somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবী বিখ্যাত সব ব্যর্থ কাহিনী

২৫ শে এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দৈনন্দিন জীবনে আমাদের প্রত্যেকেরই রয়েছে বিভিন্ন ব্যর্থতার কাহিনী। এখানে পৃথিবীর বিখ্যাত সব ব্যর্থতার কাহিনী দেয়া হল। যা পড়ে আমাদের নিজেদের ব্যর্থ জীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসতে পারে। অতএব Don’t worry be happy.

১. ব্যর্থতম লেখক: জার্মানীর এক লেখক তার জীবনে ৬৪ টা বই লেখেন যার মধ্যে মাত্র ৩টি বই এর প্রকাশক ধরতে তিনি সমর্থ হন। এর মধ্যে একটি বই প্রকাশক তার নিজের নামে ছাপিয়ে ফেলে। দ্বিতীয়টি ভুলক্রমে লেখকের নাম ছাড়াই প্রকাশিত হয়ে পড়ে। আর তৃতীয়টির ক্ষেত্রে এ রকম কোন সমস্যা হয়নি। পুরো বইযের বান্ডিল মার্কেটে যাবার পথে মিসিং হয় আর সে বই এর কোন হদিস পাওয়া যায়নি। পরে অবশ্য এক ঠোঙ্গা বিক্রেতার কাছে হারানো বই এর হদিস পাওয়া যায়। তবে বই হিসেবে নয় ঠোঙ্গা হিসেবে।

২. ব্যর্থতম ব্যাংক ডাকাত: ১৯৭১ সালে তিনজন ব্যাংক ডাকাত ডাকাতির উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের স্থানীয় একটি ব্যাংক এ ঢুকে পড়ে। এটা ছিল তাদের প্রথম ব্যাংক ডাকাতি। তাই উত্তেজনাবশত তারা ভুল করে ব্যাংক এ না ঢুকে পাশের ডির্পামেন্টাল স্টোরে ঢুকে পড়ে। হাতের অস্ত্র উচিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকে আমরা ব্যাংক লুট করতে এসেছি। দোকানের কর্মচারীরা এটাকে উচুদরের রসিকতা ভেবে উচ্চস্বরে হেসে উঠে। তাদের হাসি শুনে ডাকাতরা ঘাবড়ে গিয়ে কিছু না বুঝেই এক গাদা কয়েন চকলেট নিয়ে এলোপাথারি গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়।

৩. ব্যর্থতম কম্পিউটার প্রোগ্রামার: জার্মানীর জন মারথুস পেশায় একজন সৌখিন কম্পিউটার প্রোগ্রামার। তার কাজ হচ্ছে এন্টি ভাইরাস প্রোগ্রাম তৈরী করা। একবার বহু ঢাকঢোল পিটিয়ে তিনি একটি এন্টি ভাইরাস তৈরী করে পরীক্ষামূলক ভাবে বন্ধুর পিসিতে এটাকে টেস্ট রান করান। পিসিটি চালাতে গিয়ে দেখা গেল তার এন্টি ভাইরাসটি আসল ভাইরাস হয়ে বন্ধুর পিসির হার্ডডিস্ক ক্রাশ করে ফেলেছে।

৪. ব্যর্থতম বই: পশ্চিমা লেখক রুডলফ স্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টি নামে একটি গবেষণামূলক বই লেখেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বইটি বেস্ট সেলার বই এর তালিকায় চলে যায়। এর মধ্যে আকস্মাৎ লেখকের মৃত্যূ হলে ময়না তদন্ত করে ডাক্তার সার্টিফিকেট দেন। তাতে মৃত্যুর কারণ দেখানো হয় পুষ্টিহীনতা। এ খবর প্রচার হলে পরের সপ্তাহেই বই এর বিক্র বেস্ট সেলার থেকে ওর্স্ট সেলারে নেমে আসে।

৫. ব্যর্থতম আর্কিওলজিস্ট: মরক্কোর আবিওয়ালা আল রাজি একজন সৌখিন আর্কিওলজিস্ট। পেশায় তিনি একজন ইন্জিনিয়ার হলেও তার নেশা হচ্ছে প্রাচীণ কালের হাড়-গোড় খুজে বের করা। দীর্ঘ বার বছর পরিশ্রম করে তিনি নিজের এলাকাতেই নিয়ানডারথল যুগের মানুষের চোয়াল খুজে পান। যা নিয়ে আর্কিওলজিস্টদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। পরে কার্বন টেস্টে ধরা পড়ে যে ঐ চোয়ালটি কোন নিয়ানডারথল যুগের মানুষের নয় তারই মৃত দাদার চোয়াল।

৬. ব্যর্থতম শিক্ষক: আফ্রিকার এক প্রত্যন্ত গ্রামের এক প্রাইমারী স্কুল। স্কুলের অবস্থা খুবই করুণ। ঐ স্কুলে কোন ঘন্টা ছিল না। ফলে তারা ক্লাশ শেষ হলে বা ছুটির আগে স্কুলের বাইরে অপেক্ষমান এক আইসক্রিমওয়ালার কাছ থেকে ঘন্টা ধার করে এনে বাজাত। কিন্তু এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে আইসক্রিমওয়ালা ঐ স্কুলে ঘন্টার বিনিময়ে শিক্ষকের চাকুরী দাবী করে বসে। স্কুলে শিক্ষকের কিছু স্বল্পতাও ছিল আবার ঘন্টারও দরকার তাই তার চাকরী হয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন পর ঐ ঘন্টা স্কুল থেকে চুরি হয়ে গেলে ঐ আইসক্রিমওয়ালা শিক্ষকের চাকরী চলে যায়।

