই নিয়ে ৫ প্যাকেট বসে গেলাম আমার সাধের পুতুলদের জন্য সাধের পিয়ানো বানাতে। ওহ পপসিকল স্টিকস পিয়ানো বলতে হয়।


বানাতে গিয়ে তখন রাত ২ টা। আসমা সুফিয়া সব ঘুম। কে আমার পপসিকল শক্ত শয়তানের লাঠিগুলি কেটে দেবে? তাদেরকে কি ঘুম থেকে জাগানো ঠিক হবে? না না ওয়েট করি সকাল পর্যন্ত। নাহ সেটাও পারছিনা। তাই নিজেই কটাং কটাং করে কাটা শুরু করলাম স্টিকসগুলো। তারপর সারারাত্রী জাগরণ শেষে ঠিক ঠিক হয়ে গেলো আমার পুতুলের পিয়ানো। বাহ।বসিয়ে দিলাম আমার বারবি ডলমনিকে তার সামনে পিয়ানো বাজাতে। এর পর টেবিল চেয়ার বাড়ি ঘর এমনকি ছবি আঁকার ইজেল সব হলো। ওমা একি ! এরপর আবার দেখি সত্যিকারের টেলিভিশনও বানিয়ে ফেলা যায় পপসিকল দিয়ে। ব্যাস বানানো হলো আমার সত্যিকারের টেলিভিশন। স্যুইচ দিতেই টিভি চলে। ওয়াও ওয়াও। আমার পুতুলের বাচ্চারা মহা খুশি।


ক্লাসে বিকালে মানুষের বাচ্চাদেরকেও দেখালাম সেই টি টা টেলিভিশন!!! তারাও খুশি!!! এইভাবে খুশিতে খুশিতে কেটে গেলো বেশ কয়েকদিন। এখনও সেই খুশি নিয়েই আছি। আর সবাই যেন আমার মত পুতুলের বাড়ি গাড়ি টিভি পিয়ানো সব নিজের হাতে বানিয়ে আনন্দে থাকতে পারে আর আনন্দে রাখতে পারে বাড়ির বাচ্চাদেরকেও তাই আমার এই পোস্টের আয়োজন।

দেখো দেখো আমার পুতুল সোনামনিদের বাড়ি গাড়ি টিভি চেয়ার টেবিল মফি মাগ খানা পিনা সব সব সব .......


পুতুলসোনামনিদের ঘর বাড়ি টিভি গাড়ি - ভিডিও...... :)


এই যে আমার পুতুলসোনারা.......



সবাইকে আমার পুতুলসোনাদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা। সবাই ভালো থাকো আর আনন্দে থাকো করোনাকে জয় করে... :)

যারা যারা বানাতে চাও তাদের জন্য ইউটিউব লিঙ্ক -
পিয়ানোয় সারাটি দুপুর, কচি কচি দুটি হাত তুলবে যে সূর]

লোকে বলে বলে রে ঘর বাড়ি বালা না আমার

Lets watch Movieeeee


শুভ ঢাকা ভাইয়া, সাড়ে চুয়াত্তর ভাইয়ুমনি, করুণাধারা আপুনি, রামিসা রেজা আপুনি, আনমোনা আপুনি, খায়রুল আহসানভাইয়ামনি, আহমেদ জী এস ভাইয়া সবাই নিশ্চয় তাদের বাসার বাবুদেরকে এই পোস্টটা দেখাবেই দেখাবে প্লিজ.......প্লিজ...... প্লিজ......
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১
৫০টি মন্তব্য ৫৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×