somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উত্তরণের পথে

২৯ শে অক্টোবর, ২০১০ রাত ১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমাদের শহরে নতুনত্ব বলতে কিছুই নেই। এখানে রাতের পর যেন রাত আসে। দিনের আলো দৈবাৎ আসতে চাইলোও শহরবাসীর প্রতিরোধের মুখে কয়েক শত ক্রশ দূরেই ঘুরে ফিরে অবস্থান করে। সর্বদা হৈ হট্টগোল লেগে থাকে এই শহরে। আমাদের আছে মানিব্যাগ ভর্ত্তি টাকা, আর অট্টালিকা ভরা ভালবাসা। অট্টালিকার পর অট্টালিকা নির্মাণ দ্বারাই আমরা আমাদের ভালবাসা প্রকাশ করি। বিভিন্ন উৎসবে নতুন অট্টালিকা কেনার হিড়িক পড়ে। তখন আমরা একে অপরকে নতুন নতুন অট্টালিকা উপহার দেই। বিনিময়ে সংবাদপত্রের পাতা ভরে উঠে আসা খবরের মাধ্যমে আমাদের মানমর্যাদা বৃদ্ধি করি। নচেৎ শহরের কোন নামী ব্যান্ডপার্টি দ্বারা আমাদের ভালবাসার খবর চাউর করি। আমরা আমাদের নিবাসের এক টুকরো সিমেন্টের দলা খসে পড়লে হাহাকার করে উঠি। গাড়ির চাকায় দু'পেয়ে জীবন লেপ্টে গেলে দেখেও না দেখার ভান করি।

আমাদের শহরে দুই ধরনের অট্টালিকা চোখে পড়ে। একটা হলো অতি দামী সিরামিক্সের টাইলস, ইট, কাঠ, পাথরে মোড়ানো আর একটা হলো টিনের চালা আর বাঁশের বেড়া নির্মিত কূঁড়েঘর। কূঁড়েঘরওয়ালা বাড়ীগুলো অপেক্ষাকৃত নিচু অবস্থানে হওয়ায় আমরা সহজেই সেই বাড়ি গুলোতে থুথু ছিটাতে পারি। তাদের বাড়িঘরে থুথু ছিটিয়ে আমাদের আনন্দানুভূতি প্রকাশ করি। তাই যখনই ইচ্ছে হয় আমরা থুথু ছিটাই এবং আমাদের সন্তানদেরকেও থুথু ছিটানো শেখাই। সন্তানরা কখনও কখনও ভুলে আকাশপানে থুথু ছিটায়। নিজের গাঁয়ে পড়লে তারা অট্টহাসিতে গড়াগড়ি খায় আর আমরা তাদেরকে কোলে নিয়ে উল্লাসে ফেটে পরি। আবার ইচ্ছে হলে আমাদের বাড়ির ময়লাগুলো নিক্ষেপ করেও হাসিতে গড়াগড়ি দেই। নিচ থেকে অনেকেরই হা করা মূখ দেখা যায় বৈকি। কিন্তু অতদূর থেকে আমরা তাদের কন্ঠস্বর শুনতে পারিনা। শোনার ইচ্ছেও হয় না কখনও।

আমরা একটা বিষয় বেশ রপ্ত করেছি। আমাদের খাদ্যাভাসে লাল, নীল, সবুজ, হলুদ প্রভৃতি রঙের কাগজ ঢুকে পড়েছে। সেগুলো আমরা নির্দ্বিধায় গপাগপ খেয়ে যাই। কারণে অকারণে যখন খুশী তখন খেতে থাকি। অবাক করা ব্যাপার হলো, এটি খেতে পানীয় জাতীয় কিছু লাগেনা। তবে আমাদের ক্ষিধা কখনো মিটেনা, বরঞ্চ বাড়তেই থাকে।

