somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

—বেঁচে থাকার জন্য লিখি

১৪ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হইচই কিংবা সমাবেশ করে কবিতা হয় না। আবার কবিতা যে কিসে হয়, সেটাও বলে দেওয়া যায় না। মোটকথা কবিতা যখন হওয়ার যেমন করে হওয়ার হয়ে যায়। হয়ে যাবে। সে জন্য সেকোনো আয়োজনের অপেক্ষা করে না। আর সমাবেশের মঞ্চও প্রত্যাশা করে না। হইচই দেখে দেখে সামনে আসে না। কিন্তু কখন আসে! আবার সেইকথা—সে যখন আসার চলে আসে। নিজের মতো। সগৌরবে। হ্যাঁ, তবে অবশ্যই তার এক ধরনের প্রস্তুতি থাকে। সেটা নিজেকে তৈরি করার জন্য। ছড়িয়ে যাওয়ার জন্য নয়। নিজেকে বিছিয়ে দেওয়ার জন্য নয়।

২০০০ সালের কোনো এক সন্ধ্যায়। তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিল। টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ দ্যোতনা সৃষ্টি করেছে। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছি। উঁচু গাছের ডালে ডালে উছলে পড়ছে জলের কণা। মনের অজান্তেই বৃষ্টির গভীরে ডুবে যাই। না ভিজেও ভিজে যাচ্ছি—দৌড়ে বেড়াচ্ছি সবুজ ঘাসের স্নিগ্ধ বিছানায়। হঠাৎ করেই মনে হলো—এই যে আমি পরম আনন্দে বৃষ্টি বিলাস করছি। বৃষ্টিকে নিয়ে ভাবছি। হাতের আঙুলে ছুঁয়ে দেওয়া বৃষ্টির কণা নিয়ে উচ্ছ্বসিত হচ্ছি। কিন্তু যার মাথার ওপর চালা নেই।

নিজস্ব ঘর নেই। রাস্তার পাশে কিংবা পরিত্যক্ত বাড়ির পাশে আশ্রয় নিয়েছে, যারা তাদের তো অনেক কষ্ট। বৃষ্টি নিয়ে উচ্ছ্বাস ফুরিয়ে আমার মন বিষাদে ছেয়ে গেলো। কী মনে করে যেন টেবিলের কাছে ছুটে গেলাম। কবিতার আদলে খাতায় এলোমেলা কিছু বাক্য লিখে ফেললাম। তখনো পাঠ্যবইয়ের বাইরে তেমন কেনো বই পড়া হয়নি। কী লিখলাম, জানি না। তবে নিজের ভেতরে যে কষ্টটা জাপ্টে ধরেছিল—লিখতে পেরে মনে হলো সে কষ্ট কিছুটা নেমে গেছে। এরপর মূলত কোনো কিছু নিয়ে কষ্ট পেলেই লেখা হতো। টুকটাক লেখা। কবিতা লেখার চিন্তা থেকে নয়। এরপর আস্তে আস্তে পাঠ্যবইয়ের বাইরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, হুমায়ূন আহমেদের কিছু লেখার সঙ্গে পরিচয় ঘটে।


বছর খানেক লুকিয়ে লেখা চলে। নিজের মতো কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা—ভাব তৈরি হলে চুপচাপ ডায়েরিতে লিখে রাখি। কাউকে দেখাই না। লজ্জা লাগে। মনে হয়, আমার এই গোপন ভাবনা কেউ পড়ে হয়তো হাসবে। কিংবা বিদ্রূপ করবে। তখন নিজের কাছে খারাপ লাগবে। এরপরও ২০০১ সালের মাঝামাঝি সময় একদিন কয়েকজন বন্ধুকে বলি। দুই-একজনকে দেখাইও। কিন্তু তারা পাত্তা দেয় না। তারা বলে কবিতা লেখা এত সহজ কিছু নয়, এটা অনেক বড় ব্যাপার যেটা আমাকে দিয়ে হবে না। বন্ধুদের তিরস্কারে আমার গতি থামে না। বিকেল হলে সুগন্ধা নদীর তীরে বসি থাকি। বেশিরভাগ সময়ই বন্ধুদের আড্ডা এড়িয়ে একা থাকার চেষ্টা করি। চুপচাপ নদীর স্রোত দেখি। আকাশ দেখি। নদীর ওপাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাছপালা দেখি। মুগ্ধ হই। নতুন নতুন বই পড়ার চেষ্টা করি।

