somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিবির নির্মূল ও গণগ্রেফতার : কবে শেষ হবে?

১৫ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেনের হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সারা দেশে শিবির নির্মূলের ঘোষণা দিয়ে গণগ্রেফতার করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত রাজশাহী ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটে অসংখ্য শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেককে রিমান্ডে নেয়া ও জেলে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডের নামে স্বীকারোক্তি আদায় করতে ছাত্রশিবির কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালানোর খবর সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে। এসব ছাত্রকে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি পরীক্ষার হল থেকেও গ্রেফতার করার খবর জানা যায়। মেসগুলো থেকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। রাতে ঘুম থেকে তুলেও গ্রেফতার করা হয়েছে অনেককে। কোনো কোনো মন্ত্রীর শিবির নির্মূলের ঘোষণা এবং গণগ্রেফতারের মাধ্যমে সারা দেশে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে। এর ফলে বিপুলসংখ্যক ছাত্রের স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আমরা সামগ্রিক ঘটনায় বিস্মিত না হয়ে পারি না। পুলিশ একতরফাভাবে একটি ইসলামী ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধাচরণ করছে। অতীতে আমরা দেখেছি, ছাত্রলীগ এর শত গুণ বেশি দোষ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। অথচ শিবির নির্মূলের নামে সারা দেশে যা করা হয়েছে এবং হচ্ছে, তার সাথে কোনো কিছুর তুলনা হয় না। নিরীহ ছাত্রদের দোষী সাব্যস্ত করার নামে যেভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, তাতে আইজিপি এবং পুলিশ কর্মকর্তারা কিভাবে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করবেন, যখন সময় আসবে? তাদের বিবেকে কি দংশন করে না? তারা তো অন্যায়ভাবে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে শিবির নির্মূলের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বদলির আতঙ্ক কিংবা পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভীতিই কি তাদের কাছে বড়? আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা এবং নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্ব কি তাদের কাছে কোনো ব্যাপারই না?
আমরা শিবিরকর্মী ধরপাকড়ের নামে গ্রেফতারকৃত কর্মীদের নিয়ে টিভি ক্যামেরার সামনে হাজির করানোর ছবিও দেখেছি। তাদেরকে দিয়ে বক্তব্য প্রচার করানো হয়। ফারুক হোসেন হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অভিযোগে কয়েক দিন আগে ইকরাম হোসেন নামে একজনকে গ্রেফতার করে টিভি’র সামনে হাজির করা হয়। আমরা তাতে দেখেছি কিভাবে স্বীকারোক্তি নেয়া হচ্ছে। ইকরাম হোসেনকে মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড় করানো হয়েছে। আর তার পেছনে অস্ত্রসজ্জিত র‌্যাব দাঁড়িয়ে আছে। এ অবস্খায় তাকে কথা বলতে দেখা যায় টিভি’র পর্দায়। এটা কি সম্পূর্ণ বেআইনি ও বিধিবহির্ভূত নয়? ইতোমধ্যে দেশের নয়জন প্রধান আইনবিদ এটাকে অবৈধ বলেছেন। একইভাবে আমরা দেখতে পাই, বিভিন্ন প্রাইভেট হোস্টেল ও পরীক্ষার হল থেকে যাদের ধরা হয়েছে, তাদের নামে কোথাও কোনো সুনির্দিষ্ট মামলা নেই। তাহলে পুলিশ যে তাদের বেআইনিভাবে ধরল, তা কী করে গ্রহণযোগ্য হতে পারে?
আমরা এই অভিযানে আরেকটি বিশেষ বিষয় লক্ষ করছি। আমরা দেখতে পাই, যেকোনো ইসলামি বইকেই কথিত জিহাদি বই হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। বিভিন্ন মেস ও হোস্টেল থেকে পাওয়া যেকোনো ইসলামি বইকেই জিহাদি বই বলে প্রচার করা হচ্ছে। এটা পাশ্চাত্য এজেন্সিগুলোর ইসলামফোবিয়া বা ইসলাম আতঙ্কে ব্যবহৃত একটি বিশেষ শব্দ। এটা আসলে এক ধরনের অজ্ঞতা ব্যতীত আর কিছুই নয়। সব বই, যেগুলো নিষিদ্ধ নয়, বৈধ বলে গণ্য। তাই সবাই তা রাখতে পারে। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এসব নির্যাতন ও অহেতুক গ্রেফতার বìধ করার আহ্বান জানাই। সেই সাথে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও কলেজের প্রিন্সিপালের প্রতি অনুরোধ, তারা যেন তাদের ছাত্রদের নিরাপত্তার ব্যবস্খা করেন। তাদের কোনো প্রকার হয়রানি যাতে না হয় সে দিকে যেন খেয়াল রাখেন। তারা এসব বন্ধের পদক্ষেপ নেবেন আশা করি। সেই সাথে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান রইল, তারা যেন মানবাধিকারের বিষয়ে আরো অধিক সক্রিয় এবং জুলুম-নির্যাতন বন্ধে আরো সোচ্চার হয়।
Click This Link
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×