somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আওয়ামী লীগের রাজাকার

৩০ শে জুলাই, ২০২৪ ভোর ৫:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া দেশের কোনো লিগ্যাল সিটিজেন বা জনগোষ্ঠীকে রাজাকার বলা আইনত দণ্ডনীয় - দেশের সাধারণ জনগণকে বর্তামান আওয়ামী লীগ এবং ভবিষ্যতে যে কোনো দলের কুশাসন থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সিভিল রাইট এক্টের আওতায় এ ধরনের কোনো আইন প্রণয়ন করা হউক আর এই সিভিল রাইট ভায়োলেশনের দায়ে হাসিনাকেই এই আইনের প্রথম আসামি করে মামলা করা হউক কারণ সে ছাত্রদেরকে রাজাকার সম্বোধন করে বিবৃতি দেয়ার মাধ্যমে এই নারকীয় গণহত্যার একজন সরাসরি ইন্দনদাতা ছিল ।

আওয়ামী সরকার বিগত পনের বছর দেশের মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিকভাবে অপব্যবহার করার পাশাপাশি, এই রাজাকার শব্দটিঁকেও সুপরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করে আসছে । এটা এখন তাদের একটা হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় একচ্ছত্র মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা তাদের যেমন একটা রাজনৈতিক এজেন্ডা । তেমনি রাজাকার শব্দকে তাদের বিপক্ষ শক্তিদের ঘায়েল করার জন্য প্রতিষ্ঠা করা তাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডাই মনে হয়।
তাদের মতের বিরুদ্ধে কোনো আওয়াজ তা মুক্তিযুদ্ধের সাথে কোনো সম্পর্ক থাকুক চাই না থাকুক তা দমনের পাশাপাশি মানুষগুলোকে একটা ঘৃণিত দেশবিরোধী শ্রেণীগোষ্ঠীতে ক্লাসিফাই করা এই রাজাকার বলার উদ্দেশ্য। তারাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধের আর স্বাধীনতার রেজিস্টার্ড মালিক আর সেইফগার্ড। আর বাকিরা রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী । সুতরাং দেশের স্বার্থে ওগো মারাটা বৈধ - প্রজন্মের মগজে এই ধরনের বিশ্বাস আর idology প্রতিষ্ঠা করে প্রতিটি সেক্টরে একটা চিরস্থায়ী শ্রেনী বৈষম্যের বীজ বপন করার একটা পরিকল্পিত কৌশল যা তাদেরকে দেশের সুপিরিয়র হিসাবে বিপক্ষের মানুষ আর চিন্তাকে জবাবদিহীনভাবে শোষণ, নিপীড়ন আর নির্মূল করার সুযোগ করে দিবে। এটা ধারাবাহিকভাবে কয়েক প্রজন্ম চলতে থাকলে তা সমাজে অদৃশ্য হয়ে একটা স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হবে। এটাই Structured Racism। একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধটা হয়েছিল ঠিক এই একই কারণেই । তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান আমাদেরকে তাদের অংশ হিসাবে ভাবতে পারত না , ভাবতো কলোনী হিসাবে। যেখানে মানুষ ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে কিন্তু ক্ষমতা দেওয়া হবে কি হবে না সেটা তাদের ইচ্ছা। তারা মন চাইলে পানি, বিদ্যুৎ দিবে আর বেশি কথা বললে সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে চুপচাপ বসে থাকবে যেমনটা হাসিনা আমাদের গত বছর বলেছিলেন। একাত্তরের যুদ্ধের মূল প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী, জামায়েতে ইসলাম না । সত্তরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করা শেখ মুজিবর রহমানের আওয়ামীলীগকে যখন শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা দেওয়া নিয়ে গড়িমসি চালাচ্ছিল তখন পর্যন্ত জামায়েতে ইসলাম দলটি
আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পক্ষে তাদের সমর্থন দিয়েছিল । কিন্তু পরবর্তীতে তারা তাদের অখণ্ড পাকিস্তানের মতাদর্শে বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজাকার হিসাবে অনুপ্রবেশ করে । এই দলটির ভারত পাকিস্তান বিভাজনের সময়ও অখণ্ড ভারতের পক্ষে সমর্থন ছিল । বর্তমান আওয়ামী লীগের মুখে রাজাকার শুনতে শুনতে বাংলাদেশের মানুষের পাকিস্তান আর্মির কথাই ভুলে যাওয়ার জোগাড় হইছে ।