৭. ব্যর্ততম ধূমপায়ী: কলম্বিয়ার মাইকেল জর্জ কখনই ধূমপান করতেন না। কিন্তু বিয়ের পর তার স্ত্রী তাকে ধূমপান করতে উৎসাহিত করেন। কেননা তার স্ত্রীর ধারণা পুরুষ মানুষ সিগারেট না খেলে ম্যনলি লাগে না। স্ত্রীর অনুরোধে জর্জ একদিন বিমর্ষ মুখে এক প্যাকেট সিগারেট কিনে এনে একটি ধরালেন। সিগারেটে টান দেয়া মাত্র তিনি কাশতে কাশতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরে আসলে তিনি একটি চিঠি পান। তার স্ত্রীর ডিভোর্স লেটার।

৮. ব্যর্থতম উদ্ধার অভিযান: ১৯৭৮ সালের ১৪ জানুয়ারী সম্ভবত পৃথিবীর সব চাইতে সফল পশু উদ্ধার ঘটনাটি ঘটে বৃটেনে। এক বৃদ্ধার পোষা বিড়াল ছানাটি কি ভাবে যেন এক বিশাল বৃক্ষের মগডালে উঠে আটকে যায়। তখন দমকল বাহিনীর ধর্মঘট চলছিল বলে বৃটিশ সৈন্যরা বিপুল উদ্যমে ঐ বিড়ালটিকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসে। এবং অসাধারণ দক্ষতায় বিড়ালটিতে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। সমস্ত ব্যাপরটিতে বৃদ্দা এতই খুশি হন যে তিনি উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সৈন্যদের না খাইয়ে ছাড়েন না। সৈন্যরা বিদায় পর্ব শেষ করে গাড়ীতে উঠে যাওয়ার সময় উদ্ধারকৃত বিড়ালটিকে চাপা দিয়ে চলে যায়। কারণ কোন ফাকে বিড়ালটি বৃদ্ধার কোল থেকে নেমে গাড়ীর চাকার নিচে অবস্থান করছিল তা কেউই লক্ষ্য করেনি।

৯. ব্যর্থতম সার্কাস: ফ্রান্সে মিস রিটা থান্ডারবার্ড নামে এক মহিলা কামানের গোলা হিসেবে খেলা দেখাতেন সার্কাসে। খেলার নিয়ম অনুযায়ী তিনি কামানের ভেতর গিয়ে ঢুকতেন, কামান দাগা হলে তিনি ছিটকে গিয়ে দূরবর্তী জালে গিয়ে পড়তেন। একদিন শহরের মেয়র আসলেন খেলা দেখতে। যথারীতি কামান দাগা হল। কিন্তু রহস্যজনক ভাবে মিস রিটার পরিবর্তে তার অর্ন্তবাসটি ছিটকে গিয়ে মেয়রের মাথায় পড়ে। কামানের ভেতর মিস রিটার কাছে দ্বিতীয় অর্ন্তবাসটি পৌছানো পর্যন্ত সার্কাস বন্ধ রাখতে হয়।

১০. ব্যর্থতম রাজনৈতিক হত্যা প্রচেষ্টা: ফিদেল কাস্ট্রো ভাগ্যবানদের একজন। ১৯৭৪ সালের ভেতরেই উনাকে অন্তত ২৪ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়। এবং প্রতিবারই তা ব্যর্থ হয়। একবার কোল্ড ক্রিমের ডিব্বায় বিষ ভরা ক্যাপসুল রাখলে তা গলে যায়। আরেকবার কালো চুলের এক মায়াবিনী ঘাতক উল্টো্ উনার প্রেমে পড়ে যায়। আরেকবার ফ্রিজে রাখা চকলেট মিল্ক শেকে বিষ মিশিয়ে রাখা হয়। কিন্তু তা জমে বরফ হয়ে গিয়ে খাবার অযোগ্য হয়ে পড়ে। উনাকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন সময়ে প্রচুর পয়জন পেলেটস ছোড়া হয় যা প্রতিবারই ব্যর্থ হয়। আরেকবার এক আস্ত বাজুকা নিয়ে মারতে আসা দুই ঘাতক ধরা পড়ে যায়। বিস্ফোরিত একগাদা সী শেল মাত্র চল্লিশ মিনিটের জন্য ক্যাস্ট্রোকে মিস করলেও মূল হাভানা শহরের সমস্ত ট্রাফিক লাইট ফিউজ করে দিতে সক্ষম হয়।

১১. ব্যর্থতমবিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী: বাংলাদেশের বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে দেশের বিদ্যুত সমস্যাকে টর্নেডো, সুনামির মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে তুলনা করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ করা যেমন মানুষের সাধ্যের বাইরে তেমনি বর্তমানে দেশের বিদ্যুত পরিস্থিতিও সমাধান করা আমাদের ক্ষমতার বাইরে। খুবই চমৎকার যুক্তি। তাই আসুন আমরা সবাই মিলে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিদ্যুত খাতের সমস্যা সমাধান করার জন্য। তিনি যেন শীঘ্রই একজন দেবদূত পাঠিয়ে আমাদের দেশের বিদ্যুত সমস্যার সমাধান করে দেন।

* মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবি পৃথিবীর বর্থ্যতম একজন মানুষ হিসেবে এই জীবনে কিছুইতো করা হল না । মাঝে মাঝে মা-বাবাকে বলতে ইচ্ছে করে তোমরা ভুল মানুষকে নিয়ে কেন স্বপ্ন দেখলে? ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে আয়ু। হায়! জীবন এত ছোট কেন?

সংগৃহীত: আহসান হাবীব সম্পাদিত পৃথিবী বিখ্যাত সব ফেলটুস। (১১ নম্বরটি বাদে)
৪২টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×