আবার আরবি কদম থেকে আসা বাংলা কদম অর্থ পদপে (জোর কদম চলরে চল; কেউ যান ঝটকে কেউ যান কদমে কেউ যান দুলকি চালে; কেতকী কদম যুথিকা কাসুমে বর্ষায় গাঁথ মালিকা - কাজী নজরুল ইসলাম; হিটলারের গ্যাস-চেম্বার তারই এক কদম পরে - সৈয়দ মুজতবা আলী); পা (হে প্রভু! তুমি শুধু একটি কদম ওঠাবার মত আলো ফেলো - শব্নম্, সৈয়দ মুজতবা আলী); ছুটন্ত ঘোড়ার ভঙ্গি বিশেষ।
সংস্কৃত কদম্ব শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে ‘যা বর্ষাকাল ঘোষণা করে’। কদং মানে বর্ষাকাল। আর ‘ অম্ব’ মানে শব্দ করা = ঘোষণা করা।
কদম্ব বলতে কদম ফুল বা গাছ বোঝায়। কদম্ব গাছ নানা ধরনের হয়। এদের মধ্যে কেলিকদম্ব, গিরিকদম্ব ধারাকদম্ব, ধূলিকদম্ব, নীপকদম্ব, ভূকদম্ব, মহাকদম্ব, রাজকদম্বের নাম অভিধানে পাওয়া যায়।
বাংলা ভাষায় একটি জনপ্রিয় গানের কলি হচ্ছে ‘প্রাণসখী রে, ঐ শোন কদম্বতলায় বাঁশী বাজায় কে?’ বাংলা ভাষায় রসকদম্ব নামে আরেকটি শব্দ আছে যাতে রসও নেই কদম্বও নেই। এটা এক প্রকার মিঠাই। গোলাকৃতি প্যাড়ার উপর সাগু দানা বসানো থাকে বলে এটা দেখতে লাগে কদম্বের মতো।
কদম্ব শব্দের আরেকটি অর্থ হচ্ছে ‘যা বিরহীকে দুঃখিত করে’। (স্মৃতি তার কদম্ব ছায়ায়, যমুনার নীল জলে বৃথা মাথা কোটে - বিষ্ণু দে; সেই কদম্বের মূল, যমুনার তীর, সেই যে শিখীর নৃত্য, এখনো হরিছে চিত্ত, ফেলিছে বিরহছায়া শ্রাবণতিমির; কেশর-কীর্ণ কদম্ববনে, মর্মর মুখরিল মৃদু পবনে, বর্ষণ হর্ষভরা ধরণীর, বিরহ বিশগ্ঙ্কিত করুণ কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর; তখন কেবল ভরিছে গগন নূতন মেঘে, কদম্ব-কোরক দুলিছে বাদল বাতাস লেগে - সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত; যাইতে যমুনাজলে, সে কালা কদম্ব তলে, আঁখি ঠেরে আমায় বলে মালা দে রাই আমার গলে - বাংলা গান)।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৩৮