আপনি ভাবতে পারেন বর্তমান সময়ের সব চেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় হচ্ছে প্রেম,গার্ল ফ্রেন্ড,বয় ফ্রেন্ড অবিশ্বস্য হলে সত্যি যে ছেলেটা এখনও একলা ঘরে থাকতে ভয় পায় রাতে মা ছাড়া প্রছাব করতে যায় না সেও নাকি প্রেম করে,শুনে অবাক হলাম তারও নাকি গার্ল ফ্রেন্ড আছে।আর যে মেয়েটার সাথে প্রেম করে সেই মেয়েটা এখনও রাতের বেলা মাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমায়,প্রত্যেক রাতে ঘুমের ঘোরে বিছানায় হিসু করে। প্রথমে শুনে অবাক হতাম এখন আর হইনা। যে ছেলেটা এখনও স্কুল লাইফ শেষ করতে পারেনি,যে হয়ত এখনও আম্মুর হাতে তুলে খায়,সেই ছেলেটিও নাকি আজকাল প্রেমে ছ্যাকা খাইছে। আমার অনেক অশ্চয্যের মধ্যে এটাই সব চেয়ে বড় অশ্চয্য প্রেমে ছ্যাক খাওয়া মেয়েটির জন্যে হাত কাটে।আর মেয়েটি নাকি ক্লাশ ৬-১০ শেষ করতে করতে কয়েক ডর্জন বয় ফ্রেন্ড পাল্টায়।এটা শুধু মেয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়,ছেলেদের ক্ষেত্রে খুব বেশিই প্রযোজ্য। আজকালকার পিচ্চিদের প্রিকেডেড ও কচিং নাসারি পড়ুয়া ছেলে মেয়ের প্রেম দেখলে আবেগে অনেকের কান্না পেলেও আমার খুব হাসি পায়।তারা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করে,হাত কেটে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখে মেয়েটিকে প্রপোজ করে,আর মেয়েটি সেই রক্তে লেখা চিঠি দেখে আবেগে একদম মোমের মত গলে যায়,প্রেম আগ্নেয় লাভার মত উতলে উতলে ওঠে।শুধু কি তাই ক্লাশ এইট না পেরুতেই মেয়েটি যায় হাসপাতালে,পেটে নাকি আটকে গেছে।এর জন্যে দায়ি কে? খুঁজতে খুঁজতে বেরিয়ে আসে ক্লাশ নাইনে পড়া একটা ছেলে,যার দাড়ি গোফ এখনও ভালভাবে গজায়নি সেই ছেলে। খুব অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। অনেকে আবার আছে ক্লাশ নাইনেই দেবদাস হয়ে যায়।প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে বিড়ি সিগারেট খাইতে শুরু করে,বিড়ি সিগারেটটা প্রথম স্টেজ,বাকি গুলো তো আছেই।যদি তাকে বলা হয়,এত্ত ছোট্ট এখনি এগুলো খাও যে?উত্তর আসে এ রকম,"নিজেকে টেনশন মুক্ত রাখতে।"ভাবতে পারেন স্কুল পড়ুয়া একটা ছেলে বিড়ি সিগারেট খায় নিজেকে টেনশন মুক্ত রাখতে?। আজকাল ক্লাশ এইট-নাইনে এ পড়া মেয়ে গুলো যে রকম পেকে গেছে তাতে এদের তাকানোর অন্য রকম ভংগি দেখে, চোখে চোখ পড়লে নিজেরই লজ্জালাগে।এরা অতি তাড়াতাড়ি পেকে যায় বলে গন্ধটাও তাড়াতাড়ি ছড়ায়,চারদিক থেকে সে গন্ধে ছুটে আসে গন্ধ পিপাসুরা।যখন একে একে সবাই গন্ধ শুকে চলে যায়,তখন মেয়েটি তার বন্ধুকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলে সব ছেলেরায় এক মত। আমরা যে সময় প্রেম কি,ভালবাসা কি বুঝতাম না সে সময় এরা দু চারটা ছ্যাকা খায়। আমরা যে সময় রুপকথার গল্প পড়েছি সে সময় এরা চটি গল্প পড়ে।