[বি:দ্র: সময় স্বল্পতার কারণে গুছিয়ে লিখতে পারিনি। সুযোগ পেলে এডিট করে দেব। ভূল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে নিবেন]
সময় :: ৩ দিন ২ রাত
বাজেট :: ১০ হাজার রুপি (জনপ্রতি ১৫০ ডলার করে নিলেই চলবে) ৩-৪ জনের গ্রুপ।
রিজার্ভ গাড়ী :: প্রথম দিন : ডাউকি থেকে শিলং পুলিশ বাজার ১৫০০ রুপি। (ড্রাইভার রোশন - +919872088189 (ডাউকি বর্ডার)
দ্বিতীয় দিন : শিলং – গোয়াহাটি, আসাম (কামরুপ – কামাক্ষা মন্দির) – যাওয়া আসা ৩৫০০-৪০০০ রুপি
তৃতীয় দিন : শিলং থেকে গাড়ী রিজার্ভ করবেন ডাউকি বর্ডার পর্যন্ত। ভাড়া নিবে ৩৫০০-৪০০০ রুপি। রোড পরিকল্পনা হবে। শিলং – চেরাপুঞ্জি – মাউলিননং ভিলেজ – ডাউকি বর্ডার। ড্রাইভার উত্তম দাদা +919863111973 (শিলং)
(সাথে বলে নিবেন, যাওয়ার পথে শিলং ভিউ পয়েন্ট, সেভেন সিস্টার ফলস, মাউসুমি ক্যাভ, এলিভেন ফলস চেরাপুঞ্জি, লিভিং রোড ব্রীজ, মাউলিননং ভিলেজ হয়ে ডাউকি বর্ডার)
ট্যুরিষ্ট পয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
ট্যুরিষ্ট পয়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
ভ্রমণের কথা::
আসামের কামরুপ-কামাক্ষা নিয়ে কল্প কাহিনীর শেষ নেই। সেই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি, কামরুপ-কামাক্ষা গেলে নাকি মানুষ আর ফিরে আসতে পারে না। বিশেষ করে পুরুষ মানুষ যদি যায়, তাহলে সেখানখার মহিলারা নাকি যাদু টোনা করে রেখে দেয়। আমাদের দেশে যত প্রকার আজবগুজি যাদু টোনা আছে সবই নাকি কামরুপ-কামাক্ষা থেকে আমদানী হয়। আসলে সবই কল্প কাহিনী। বর্তমানে যার কোনো অস্থিত্বই নেই। তবে এটা সত্যি কামাক্ষা মন্দিরটি সত্যিই অসাধারণ।
ডাউকি ব্রীজ (যেটা আমাদের জাফলং থেকে দেখা যায়) অতিক্রম করার পর পাড়ারের কুল ঘেষে যখন আপনার গাড়ী ছুটবে শিলংয়ের পথে তখন চোখের পলক ফেলার ইচ্ছে হবে না। মন চাইবে সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকি প্রকৃতির এই অপরুপ রুপের দিকে। লাল পাহাড়, সাদা পাহাড়, কালো পাহাড়, সবুজ পাহাড়, পাথরের পাহাড় কি নেই ডাউকি থেকে শিলং যাবার পথে। বিশেষ করে পাইনোরসালা (Pynursla) ভিউ পয়েন্ট অসাধারণ একটা জায়গা।
কিভাবে যাবেন :- ঢাকা থেকে সিলেট বাস, ট্রেন বিমান যেকোনো ভাবে যেতে পারবেন (তবে খরচ কমাতে চাইলে বাস কিংবা ট্রেন এ যাওয়াই ভালো)। বাস ভাড়া জনপ্রতি ৪৭০ টাকা (ইউনিক, শ্যামলী, হানিফ), নামবেন হুমায়ুন রশিদ চত্ত্বরে অথবা কদমতলী বাস টার্মিনালে। ট্রেন ভাড়া ৩৪০ টাকা শোভন চেয়ার (উপবন এক্সপ্রেস রাত নটায় ছাড়ে কমলাপুর ষ্টেশন থেকে)। বাস টার্মিনাল কিংবা রেল ষ্ট্রেশন থেকে সরাসরি সিএনজি গাড়ী রিজার্ভ করে নেন তামাবিল বর্ডার পর্যন্ত। ভাড়া নিবেন ৬০০-৭০০ টাকা (দরদাম করে নিবেন)।
ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার ক্রসিং : তামাবিল বর্ডারে নামার পর হাতের ডান পাশে আছে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন অফিস। এখানে প্রথমে একটি ডিপার্টসার ফরম পুরণ করতে হবে তারপর ভেতরে ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে পাসপোর্ট দিয়ে বাহিরে একটু অপেক্ষা করুণ, কাজ শেষ হলে পাসপোর্ট নেবার জন্য কল করবে। পাসপোর্ট হাতে নিয়ে যাবেন কাস্টমস রুমে, এখানে ট্রাভেল ট্যাক্সের কাগজ দিবেন, তারা এন্ট্রি করে রাখবে। কাজ শেষ হলে রুম থেকে বের হয়ে আপনে ডাউকি বর্ডার মুখি হলেন, ডাউকি বর্ডারে প্রবেশ করার আগে বাংলাদেশ সীমান্তে সেনাবাহিনীর একটি চেকিং রুম আছে, এখানে আপনার পাসপোর্ট এন্ট্রি করিয়ে ডাউকি বর্ডারে প্রবেশ করুন। চাইলে দুই দেশের সীমান্তে দাঁড়িয়ে কয়েকটি সেলফি তুলে নিতে পারেন।ইন্ডিয়ান সীমান্তে পৌছার পর বিডিআর এর চেকিং রুম আছে, এখানে পাসপোর্ট দেখিয়ে হাটা শুরু করুন ইমিগ্রেশন রুমের দিকে। চেকপোষ্ট থেকে সামান্য একটু দুরে। ডাউকি ইমিগ্রেশন রুমে প্রবেশ করে একটি এ্যারাইভাল ফরম নিবেন, এটা ফিলাপ করে পাসপোর্টসহ ইমিগ্রেশন অফিসারের কাছে দিবেন।এখান থেকে এ্যারাইভাল সীল নিয়ে রুম থেকে বের হবার আগে দরজার বা পাশে চেকিং বেল্টের পাশে আরেকটি কাউন্টার আছে এখান থেকে আপনার পাসপোর্ট এন্ট্রি করিয়ে নিতে ভূলবে না। সব কাজ শেষ করে ইমিগ্রেশন রুম থেকে বের হয়ে মেইন রোডে আসলেই অসংখ্য ট্যাক্সি ড্রাইভার পাবেন। দরদাম করে শিলং পুলিশ বাজার পর্যন্ত রিজার্ভ করে নেন। ভাড়া পড়বে ১৫০০-২০০০ রুপি।আমি নিয়েছিলাম ১৫০০ রুপিতে।
কোথায় থাকবেন :: শিলং পুলিশ বাজারে অনেক হোটেল আছে। ট্যুরিষ্টদের জন্য পুলিশ বাজারেই থাকা ভালো। আমরা ছিলাম স্টে ইন গেষ্ট হাউজে (Stay in Guest House)ভাড়া ২৫০০ রুপি (৩ জন), এটার পাশেই আছে জারা রিসেডেন্সি, হ্যারিটেজ হোটেল। হ্যারিটেজ হোটেল এর বিপরীত পাশেই আছে মানি এক্সচেঞ্জ। এখান থেকে আপনার ডলার ভাংগিয়ে রুপি করে নিতে পারবেন।
দিনে দিনে গোয়াহাটি (আসাম) কামরুপ কামাক্ষা মন্দির ভ্রমণ :: দিনে দিনেই ঘুরে আসতে পারবেন, গোয়াহাটি, কামরুপ-কামাক্ষা মন্দির।যদি ৩-৪ জনের গ্রুপ হয়, তাহলে পুলিশ বাজার থেকে ট্যাক্সি রিজার্ভ করেই নিয়ে যাওয়া ভালো হবে। ভাড়া নিবে ৩০০০-৩৫০০ রুপি। এছাড়াও মেঘালয় সরকারী বাস কোম্পানী আছে, শিলং থেকে গোয়াহাটি পর্যন্ত ভাড়া নিবে ১৩০ রুপি করে। সুমো জীপে কিংবা কারে গেলে ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৪০০ রুপি করে।শিলং থেকে গোয়াহাটি যাওয়া আসার সময় হাইওয়ের পাশেই উমিয়াম লেক (Umiam Lake). যাওয়ার সময়ই একটু সময় দেখে যেতে পারেন। কারণ গোয়াহাটি থেকে আসার সময় সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে, তাই লেকের ভিউটা ভালো ভাবে না ও দেখা যেতে পারে। শিলং থেকে গোয়াহাটি যাবার সময় উমিয়াম লেক এর পরই শুরু হয় শিলং গোয়াহাটি হাইওয়ে। প্রাকৃতিক শোভায় ভরপুর এই হাইওয়েতে মনের অজান্তেই গুণগুনিয়ে গাইতে ইচ্ছে হয়, এই পথ যদি শেষ না হয়…..।
আপনার ভ্রমণ নিরাপদ ও আনন্দময় হউক।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ২:০৭