somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরাই বাংলাদেশ

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিপ্লবী সরকার হয় নাই সেদিন । ভুল যেমন ছিল, লিমিটেশনও ছিল। ভুলটা যেমন বুঝতে পারছেন, তেমনি লিমিটেশনটাও আপনাদের বুঝা উচিত।

৫ই আগস্ট সেনাবাহিনীর অবস্থান সেদিনের মতো না থাকলে হাসিনা ভারতে উড়াল না দিয়া আপনাদের উপর দিয়া ট্যাংক চালাইতো এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকলে আপনারা নিশ্চিত বোকার স্বর্গে আছেন। বিডিআর বিদ্রোহ ভুলে গেছেন? তিন বাহিনীর প্রধানরা পুতুলের মত বসে ছিল, ট্রুপস গেটের বাইরে ট্যাংক নিয়া কমান্ডের জন্য অপেক্ষা করে আর ভিতরে ৫৭ জনকে ৪৮ ঘণ্টায় মাইরা ৪৫ জনকে আস্তে ধীরে ৭ ফুট গণ কবর খুঁড়ে , কোন কোন অফিসারের খুন করার পরও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে চেহারা অবিকৃত করে, কাউকে জ্বালায় পোড়ায় ম্যানহোল ফেলে সবার বিদ্যুৎ বন্ধ করে সবার চোখের সামনে দিয়া পালায়ে যায় আর আমরা মুন্নী সাহার গল্পঃ শুনি। কে কি করতে পারছিল সেদিন? লাশ পোড়ানোর প্রথা সেদিনই চালু হইছে। ছাত্র আন্দোলনেই এটির প্রথম ব্যবহার ছিল না! আসিফ নজরুল কেন শহীদ মিনারে গিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠনের রাস্তায় গেল না এটা তার ষড়যন্ত্র না ভেবে লিমিটেশন ভাবাটাই স্বাভাবিক হওয়া উচিৎ!

যাই হোক, ভুল হইছে এটা কনফার্ম যেভাবেই হোক। এখন নিজেদের কাউকে তার চরিত্র হনন করে, মিথ্যা কুৎসা রটায় তাকে সরানোর চেষ্টা কি এখন সেই ভুল সংশোধনের একমাত্র উপায়? আর এটা কি কোন নৈতিক উপায়? পিনাকীদা এত কিছু করার পর কেউ তার ওপর ভিডিও বানায়ে তাকে প্রমাণের চেষ্টা করলো সে পাকিস্তানের একজন এজেন্ট আর আমরা সেটাই বিশ্বাস করে তারে গালি দেওয়া শুরু করলে ব্যাপারটা কি দাড়াতো? আসিফ নজরুলের চরিত্র হনন করা ছাড়া কি বিপ্লবী সরকার গঠন না হওয়ার কাফফারা দেওয়ার আর কোন অপশন ছিল না? প্রেসিডেন্টকে যখন সরানো গেল না তখন আমাদের বুঝা উচিত এখানে সীমাবদ্ধতা আছে? এই লিমিটেশন কমাতে হবে সিস্টেমের মধ্যে নিজেদের আরো বেশি ফোর্স যুক্ত করার মাধ্যমে। সিস্টেমের বাইরে থেকে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে একে পরিবর্তনের কাজটা শেষ হয়ে গেছে ৫ই আগস্ট। এতে আমরা সফল হয়েছি । এখন যা করার করতে হবে এর ভিতরে। তা না করে আপনারা সিস্টেমের সমস্যা খুঁজে নিজেদের সিস্টেমের রিপ্লেসমেন্ট করতে চাচ্ছেন যখন সিস্টেম নিজেই পুরানো সিস্টেম চেঞ্জ করায় ব্যস্ত। কেন আপনাদের প্রতিটা নিয়োগের পর পর কথা বলা লাগবে? পছন্দ না হইলেই কেন তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামতে হবে?

