পুলিশি ইতিহাস বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অনেক পুরানো।বংলাদেশের পুলিশের ইতিহাসকে আমরা দুই ভাবে ভাবতে পারি।
১।প্রাক মুক্তিযুদ্ধঃ রোমের পুলিশ থেকে শুরু করে ব্রিটিশ পুলিশ, পাকিস্তাল পুলিশ আলোচনা করলে দেখা যায়, সেসময় পুলিশের সবচেয়ে বড় ব্যবহার ছিল শাসকের হাতিয়ার।জোর করে খাজনা আদায়, নীল চাষে বাধ্য করা, রাজার আদেশ মান্য করা, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে হামলা করা ইত্যাদি তাদের কাজ ছিল। আর তাদের বিরুদ্ধে বলার কেউ ছিল না, প্রতিবাদের কেউ ছিল না, ছিল না কোন মিডিয়া। তাই এটা সত্য ছিল যে," মাছের রাজা ইলিশ আর দেশের রাজা পুলিশ"।
২।মুক্তিযুদ্ধোত্তরঃপাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা। এই সশস্ত্র প্রতিরোধটিই বাঙ্গালীদের কাছে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরুর বার্তা পৌছে দেয়। পরবর্তীতে পুলিশের এই সদস্যরা ৯ মাস জুড়ে দেশব্যাপী গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন এবং পাকিস্থানী সেনাদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১২৬২ জন শহীদ পুলিশ সদস্যের তালিকা স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিল পত্রে উল্লেখ পাওয়া যায়।
তাই আধুনিক বাংলাদেশে তাদের আচরণ ব্রিটিশ বা পাকিস্তানি পুলিশ এর মত না। এটা শুরু থেকেই (১৯৭১) প্রমাণিত। সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও দমন, মাদক নিয়ন্ত্রন,জংগীবাদ দমন, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ইত্যাদি কাজে তারা তাদের কল্যানমুখী ও বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।কমিউনিটি পুলিশিং বর্তমানে ব্যাপকভাবে কার্যকরী হচ্ছে যার মূল মন্ত্র হলো- পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ। বলা হচ্ছে, পুলিশ জনতার বন্ধু।
তাহলে পুলিশ এত বির্তকিত কেন?????
(এ রকম ঘটনা আরো ঘটেছে বা ঘটছে।এদের মধ্যে খুব সাম্প্রতিক মিডিয়ায় আসা দুটি ঘটনা)
বিকাশচন্দ্র দাসকে শুক্রবার ভোরে ঢাকার কয়েকজন পুলিশকর্মী অকারণে বেধড়ক মারধর করেন। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েও বিকাশবাবু রেহাই পাননি। কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের পদস্থ কর্মকর্তা গোলাম রাব্বিও মাঝরাতে পুলিশি হেনস্থার শিকার হন। সারা রাত নির্যাতনের পর তাঁকে ছাড়া হয়। এখন পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি আছেন।
হুম।এটা সত্য যে, ১৫৫৮০৯ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে কিছু সংখ্যক খারাপ, মাস্তান,সন্ত্রাসী, চাদাবাজ, ধান্দাবাজ থাকা খুবই স্বাভাবিক।!!!!!!!! তাহলে অস্বাভাবিক কি????
সেটা হলো এসব কর্মকান্ডে জড়িতদের বিচার না হওয়া। শাস্তি না দেওয়া।এটাই পুলিশের বড় অপরাধ। এটাই তাদের ব্যর্থতা।এটাই দেশের কথিত রাজত্ব না ছাড়ার মনোভাব।এটাই জনগণের সাথে শত্রুতা, বন্ধুত্ব নয়।
তাই বাংলাদেশ পুলিশকে এইসব অপরাধী সদস্যদের শাস্তি দিয়ে, বিচার করে পুলিশকে কলংক মুক্ত করতে হবে। প্রমাণ করতে হবে যে, পুলিশ দেশের রাজা নয়, তারা জনতার বন্ধু।।