একাত্তরের যুদ্ধের পঁচিশ বছর পর , একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে যে ছেলেটার জন্ম , যার জন্মের উপর নিজের কোনো হাত নাই , যে জন্মসূত্রে সনদপ্রাপ্ত একজন বাংলাদেশী নাগরিক , সমাজের অন্য সব মানুষের মতো সে একই ভাষায় কথা বলে, তারও সেই একই লাল সবুজ পতাকা, একই দেশের মানচিত্র এঁকে বড় হয়েছে, একই জাতীয় সংগীত গায়, পাকিস্তানে তার চোদ্দগোষ্ঠীর কেউ নাই বা কোনো প্রকার কানেকশন নাই , যার জীবনের সব অর্জনগুলা সমাজের বাকি মানুষগুলোর মতোই পরিশ্রম দিয়ে পাওয়া কিন্তু তার দাদা একাত্তরে রাজাকার ছিল বলে তাকে রাজকার বা রাজাকারের বংশধর ট্যাগ দিয়ে সমাজে আলাদা একটা ক্যাটাগরিতে ফেলে দেওয়া কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র অনুমোদন করে না বরং সে রাষ্ট্রে এই ধরনের আচরণকারীকে বলা হয় রেসিস্ট যা এক ধরনের ক্রিমিনাল আ্যক্ট। আওয়ামীলীগ দশকেরও বেশি সময় ধরে এই কাজটা আরও বাজেভাবে করে যাচ্ছে । তাদের রাজাকারের ডেফিনিশনে বা লিস্টে পড়বার জন্য কাউকে রাজাকার ছেলে বা নাতি হবারও দরকার নাই । শুধু তাদের বিপক্ষে কিছু বলাই যথেষ্ট। আর এই প্রাকটিস তাদের দলনেতা স্বয়ং হাসিনা থিকা শুরু করে মন্ত্রী, এমপি , বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, ইউনিভার্সিটি শিক্ষক, ছাত্র হয়ে টোকাই লীগ সর্বস্তরের লোকজন নির্লজ্জের মত প্রতিযোগিতা দিয়ে করে যাচ্ছে।

অন্যকে রাজাকার বলে ডাকা মানুষগুলা মানুষ হয়ে জন্ম নিয়েও বুঝে না, একটা মানুষের একাধিক দেশের নাগরিকত্ব থাকতে পারে কিন্তু মাতৃভূমি ধারণাটা মায়ের মতন যা কখনই মানুষের একটার বেশি দুইটা হয় না। আর একজন স্বাভাবিক মানুষ নিজেকে কখনও মাতৃভূমিহীন ও ভাবতে পারে না । রাজনীতি ভিন্ন হতে পারে, মত পার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু রাজাকার বলার মাধ্যমে তারা দেশের লিগ্যাল নাগরিকদের শুধু দেশপ্রেমে নিরুৎসাহিতই করছে না বরং মিথ্যা অভিযোগে তাদের জাতীয়তাকেও চ্যালেঞ্জ করতেসে। আর যেহেতু তারা আসলেই লিগ্যাল সিটিজেন সেহেতু রাজাকার ডাকা মানুষগুলাকেই তার জন্মভূমির আগাছা মনে করছে ।

রেসিজম গণতন্ত্রের হুমকি; এর লাগামহীনতায় গণতন্ত্রের মৃত্যু, শাসকগোষ্ঠীকে স্বৈরাচারী হতে কনফিডেন্ট করে তোলে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০২৪ ভোর ৫:৪৯
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×