অন্তত ৯০ থেকে ১৮০ কার্য দিবস এদের উপর পূর্ণআস্থা রেখে তাদেরকে তাদের মত কাজের সুযোগ দিন। কার্য দিবস বলে তো কার্য দিবসই।বছরে কার্য দিবস ২৪০ বা তার আসে পাশে হবে। কারণ যারা কাজ করতেসে তাদেরও শুক্রবার আছে, হলিডে আছে। নিয়োগের সাথে সাথে হাউ কাউ না করে, প্রতিদিন আন্দোলনে না নেমে দেখেন তারা সিগনিফিকেন্টলি কোন কোন জায়গাতে কাজ করছে । নির্দিষ্ট সময় পর পর তাদের কাজের এভালুয়েশন করুন । প্রতিটা পদে পদে আপনারা কথা বলে আপনাদের কথার ভ্যালু যেমন কমাচ্ছেন তেমনি তাদের কাজেও বাধার সৃষ্টি করছেন। কাউকে না কাউকে আপনার বিশ্বাস করা লাগবেই। দেশপ্রেম নামে কোন মন্ত্রণালয়ও নাই, আর এটা কোন স্কিল ও না যে এটা ব্যবহার করে এডমিনিস্ট্রেশনের অফিসিয়াল মিটিং, ফাইন্যান্সের ক্যালকুলেশন করতে পারবেন!

হাসিনা চলে গেছে । আপনাদের আসল প্রতিবন্ধকতা রিসলভ হয়ে গেছে। এখন আপনাদের শক্তি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। সরকারের ২টা নিয়োগ আপনাদের পছন্দ হয় নাই বাট সেই দুইটা এমন না যে হাসিনার সময় আন্দোলনের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বা কারো বুকে গুলি চালাইছিল। তারা হয়তো সে ভাবে আপনাদের পক্ষে সরব ছিল না। কারো কারো ব্যাপার হয়ত আপনারা নিশ্চিত না বা সেভাবে লক্ষ্য ও করেন নাই। ভালো মত যাচাই করে নিশ্চিত হউন। এখন আপনাদের সেই সময় না যে তাদের পাঁচ বছর আগে কি করছে সেটা দেখে তার নিয়োগ সঠিক না বেঠিক এই নিয়ে পিছে লাগবেন। বরং কারো ব্যাপারে শতভাগ খুশি হতে না পারলে কনস্ট্রাকটিভ ওয়েতে ক্রিটিক্স করে নিয়োগকৃতদের সতর্ক করে তাদেরকে ওয়েলকাম করেন । সরকারকে আপনাদের কনসার্ন জানিয়ে ওয়েলকাম করে বলে দেন, আমরা আপনাদের এই ২টা মেনে নিলাম । কিন্তু পরের ৪টা নিয়োগে পিনাকী, ফরহাদ মাজহার, আসাদুজ্জাম ফুয়াদ, সলিমুল্লাহ স্যারকে দেখার অগ্রিম দাবি দিয়ে রাখেন । নিয়োগের জায়গার তো আর অভাব নাই। তাদের জন্য বেস্ট ম্যাচ করা ৪টা জায়গা বের করে সরকারকে সময় বেঁধে দেন। হয়ে যাওয়া নিয়োগ নিয়া হাঙ্গামা না করে সবাইকে অভিনন্দন জানান, তাদের ভালো কাজের প্রশংসা করে কনফিডেন্ট বাড়ান। নিজেদের সিস্টেমকে স্ট্রং করুন। ইলিয়াসের মত লোকজনকে বুঝান আপনাদের উদ্দেশ্য কি। তাকে সমালোচনা কিভাবে করতে হবে সেটা বুঝতে সহায়তা করুন। কথায় কথায় রিয়েক্ট করে পাবলিক ভিডিও না বানিয়ে আগে সরকারের কাছে তার বক্তব্য রিভিউ , ফিডব্যাক নিতে বলেন। সে সব ব্যাপারে পন্ডিত না।
মনে রাখতে হবে মিথ্যা, অপপ্রচার ,শর্ট কাট দিয়া কখনও স্থায়ী ভালো কিছু পাওয়া যায় না। আর নিজেদের অবস্থানটা সত্যের সাথে আছে এ ব্যাপারে কোন কম্প্রোমাইজ নাই - তা মাথায় থাকা চাই।

