‘ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো’ একটা প্রবাদ পরছিলাম ছোটবেলায়। যারা ব্লগ লেখে বা পড়ে আমার কাছে তাদের ঐরকম কিছু একটাই মনে হইছে। কিন্তু এখন দেখলাম তারাই না পুরো বাংলাদেশ জুড়েই এই ঘরের খেয়ে বনে মোষ তাড়ানো লোকের অভাব নাই। আজকে ফেবুতে ঢুকে কিছুটা অবাক, সবার প্রোফাইলে একটাই কথা লেখা #i_support_gaza. কিছুই বুঝি নাই, শুধু এটুকু বুঝছি আবেগে বাঙ্গালিয়ানা, বঙ্গবালকদের মাথায় সওয়ার হইছে। হুজুগে বাঙালি, কথাডা কত্ত বড় সত্যি আজকে আবার প্রমান পাইলাম।
এসব করা ভালো কাজ মানি। আমি নিজেও চেষ্টা করি, না পারলে অনুৎসাহিত করি না। কিন্তু আজকে দেখে আমার সত্যি ভালো লাগে নি। কি কারনে সব ব্যাখ্যা করছি।
ভাই, আমার ঘরে চুরি হয়, চোর সিঁধ কাটে প্রতিদিন। আর অন্যের বাড়ি চুরি হইলে আমরা দেখি, আমরা বইলা উঠি আরে মাম্মা, দেখ ঐ বাড়িতে চুরি হইতাছে। পরেরদিন আইসা ফেবু স্ট্যাটাস “ watching a thief who চুরিং in my house, caught to another bari, & free out by the help of gayer matha”
মাথাডা কে বুঝতেই পারতেছেন। আমার প্রশ্ন হইল কি লাভ এই কইরা? ফেবুতে দুইদিন গাজায় হত্যা বন্ধ করো চিল্লাইয়া আবার যদি এখন ফুটবল বিশ্বকাপ নামাইয়া দেই, আমার বিশ্বাস পাবলিক তাই খাবে। কেউ ডিনাই করতে পারবেন বইলা মনে হয় না। এমনকি আমি নিজেও।
আমার বুদ্ধি কম। বুঝি কম। তবে এট্টুক বুঝি যদি এই প্রতিবাদটা হলমার্ক বা শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রে করতাম তাইলে অনেক বেশী ফায়দা হইত। নিজের ভালো পাগলেও বোঝে, বাঙ্গালী বোঝে না। এটা আমার অভিমত, কারন আমি নিজের ভালো বুঝি না।
এখন যেই অবস্থায় চলতেছি তাতে আমার মনে হয় আমরা অনেকাংশে স্বাধীনতা হারাইছি। ভারত এখন আমাদের দেশের অনেক খানি নিয়ন্ত্রন করে, কানাঘুষায় এবং কিছু নগ্ন প্রতিমুর্তিও বের হইয়া পড়ছে। তিরিশ লাখ শহীদের রক্ত হয়তো বৃথা হচ্ছে।
এবার আসি পাখি ড্রেস ও অন্যান্য প্রসঙ্গে। ভারতীয় একটা জনপ্রিয় সিরিয়ালের নামে একটা ড্রেস ছাড়া হইছে, তা কিনে না দেয়াতে একজন আত্মহত্যা ও একজন স্বামীকে তালাক দিয়েছে। আমাদের এই দূরাবস্থার জন্যে কাকে আপনি দায়ী করবেন? সমাজ , ডিশ, না নিজেকে? উত্তরটা আপনি ভালো বলতে পারবেন। বলতে পারেন ডিশ আসাতেই প্রবলেম, হিন্দী চ্যানেল আসাতেই প্রবলেম, আমি বলি নো বস।
প্রবলেম আমাদের, আমরা নিজেদের তুলে ধরতে জানি না , পারি না। এখনকার নাট্যনির্মাতারা এখনো হুমায়ন আহমেদ যুগে পরে আছেন। হিন্দি সিরিয়ালগুলোর দিকে লোকের ঝোক থাকবে না কেন? তারা যেভাবে টুইস্ট এবং ধারা তুলে ধরে আমরা কি এখন ওভাবে তুলে ধরতে পারছি?
সময়ের সাথে তাল মিলাতে গেলে অনেক কিছুই পরিবর্তন করা লাগে, কিন্তু আমরা বাঙ্গালিরা ঠেলা না খাইলে কেউ বুঝি না। না ঠেললে আমরা বুঝতে পারি না পিছনে কি আসছে।
এতো কথা লেখার কারন একটাই, সহমর্মিতা প্রকাশ করা ভালো, সেই সাথে নিজেদের সমস্যাগুলো নিয়ে উঠাও ভালো। আরব বিশ্ব চেয়ে চেয়ে দেখছে। বিমান গুম হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত চলছে দুর্নীতি। দামামা চারদিকেই বাজছে। এখনও সময় আছে নরেন হয় তল্পিতল্পা গুছাও, নয়তো এখনি মাঠে নেমে হাক দাও চলবে না, চলবে না এই দুর্নীতি চলবে না। ভালো ছেড়ে মন্দ হবে এ কভু মানবো না।অনেকে বলবেন মানুষতো দু’মুঠো খেয়ে বাচছে। আমি বলি, ঠিক কিন্তু আমরা কি আর একটু ভালোভাবে বাচার চেষ্টা করতে পারি না? হয়ত পারি , দরকার সচেতনতা
কেউ যদি পরামর্শ বা উপদেশ দেন দিতে পারেন, এটা সম্পূর্ণ অপরিপক্ব মস্তিস্কের লেখা, তবে কথাগুলো সত্যি, এটা মস্তিষ্ক মনে করে
ধন্যবাদ