somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কামাল পাশার ঘরে ফিলিস্তিনের পতাকা: প্রতিবাদের সলতেটা জ্বলুক…!

১৯ শে মে, ২০২১ বিকাল ৩:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসরায়েলী আগ্রাসনের প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনীদের প্রতি সমর্থন জানাতে তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষ প্রধান বিরোধী দল (আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল পাশা যার প্রতিষ্ঠাতা) সিএইচপি তাদের প্রধান কার্যালয়ে ফিলিস্তিনের পতাকা টানিয়েছে!!!


একপাশে পাশা অপর পাশে ফিলিস্তিন। যারা তুরস্ক, তুর্কি জনগণ বা তুর্কি রাজনীতির অতীত-বর্তমান নিয়ে খোঁজ-খবর রাখেন তাদের কাছে খবরটা কৌতূহল উদ্দীপকই বটে।

একটা ব্যাপার শুরু থেকেই লক্ষ্য করছি। গাজায় এবারের ইসরায়েলী আগ্রাসনের পর, দলমত নির্বিশেষে তুর্কিরা ইসরায়েলের নিন্দা ও তাদের আগ্রাসন প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলছে। সিএইচপি প্রধান নিজেও ফিলিস্তিনীদের পক্ষে সরব রয়েছেন!! বলছেন-ফিলিস্তিনী মজলুদের যে কোন ধরনের সহযোগিতা করবেন তিনি ও তার দল।

সিএইচপির এমন অবস্থান নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এরদোয়ান তথা শাসক দল একেপির সমর্থকেরা। অনেকে সাধুবাদ জানালেও কেউ কেউ একে জনমতের চাপে লোক দেখানো আখ্যা দিয়ে অতীতে তুরস্কে 'আলেম ও ইসলামপন্থী'দের উপর চালানো নির্যাতনের কথা তুলছেন। তবে আমার চোখে সাধুবাদ জানানো মানুষের পাল্লাই ভারী।

এই ফাঁকে একটা গল্প বলি। একবার এক তুর্কি শিশুকে (আমার স্টুডেন্ট) জিজ্ঞাসা করেছিলাম তোমার ধর্ম কি? জবাবে সে বলেছিল তুর্কুম (আমি তার্কিশ)। তুরস্কে কামাল পাশার লাখো অনুসারী আছে যারা নিজেদের কোন ধর্মের পরিচয় দেয় না। তারা কেমালবাদী। তাদের কোন ধর্ম নেই। কামাল পাশা ক্ষমতা গ্রহণের পর নিজ দেশকে আরব তথা মুসলিম বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। বহুভাবে চেষ্টা করেছেন তুর্কিদের ইউরোপীয় জীবন ও সংস্কৃতির সাথে একাত্ম করাতে।

সেই দলটার এভাবে ফিলিস্তিনীদের অধিকার রক্ষায় কথা বলা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় মানুষ ইসরায়েলকে না বলতে শুরু করেছে….

যুক্তরাষ্ট্রে, যুক্তরাজ্যে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যেসব রাষ্ট্র ইসরায়েলকে অন্ধভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে সেসব দেশের মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায়…প্রতিবাদে শামিল হয়েছে প্রতিবেশী ভারতের একটা বিশাল অংশও।

সবচেয়ে সাহসী কাজটা করেছে, অরুন্ধতী রায়ের নেতৃত্বাধীন একদল বুদ্ধিজীবী। যারা ইসরায়েলে হামাসের রকেট হামলাকে আখ্যা দিয়েছে প্রতিরোধের অংশ হিসেবে!, বলছে এটা ফিলিস্তিনীদের অধিকার। অরুন্ধতীর মতো আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত বুদ্ধিজীবী, লেখকের এমন সাহসী উচ্চারণ হাজারো মুক্তিকামী মানুষকে সাহসী করবে বৈকি। আরও অনেককে অনুপ্রাণিত করবে অন্যায়ের প্রতিবাদে, কেউ কেউ প্রতিবাদ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে প্রতিরোধে শামিল হবে।

বাংলাদেশে অনেককেই দেখি হতাশ। বলছেন, প্রতিবাদ করে কি হবে! আবার অনেকে খুঁচা দিচ্ছেন ফিলিস্তিন নিয়ে নিজের আবেগ প্রকাশের জন্য। তাদের বলি-খেলে একদল, দেখে আরেক দল আর অপর দলটা সমালোচনা করে। সুতরাং আপনাদের নিয়ে কোন কথা নাই।
আমি কিন্তু প্রদীপের নিচে আলোই দেখছি। দেখছি প্রতিবাদী মানুষের ঢলে ভেসে যেতে জয়নবাদী সন্ত্রাসীদের। আসেন আশার কথা বলি, না বলতে চাইলে চুপ থাকি….ভুলে যাবেন না একটা দুইটা কণ্ঠ মিলেই হাজার কণ্ঠের মিছিল হয়। লিখিত হয় কণ্ঠে কণ্ঠে যুদ্ধ জয়ের ইতিহাস গাঁথা।

তুরস্ক নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়েই শেষ করি। তুরস্ক হচ্ছে বর্তমান দুনিয়ায় একমাত্র দেশ যারা লাখ লাখ মুসলিম শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে শুধু সরকার প্রধানরা কথা বলেই ক্ষান্ত হন না। দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ সমাবেশও করেন। আমার তুরস্ক জীবনে ফিলিস্তিনীদের নিয়ে এমন বেশকিছু প্রতিবাদ সমাবেশে আমি নিজেও শামিল হয়েছি।
এছাড়া তুরস্ক আয়োজিত আন্তর্জাতিক নানা অনুষ্ঠানে তুরস্কে অবস্থানরত ফিলিস্তিনীরা ছাড়াও ফিলিস্তিন থেকে আমন্ত্রিত মেহমানরা উপস্থিত থাকেন। একবার যেমন উপস্থিত থেকে আমাদের আজান শুনিয়েছিলেন আল আকসা মসজিদের মুয়াজ্জিন।

('তুরস্ক, ফিলিস্তিন, এরদোয়ান: সমালোচনা ও বাস্তবতা' নিয়ে কয়েক পর্বে বলার চেষ্টা করব।) আপতাত আসেন কণ্ঠ মিলাই- We are from Bangladesh & We Support Palestine.
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০২১ বিকাল ৩:৩০
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×