somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়ঃ মানবতার মৃত্যু বনাম রাষ্ট্র স্বার্থ

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিয়ানমার বাংলাদেশের পাশ্ববর্তী দেশ। অতীতের বেশ কয়েকবারের মত এবারও শুরু হয়েছে তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা।নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গারা। এদের সমস্যার কারণ আমাদের সবার জানা।এটা তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। আমাদের নাক না গলানোই ভালো। আমরা শুধু পারি, তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাতে, তাদের অধিকার আদায় বা নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন কে সমর্থন করতে। এটা আমাদের পররাষ্ট্র বিষয়ক একটি নীতিও বটে।

কিন্তু প্রধান সমস্যা হল - রোহিঙ্গা শরর্ণাথী।

১৯৫১ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক শরণার্থীদের মর্যাদা বিষয়ক সম্মেলনে অনুচ্ছেদ ১এ-তে শরণার্থীর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে: একজন ব্যক্তি যদি গভীরভাবে উপলদ্ধি করেন ও দেখতে পান যে, তিনি জাতিগত সহিংসতা, ধর্মীয় উন্মাদনা, জাতীয়তাবোধ, রাজনৈতিক আদর্শ, সমাজবদ্ধ জনগোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় ঐ দেশের নাগরিকের অধিকার থেকে দূরে সরানো হচ্ছে, ব্যাপক ভয়-ভীতিকর পরিবেশ বিদ্যমান, রাষ্ট্র কর্তৃক পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে; তখনই তিনি শরণার্থী হিসেবে বিবেচিত হন।

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের সীমান্ত দেশ হওয়ায় তারা জীবন বাচাতে ছুটে আসে এই দেশে। আশ্রয় খুজে, মাথা গুজে ঠাই নেওয়ার চেষ্টা করে।

কিন্তু এই ১৬ কোটি মানুষের দেশে আমরাই নানা সমস্যায় জর্জতিত।রাষ্ট্রের স্বার্থ চিন্তা করলে নিম্নোক্ত বিবেচনায় রোহিঙ্গা শরর্ণাথীদের আশ্রয় দেওয়া আমাদের বোঝা স্বরুপ।

১। ইতোমধ্যে বিভিন্ন হিসেবে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।
২। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকার ও UNHCR এর পক্ষ থেকে কোন কার্যকরী সিধান্ত নেওয়া হয়নি। তারা বাংলাদেশেই থেকে গেছে।
৩।তাদের শতকরা ৮০% অশিক্ষিত।অশিক্ষিত লোক যেকোন দেশের বোঝা।
৪।তারা নানাভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত। যেমন ইয়াবা চালান, মাদক পাচার, বেশ্যাবৃতি।
৫। তারা বাংলাদেশের পরিচয় নিয়ে বিভিন্ন দেশে কাজের সুযোগে নানা অপরাধ করে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে।
৬। অশিক্ষিত ও নির্যাতিত মুসলিম হওয়ায় জংগী সংগঠনে যুক্ত হওয়ার জন্য প্ররোচিত হতে পারে।
৭। ইতোমধ্যে পাসপোর্ট জালিয়াতির সাথে তাদের সম্পর্ক প্রমাণিত হয়েছে।
ইত্যাদি।

কিন্তু বিষয়টি যদি মানবিক ভাবে চিন্তা করা যায়। তখন আমরা তাদের ফিরিয়ে দিতে পারিনা।

আমরাও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রায় ১০০ লাখ মানুষ আমাদের সীমান্ত দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। ভারত সরকার অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমাদের আশ্রয় দিয়েছিল। আমরা এজন্য তাদের কাছে ঋণী।

একজন মানুষ যাকে তার বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, যে আশ্রয়ের জন্য আমার দরজায় কড়া নাড়ছে, তাকে ফিরিয়ে দেই কিভাবে?

তাছাড়া বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ। রোহিঙ্গারাও মুসলিম। সেদিক থেকেও তারা আশ্রয় লাভের আশা করতে পারে।

আর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম মানব ধর্ম। সেই মানবিকতার তো মৃত্যু হতে পারে না।

প্রথমদিকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দেওয়ার জন্য যে যুক্তিগুলো বলেছি, সেগুলোর জন্য শুধু রোহিঙ্গারা যে শুধু দায়ী, তা নয়।
এজন্য স্থানীয় দেশীয় চক্র ও জড়িত। হয়ত আমাদের প্রশ্রয় না পেলে তারা এত অপরাধের সাথে যুক্ত হতে পারত না। তাদের দালালী তো স্থানীয়রাই করছে।

কোন দেশই শরর্ণাথী আশা করে না। একটা পরিস্থিতিতে আশ্রয় দিতে হয়। মনে হয়,বাংলাদেশ ঐ রকম একটা পরিস্থিতিতে পড়েছে। আগুনে পুড়ে মরা থেকে বাচার কন্য নারী, শিশু সহ তারা পালিয়ে আশ্রয় লাভের জন্য দেশ ছেড়েছে। বাংলাদেশ আশ্রয় দিচ্ছে না। মাঝখানে!!! নাফ নদী!!! নৌকা!! !নাফ নদীতে ভাসছে মানবতা।

আমরা তাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য নই। কিন্তু মানবতা কোথায় যাবে?? নারী, শিশু সহ হাজার হাজার মানুষের বাচার আর্তনাদ!! !

তাই একদিকে যেমন রোহিঙ্গা সমস্যার আন্তর্জাতিক সমাধান দরকার, ঠিক ততদিন পর্যন্ত যারা আশ্রয় লাভের আশায় নদীতে ভাসছে তাদের UNHCR এর সহযোগিতায় বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া দরকার। তবে অবশ্যই সুষ্ঠু উপায়ে। শৃঙ্খল উপায়ে।

মানবতার জয় হোক।।।।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৩২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×