এখন শত্রু বাড়ানোর সময় নয়। বন্ধু বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর সময়। রেকনসিলিয়েশনের মাধ্যমে যত বেশি মানুষকে নিজেদের মধ্যে ঢুকানো যায়। আপনারা সাকিব মাশরাফির পাছায় লাইগা আছেন কেন? তাদের অপরাধ স্বীকার করার ক্ষেত্র তৈরি করে দিন যেখানে তারা এসে সরি বলতে পারবে। সরি বলার পর তাদের বুকে টেনে নিন। নিজেদের আপন করে নিন। তাদেরকে ভুল সংশোধনের সুযোগ দিন। ক্ষমা করার মাধ্যমে নিজের উদারতা দেখান যেন তাদের নিজেদের মধ্যে তাদের করা ভুলের রিয়ালাইজেশন আসে আর আপনারাই তাদের প্রকৃত ফ্যান আর সঠিক সমর্থনের জায়গা এটা বুঝার জন্য কনফিডেন্ট হয়ে নিজ থেকে আপনাদের সাথে ইনভলভ হয়। এতে আপনাদের শক্তি যেমন বাড়বে, বিতাড়িত ফ্যাসিস্টদের শক্তি কমবে। ফিরে আসার আশা ফিকে হবে তত বেশি। মাশরাফির মতো যারা আছে তাদেরকে খুঁজে খুঁজে আপনাদের প্লাটফর্মে নিয়ে আসেন। শাহরিয়ার নাজিম জয়, সাকিবের মত সেলিব্রেটিদের নিজেদের মধ্যে এনে শক্তি বাড়ান।
কে কবে জয় বাংলা বলছে আর হাসিনার বন্দনা করছে সে ইতিহাস খুজা বন্ধ করেন। দেখেন জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ আর অগাস্টের প্রথম সপ্তাহে তাদের কি অবস্থান ছিল। যারা আপনাদের পক্ষে ছিল তাদের বন্ধু মনে করে সাথে নিয়ে আগে বাড়েন। এইটা দেশ প্রেম পরিমাপের কোন প্রতিযোগিতা লাগে নাই যে কার প্রেম কম আর কারটা কত বেশি সেটা হিসাব নিকাশ করতে হবে। আন্দোলনে কম কন্ট্রিবিউশন করা একজন মানুষ যদি এখন অনেক বেশি কন্ট্রিবিউশন করার সুযোগ থাকে তাকে পিঞ্চ না করে উৎসাহিত করেন। সস্তা জনপ্রিয়তা আর রসালো ভিডিও দেইখা মূল্যায়ন করার অভ্যাসটা আল্লাহর ওয়াস্তে বাদ দেন। বাইরে থেকে সিস্টেম মডিফাই করার চেষ্টা না করে, একে ডেভেলপ করার জন্য কথা বলুন, নুতুন নুতুন কার্যকরী ফিচার যুক্ত করার বুদ্ধি দেন!

পিনাকীদা তার আসল কাজটা করে ফেলেছে । এখন তার প্রতিদিন একটা করে ভিডিও তো দরকার না রে ভাই। কেন তার মেধা আর কণ্ঠের শক্তি অপচয় করায় তাকে উৎসাহিত করছেন। সে এখন ত্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে কথা বলবে সরকারের সিস্টেম অপারেটরদের সাথে। আমার আপনার কাছে হাই হেলো দিয়ে কাজ কতটুকু আগাইলো সেটা জানাবে।
পিনাকীদা, আসিফ নজরুলকে একে অপরের প্রতিপক্ষ না বানিয়ে দুইজনের দূরত্ব কমিয়ে এক হয়ে যেন কাজ করে সেই আন্দোলন করেন । বিপ্লব, অভ্যুত্থান প্রতিদিন বেলায় বেলায় ঘটানোর মতো কোন ব্যাপার না। ঘটানোর পর একে আরো শক্তিশালী করে কত কম লোকসান দিয়ে কত বেশি সমঝোতা করে মূল লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যায় সেটাই প্ল্যান হওয়া উচিত। ভুল থাকবেই। একে যতটা মিনিমাইজ করা যায়। হুদাই শত্রু বাড়ানোর প্রচেষ্টা বন্ধ করুন। নয়তো দিন শেষে আম ছালা দুইটাই হারাইবেন!

শত্রু আইডেন্টিফাই করেন মিত্র বাড়ানোর উদ্দেশ্য আর মানসিকতা নিয়া । শত্রু বাড়ানো মূল ফোকাস হওয়া উচিত না। মিত্র বাড়লে শত্রু অটোমেটিক কমবেই। আর চিহ্নিত শত্রুদের বিচারের মাধ্যমে এলেমিনেট করে সবাইকে বন্ধু বানানোই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত যারা সবাই একসাথে বলবে - "আমরাই বাংলাদেশ" ✊

সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:০২
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×