তিস্তা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলগুলোতে সাম্প্রতিককালে ব্যাপক হারে পিয়াজের চাষ হচ্ছে। বালুময় চরাঞ্চলে পিয়াজ চাষ করে এবার বাম্পার ফলন পেয়েছে এলাকার কৃষকরা।
পিঁয়াজের পাশাপাশি ইদানিং চরাঞ্চলগুলোতে গম, ভুট্টা, আলু, মরিচ, ডাল, বাদাম, সরিষা, তিল, তিষি, টমেটো, বেগুন, মুলা, লাউ, শিমসহ বিভিন্ন শাক-সবজির আবাদও ভাল হচ্ছে। ফলে মঙ্গা প্রবণ এসব এলাকার চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
নদীর চরাঞ্চলগুলোতে এ বছর বেশি মাত্রায় জমিতে সরাসরি বীজ ছিটিয়ে পিয়াজের চাষ শুরু করেছে। এতে পিয়াজ চাষিরা বাম্পার ফলনও পেয়েছে। অথচ আগে অন্য জমিতে বীজ ছিটিয়ে পিয়াজের চারা করে তা জমিতে রোপন করা হতো। এই পদ্ধতিতে পিয়াজ চাষে সময় যেমন বেশি লাগতো।
অপরদিকে উৎপাদনও হতো অনেক কম। কিন্তু ছিটানো পদ্ধতিতে পিয়াজ চাষ করে কম সময়ে বেশি পরিমাণ পিয়াজ উৎপাদন করে দামও পাচ্ছে অনেক বেশি। এছাড়া বাজারে পিঁয়াজের সংকটের সময় থেকে চরাঞ্চলের ছিটা পিঁয়াজ বাজারে আসায় তা ক্রেতাদের অপেক্ষাকৃত কম দামে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর তিস্তার চরাঞ্চলে ৬০ হেক্টর জমিতে ছিটা পিঁয়াজের চাষাবাদ করা হয়েছে। লাঠশালার চর, খোর্দ্দার চর, নিজামখাঁর চর, চর চরিতাবাড়ি, বেলকা নবাবগঞ্জের চর, রিয়াজ মিয়ার চর, হাট-হাজারির চর, উজান বোচাগাড়ির চর, ভাটি বুড়াইল, চর বিরহিম, হরিপুরের চর, বাদামের চর, কালাই সোতার চর, ফকিড়ের চর, কোরানির চর, চর ভোড়ের পাখিসহ বিভিন্ন চরে ছিটা পিঁয়াজের চাষা হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি ছিটা পিঁয়াজ পাতাসহ বিক্রি হচ্ছে ২০ হতে ২৫ টাকা এবং পাতা ছাড়া প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ হতে ৪৫ টাকা।
উপজেলার ভাটি বুড়াইল চরাঞ্চলের কৃষক আব্দুর রহিম জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে ছিটা পদ্ধতিতে পিঁয়াজের চাষ করে আগাম ফসল পাওয়ায় পিয়াজের দাম পেয়েছেন অনেক বেশি। যা তাকে এই পদ্ধতিতে পিয়াজ চাষে যেমন উদ্বুদ্ধ করেছে তেমনি মঙ্গার এই সময়টিতে তাঁর আর্থিক সংকটও নিরসনেও সহায়তা করেছে। তদুপরি এবছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় তার জমিতে ফলনও ভাল হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, নদীবাহিত পলি জমার কারণে চরাঞ্চলের বালুময় জমিগুলোর উর্বরতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে শুধু পিয়াজ নয় রবি মৌসুমের সব রকমের সবজির চাষ হচ্ছে এবং তার উৎপাদনও বাড়ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০২