পুরাতন সব লেখা বাদ দিয়ে আবার নতুন করে শুরু করলাম। পাঠের ব্যাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে নিজের লেখা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করলাম। তখন আড্ডা প্রকাশের মাধ্যমে লিটলম্যাগ আন্দোলনে যুক্ত হই। পরিচয় ঘটে তখনকার সময় বরিশালের প্রবীণ-তরুণ কবিদের সঙ্গে।

২০০২ সালে একটা কিশোর নাটক লিখে ফেলি। কবিতার প্রতি বন্ধুদের আগ্রহ না থাকলে নাটকে বন্ধুদের আগ্রহ দেখতে পাই। তাদের সহযোগিতা ও অশংগ্রহণে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।

২০০২ সালে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার পর লেখায় আগ্রহী আরও কিছু বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় ঘটলো। তার মধ্যে একজন হেলাল বিন হানিফ। এখন সীমান্ত হেলাল নামে লেখালেখি করে। ওর সঙ্গে সাহিত্য-বিষয়ক আড্ডা হতে থাকে। নতুন নতুন বই পড়ার পরিকল্পনা করি আমরা। এরই মধ্যে দেয়ালিকা প্রকাশের দায়িত্ব পেলাম। দেয়ালিকার সম্পাদক হিসেবে লেখা জোগার করা-সম্পাদনা-প্রকাশ করায় আরও লেখায় উৎসাহীদের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। সতীর্থ সীমান্ত হেলালসহ অনেক বন্ধুর নিয়ে পত্রিকা প্রকাশের চেষ্টাও করলাম। যদিও একসংখ্যা প্রকাশ হয়ে সে পত্রিকা আর আলোর মুখ দেখেনি। এমন লিখতে লিখতে একদিন মনে হল—লিখে রেখে দিলে কী হবে! এগুলো প্রকাশ করতে হবে। ২০০২ সালের শেষের দিকে একটি লেখা প্রকাশিত হলো। এরপর থেকে বিরতি দিয়ে লেখা প্রকাশ হতে লাগলো।

২০০৬ সালের দিকে ব্যক্তিগত পাঠস্তর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম—এতদিন আমি নিজের লেখা লিখিনি। যা লিখেছি তা আমার পাঠ প্রভাবিত। সেটা নজরুল-রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছায়া। পুরাতন সব লেখা বাদ দিয়ে আবার নতুন করে শুরু করলাম। পাঠের ব্যাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে নিজের লেখা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করলাম। তখন আড্ডা প্রকাশের মাধ্যমে লিটলম্যাগ আন্দোলনে যুক্ত হই। পরিচয় ঘটে তখনকার সময় বরিশালের প্রবীণ-তরুণ কবিদের সঙ্গে। তরুণদের মধ্যে—অনিন্দ্য দ্বীপ, রেশমা পপি, মোহাম্মদ জসিম, তুহিন ওসমান, রিয়াজ আহমেদ, হাসান মেহেদী, কিং সউদ, মিছিল খন্দকার, আগন্তুক মাহফুজ ও মাহমুদ মিটুলের সঙ্গে নিয়মিত আড্ডা হতে থাকে। অগ্রজদের মধ্যে—তপংকার চক্রবর্তী, আসমা চৌধুরী, মুস্তফা হাবীব, নয়ন আহমেদ, মনিরুজ্জামান ফরিদ, সাইফুল আহসান বুলবুল, কাশেম নবী, হেনরী স্বপন ও মোশতাক আল মেহেদী। যা পরবর্তী লেখায় নিজেকে তৈরির সময় হিসেবে অবদান রেখেছে বলে আমি বিশ্বাস করি


পুরো লেখাটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
www.chintasutra.com/2021/06/লেখালেখি-আমার-অক্সিজেন-॥/
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০২১ বিকাল ৩:৩৮
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×