মোবাইল সেটের অ্যাড দেখলাম পেপারে। ৭৫% বিশেষ ছাড়। তার মানে ১০০০০ টাকার মোবাইল ২৫০০ টাকায় মাত্র। বিশাল দুই লাফ দিয়ে পৌছে গেলাম দোকানে। দোকানদার ছেলেটাকে ২৫০০ টাকা দিয়ে দিলাম। ছেলেটা হাসি মুখে বললো –“স্যার ভ্যাট দিতে হবে যে”
-কোথায় পত্রিকায়তো এমন কিছু লেখা নাই।
-লেখা আছে স্যার। বিজ্ঞাপনের বাম দিকের এককোনায় দেখেন লেখা আছে “ভ্যাট প্রযোজ্য”। বেশী আলো ছাড়া দেখতে পারবেননা। এই ফ্লাড লাইট টা ধরতো স্যার এর প...েপারে।“
ফ্লাড লাইট ধরা হলো। দেখলাম লেখা আছে “ভ্যাট প্রযোজ্য”। ৮০০ টাকা ভ্যাট দিয়ে দিলাম। ছেলেটা তবু সেটটা হাতে দিলোনা।
-স্যার এবার আসল কথা বলি। আসলে আমাদের অফারটা ছিলো সীমিত সংখ্যক সেটের জন্য। ছাড়ের সেট সব শেষ হয়ে গেছে। এখন সেট নিতে হলে সম্পুর্ন মুল্য দিয়েই নিতে হবে।
-কিন্তু পেপারে তো সেই সব কিছু দেখলামনা।
-দেখবেন স্যার। একটু ছোট করে লেখাতো তাই চোখে পরেনি। ডান দিকের কোনায় দেখেন। এমনি দেখতে পারবেননা। এই কেউ অনুবীক্ষন যন্ত্রটা স্যার এর সামনে এনে দে।“
অনুবীক্ষন যন্ত্রটা পেপারে ধরলাম। চার পাচ টা ব্যাকটেরিয়া চোখে পরলো। দৌড়াদৌড়ি করছে। এক জায়গায় দেখলাম এক ব্যাকটেরিয়ার উপরে আরেক ব্যাকটেরিয়া উপুর হয়ে শুয়ে আছে।
-নাউজুবিল্লাহ স্যার। ঐ দিকে চোখ দিবেননা। ওরা বংশ বিস্তারে ব্যাস্ত।“
আমি চোখ ছড়িয়ে নিলাম। চোখে পরলো পেপারের একজায়গায় লেখা “ সীমিত সংখ্যক সেটের জন্য। আগে গেলে আগে পাবেন”। মেজাজ খারাপ হয়েছিলো। জিদ ধরে গেলো। পুরো টাকাই দিলাম। এবার ছেলেটা আবার বললো-
-স্যার আরেকটা ব্যাপার আছে,। সেটের সাথে একটা এক্সট্রা ব্যাটারী, একটা হেডফোন কিনতেই হবে।
-কোথায় লেখা এইসব?
-দেখেন “ভ্যাট প্রযোজ্যের নীচে ছোট করে লেখা শর্ত ও প্রযোজ্য। এই কেউ অনুবীক্ষন যন্ত্রটার পাওয়ার বাড়িয়ে দে।
আমি বললাম –“লাগবেনা। আমি সবই নিলাম”
সেট কিনে বাড়ী গেলাম আর সন্ধ্যায় কিছু ছেলে পেলে নিয়ে এসে মোবাইলের দোকানটা ভাঙ্গা শুরু করলাম। দোকানদার ছেলেটা ছুটে আসলো ।“স্যার সেট তো নিয়ে গেলেন ...এইসব কি?”
-এই সব হলো ভ্যাট, শর্ত।
-কই এই সব তো আগে বলেননি।
-আরে জনগন কখনো বলে কয়ে ভ্যাট শর্ত প্রযোজ্য করেনা । দরকার হলেই বাস্তবায়ন করে। এই কে আসিছ এই বেটার গালে আরো দুইটা রাম থাপ্পড় লাগা.।.।।