আমরা যখন মোবাইল ছুয়ে দেখারও সাহস পাইনি এরা সে সময় অ্যান্ড্রয়েট ফোন ইউজ করে। এখন ক্লাশ ফাইভে পড়া একটা মেয়েকে ক্লাশ সিক্সে পড়া ছেলে প্রোপোজ করতে গেলে, মেয়েটা খুব অবাক আর বিষ্ময় প্রকাশ করে বলে,"ভাইয়া আমি এখনক্লাশ ফাইভে পড়ি,আপনি কামনে ভাবলেন আমি এখনও সিংগেল আছি!!!!!!!!?" কয়েকদিন পর হয়ত শুনবেন ক্লাশ ওয়ানে পড়া ছেলেটি নার্সারিতে পড়া মেয়েটিকে প্রপোজ করতে গিয়ে এই কথাশুনেছে যে,"ভাইয়া আমি এখন নার্সারিতে পড়ি,আপনি ক্যামনে ভাবলেন আমি এখনও ফ্রি আছি। এখন ভাবুন তো কখন অফিস বা সংসার সামলাই কখন ছেলে মেয়েদের সামলাই। মেয়ের বাবারা তো সব সময় চিন্তায় মাথা গরম হয়ে থাকে কখন যেন হাসপালে যাবার ডাক পড়ে। ছেলের বাবা গনতে থাকে তার ছেলেকে কজন মেয়ে প্রফেজ করে। যতো প্রেমে ফেমাস হবে ওর ডিমেন্ট ততো বেশি। গৃহ শিক্ষক পড়াইতে আসলে ৩য় শ্রেণী পড়–য়ার মেয়ের মায়ের টিভিতে প্রিয় ছিরিয়েল দেখা বন্ধ করে মেয়ের নাটক দেখতেই সময় চলে যায়। একটু চোখের আড়াল হলে ছোট গল্পোটাকে টেনে সেটাকেই প্রেম কাহিনীর সিনেমা তৈয়ার করতে একটু সময় নেয় না। সম্পতিতে ফেসবুকে আইডিতে একটা ছোট বাচ্চার ছবি দিয়ে আইডির প্রোফাইল খুলে চেটিং করে। আমি ভেবেছি ফ্যান প্রোফাইল আর সেই আইডিতে যদি ভুল করে মন্তব্যে সম্মধন করেন বাবু প্রতি মন্তব্যে দেখে অবাক বলে এই আনটি আপনার কতো নাম্বার চলছে। বুঝতে না পেরে রিপলাই দিয়ে জানতে চাইলাম কি ক নাম্বার চলছে। ও পাশ থেকে বলে ধূর যতোসব বেকডেড এখনও কি ফিডার খান কতোজনের সঙ্গে লাভ চলছে। আমি থ মরে বলি লে হালুয়া এই পিচ্চিটা বলে কি। আবার আন্ডর লাইনে লেখা আমার ১১ শেষ লাইনে ৯ ওয়েটিং ৩২ আর টাগেট ৭০। আমি ভাবলাম কোন এক ছেলে ফাজলামো করে ফ্যাক আইডি দিয়ে আমায় বোকা বানাচ্ছে। আমি বললাম তোমার নাম্বারটা দিবে বাবু। পিচ্ছি রেগে মেগে বলে এটা কোন গোয়ালে গরু আপনি আমায় বাবু বলছেন কেন আমি আশিক সেই সঙ্গে মোবাইল নাম্বারটা দিলো। আমি আর ধয্য ধরতে পারলাম না। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে নাম্বরটা তুলে কল দিলাম কল ওয়েটিং প্রায় ৪৫ মিনিট পর কল ধরলো ও পাশ থেকে বলছে কতো নাম্বার বলছেন আমি থ মেরে গেলাম সত্যিই তো ৫/৬ বছরের বয়সের ছেলে বাচ্চার কন্ঠ। আমি বললাম ক নাম্বার মানে। আরে আন্টি আপনি ব্যাবডেড হয়ে গেছেন। বলেই লাইনটা কেটে দিলো। এখনও আমার ওই বাচ্চার কথা গুলি ঘুরে ফিরে কানে বাচচ্ছে। এখন মনে হচ্ছে সত্যি কি দেশটা রাতারাতি ডিজিটাল হয়ে গেলো। তারা যে কি দেখে প্রেমে পড়ে সেটাও ওরা নিজেরাও জানেনা। এটাই জানে প্রেম করতে হবে। ভাবতে গা শিহরণ দিয়ে উঠে ৯ বছরের বাচ্চাকে এভাশন করতে করার জন্য ক্লিনিকে যেতে হচ্ছে। এই প্রভাবটা শুধু শহরে সীমাবদ্ধ নেই এখন সেটালাইড চেনেল ও মোবাইলের বদৌলতে গ্রমেও পৌছে গেছে। এই মহামারি মরণ ব্যধি রোগ থেকে সকল শিশুকে বাচতে এগিয়ে আসুন। এই প্রেম নামক ভাইরাসটা উল্কার বেকে ছুটছে । প্রেমের রসলো গল্পো বড়দের কাছ থেকে শুনে টিভি ছিরিয়েল আর মোবাইলে ফেসবুক আর অশ্লিল ছবির ভিডি দেখে বাচ্চারা এ কান থেকে ও কান পৌছাইতে দেরি করেনা। নিজের অন্তেই প্রেম নামক রোগে অক্রান্ত হয়ে পড়ে। এই কারণে বাল্য বিয়ের প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মরণ ব্যধি রোগ থেকে কেমনে শিশুদের বাচান যায় প্লিজ সবাই টিপস ও কমেন্ট দিয়ে জানাবেন। হয়তো বা আপনার একটা মূল্যবান মন্তব্যে একটা শিশু ভুল পথ খেকে সঠিক পথে ফিরে আনা সম্ভাব হবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৩