somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত)
জীবনের স্বপ্নগুলো স্বপ্নেই ভেসে বেড়ায়...বাস্তবে ধরা দেয় না!, তবুও স্বপ্ন দেখি...ঘুম থেকে জেগে উঠি, আশায় বুক বাঁধি ...ভুল-ত্রুটি শুধরে নতুনে পথ চলার।

হাল ছেড়ো না মাঝি- সঞ্জীব চন্দ্র চট্টোপ্যাধায়ের লেখা রম্য রচনা থেকে সংগ্রহিত। (আমার ভাল লাগলো তাই শেয়ার করলাম)

২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রেম আর বেল একই স্বভাবের, সময় হলে পড়বেই--
প্রেম কি যাচিলে মিলে, আপনি উদয় হয় শুভযোগ পেলে;
- এ সেই অর্ধকুম্ভ, পূর্ণচন্দ্রের মত,
গ্রহে গ্রহে যোগ হবে তবেই হবে।

আমিই সেই পিয়ন কোর্টের পেয়াদা, সমন আমি ধরাবই;
চিঠি আমি গুজবই!
যখন বাড়ি ফিরছে, তখন হবে না; ধোলাইয়ের ভয় আছে!
যখন পাড়া ছেড়ে যাচ্ছে, তখন পেছন পেছন যেতে হবে--
বে-পাড়ায় গিয়ে নির্জনে কুটুস।

এবার সুযোগ এসে গেল- সে চলছে, আমি চলছি-
মাঝে হাত কুড়ির ব্যবধান-বেশ যাচ্ছিল!
হটাৎ ঘুরে গেল! আবার বাড়ী মুখো;

আমার পাশ দিয়ে হনহন করে হেঁটে বাড়ী চলল-
-কিছু ভুলে-টুলে গেছে হয়তো!
এরকম মেয়ে-ছেলে আমি লাইফে দেখিনি!
-এসব মেয়ে-ছেলে সংসার করবে কি করে?
যার কোন মতি-ই স্থির নেই'

আমিও যদি হটাৎ ফিরি, তাহলে লোকে সন্দেহ করতে পারে
তাই অকারণে বেশ কিছু-দূর সামনে হেঁটে গেলাম;

প্রেমের ভীত আর বাড়ীর ভীত এই জাতের ব্যাপার-
খেটে-খুঁটে তৈরী করতে হয়!

রোদে পুড়ে, জলে ভিজে, বেকার একটা চক্কর মেরে
আমি এলুম গোপীদা-র দোকানে, গোপীদার কচুরীর দোকান।

গোপীদা বললে - কী হল? তুমি গেলে ও-দিকে, ও এলো এ-দিকে
ধেড়িয়েছ নিশ্চয়ই! কেস-টা কি?

--বললাম কেস আবার কি; নেঁজে খেলছে-
মহা ধরিবাজ, আগেই বলেছিলুম;
মেয়ে-ছেলে কি চিজ্-রে বাবা-

শোন বসন্ত, তুমি একটা কাজ কর!
ছোট-বেলা থেকে শুনে আসছি- বীর ভোগ্যা বসুন্ধরা;
বসুন্ধরা মানে তো মেয়ে-
তুমি- তুমি, তুমি বীর হও!

বীর হও? বীর হব কি করে? যুদ্ধ করবো?

আরে-শোন না; আমাদের পাঁড়ায় একটা বড় বদ-মেজাজী ষাঁড় আছে জানো- তো ?
ওই ষাড়টার পিঠে তুমি চেপে বসে তুমি পাড়া-মহল্লা প্রদক্ষিণ কর।
-- প্রমাণ করো যে তুমি বীর।
তোমার খুব নাম হবে, আর সেই নামের-টানে সে তোমার কাছে আসবে।
আমি জানি এরকম রসিকতা আমায় অনেক সহ্য করতে হবে-

গোপীদা বললে, শোন বসন্ত; আর একটা কাজ তুমি করতে পারো।
তুমি এখন বেশ কিছুদিন শিবের মাথায় জল ঢালো-
মেয়েরা যদি শিবের মাথায় জল ঢেলে বর পায় তাহলে তুমিও বউ পাবে।
কিন্তু, বৌ পেলে খাওয়াবে কি? রোজগার-পাতি তো কিছু নেই,

- নাহ্, লোকটার মাথায় কিস্সু নেই, সব গুলিয়ে ফেলেছে;
প্রেম আর বিয়ে - সব গুলিয়ে ফেলেছে এক্কেবারে।
সারাটা জীবন ট্যাটে বসে পয়সা আর পয়সা-
আর ঢামার-মতো একটা ভূঁড়ি।

না পড়েছে কবিতা, না পড়েছে উপন্যাস-
আরে - প্রেম হচ্ছে- খুকখুক কাশি, রক্ত, সমাধি, আধুনিক গান-
তোমার সমাধি ফুলে-ফুলে ঢাকা;
প্রেম বলে নেই, তুমি নেই-
প্রেমিক মরলে চিতায় পুড়ানো হয় না; সমাধি দেয়া হয়;
আর তার পাশে থাকে শিউলি, বকুল---

গোপীটার যদি রবীন্দ্রনাথের গানটাও একটু মন দিয়ে শুনতো-
তাহলে অনেক কিছু বুঝতে পার-তো!
আরে পড়তে হবে না, শুধু কান-টা গানের দিকে রাখা;
এ গানটা প্রায়ই হয়- আমি জেনে-শুনে বিষ করেছি পান'
গান-টা আমার একটু একটু আসে- জানালা খুললে যেমন উনুনের ধোঁয়া আসে
অটোমেটিক আসে!

বেশ ধরেছিলুম- জেনে-শুনে বিষ করেছি পান'- গলা পরিস্কার,
সুর-টাও বেশ লেগেছিল - গোপে পাঠা বলল-
এতো আত্মহত্যার কেস!

বুঝে গেলুম- গোপী যে লেভেলের লোক তাতে
ওর বাপের ক্ষমতা হবে না এ গানের মানে বোঝার!

--আরে প্রেম যে একটা কত্ত বড় কাজ, কী দহণ, কী জ্বালা-
গোপীর একটাই জ্বালা, ধারের পয়সা আদায়ের জ্বালা
পাওনাদারের কাছে তলব করার জ্বালা;
একবোরে কোর্স ম্যাটেরিয়েল- কী আর করি!

নিজেই আপন মনে গাইতে লাগলাম-
"প্রাণের আশা ছেড়ে সঁপেছি প্রাণ
আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান
যতই দেখি তারে ততই দহি-
আপন-মন জ্বালা নিরবে সহি
তবু পারিনে দুরে যেতে - মরিতে আসি
লইগো বুক পেতে অনল বান- আমি জেনে-শুনে বিষ করেছি পান-

রবীন্দ্রনাথ ইজ রবীন্দ্রনাথ, কি বোধ, পারসেপশন, কনসেপশন, রিয়্যালাইজেশন-
সকলের মনে ঢুকে বসে আছে- ই্শ্বরের মতো।
- এই গান তো আমার জন্যই লেখা;

প্রেমের একটা ব্যাপার লক্ষ করেছি শরীর-টাকে করে দেয় জলের ট্যাংক।
কথায় কথায় জ্বল এসে যায় চোখে ।
লংকা চিবোলে নাকের জল, আর প্রেমে পড়লে চোখের জল।
--আর সংসারে ঢুকলে চোখের জল নাকের জল ‍দুটোই।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:২৮
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×