আমরা বিশেষ এক চোষক যন্ত্র আবিস্কার করেছি। এই যন্ত্রটার বিশেষত্ব হচ্ছে-এটা দিয়ে অনায়াসেই কূঁড়েঘরে বসবাসরত মানুষগুলোর রক্ত শোষণ করতে পারি। এই চোষক যন্ত্রটার দৈর্ঘ্য ইচ্ছেমত কয়েকশত কিলোমিটার বাড়ানো যায়। যখন খুশী তখন আমরা চোষক যন্ত্র দিয়ে কূঁড়েঘরের লোকদের রক্ত শোষণ করি। তাদের রক্ত প্রায় শেষের দিকে। দিনে দিনে তাদের রক্তের ক্ষারতা বেড়েই চলেছে। তাই আমরা শহর ছেড়ে দূর বহুদূরে আমাদের যন্ত্রটির চোষক অংশ প্রেরণ করি আর রক্ত শোষণ করি। নিয়মিত রক্ত শোষণ না করলে আমাদের বদহজম দেখা দেয়। রক্ত শোষণ করতে বাঁধা এলে আমরা বিশেষ সিগনাল পাঠাই। ও প্রান্ত থেকে ইথার মারফত কিছু ভিডিও ফুটেজ আমাদের চোষক যন্ত্রের মনিটরে ভেসে উঠে। তাতে দেখা যায় অনেক কূঁড়েঘরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। কেউ কূঁড়েঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। কিছু শিশু ও মহিলা, বয়োঃবৃদ্ধ মানুষ আগুনে পুরে মরছে। আর কিছু বিবস্ত্র নারী দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করছে। অথবা গাছের ডালে বিবস্ত্র কোন যুবকের লাশ ঝুলছে। আমরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ি। কারণ এরপর আমাদের চোষক যন্ত্রের লাইন ক্লিয়ার হয়ে যায়।

যেহেতু আমাদের মাঝে অট্টালিকা বানানোর প্রতিযোগীতা বিদ্যমান সেহেতু আমরা কতগুলো কমিউনিটিতে বিভক্ত। আমাদের প্রত্যেকটি অট্টালিকায় বিশালাকার পর্দা সমৃদ্ধ টিভি টানানো আছে। সেখানে আমরা শহরে অনুষ্ঠিতব্য বিভিন্ন জাকালো অনুষ্ঠানগুলো উপভোগ করি। টিভিতে বেশীর ভাগ সময় একটি কার্টুনই চলে। একজন বাঁচাল অপ্রকৃতিস্থ লোক নিয়মিত মাইক্রোফোনে বক্তৃতা দিয়ে যায়। তাকে ঘিরে থাকা স্ব-কমিউনিটির কয়েকশত লোক তার বক্তৃতাকে স্বাগত জানায়। এই কার্টুনটাই আমরা নিয়মিত দেখি। অন্য কোন কমিউনিটির কার্টুন আমরা দেখতে চাই না। ভুলক্রমে টিভি অপারেটর অন্য কোন কমিউনিটির কার্টুন প্রচার করে থাকলে তার গলা কেটে আমরা রক্ত পান করি। এর পরপরই নতুন একজন অপারেটর নিযুক্ত হয়।

আমাদের সন্তানেরা কম্পিউটারে সারাদিন আজগুবী সব খেলাধূলা করে। যেসব খেলাধূলার কোন মানে আমরা খূঁজে পাইনা। কম্পিউটার গেমসের বাইরে তাদেরকে আর একটা খেলায় অভ্যস্ত করি। তা হলো দিনের বেলা কয়েক বস্তা পুস্তক কাঁধে বহন করা। বহন করতে না পারলে তাদের পায়ে দঁড়ি বেঁধে ঘরের কোনে আটকিয়ে রাখি। অথবা কোন ভৃত্য নিয়োগ করি বস্তা গুলো কিভাবে বহন করতে হবে তা শিখিয়ে দেয়ার জন্য। ভৃত্য, পুস্তকের পাতা দিয়ে বিভিন্ন প্রকার খাবার তৈরী করে আর আমাদের শিশুরা সেগুলো গোগ্রাসে গিলতে থাকে। তাদের খাওয়া দেখে আমরা খুশীতে আত্মহারা হয়ে যাই। তারা স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠলে ভৃত্যকে মোটা অংকের বখশিস দেই। স্বাস্থ্য খারাপ হলে পুরাতন ভৃত্যকে তাড়িয়ে নতুন ভৃত্য নিয়োগ দেই। কম্পিউটার গেমস খেলতে খেলতে আমাদের শিশুদের চোখে এক ধরনের চশমা উঠে যায়। যে চশমা দিয়ে তারা আমাদেরকে ঠিক চিনতে পারেনা। আমরাও ঐ চশমার কাঁচ ভেদ করে তাদের চোখ ঠিকমত দেখতে পারিনা।

এখানে দিবা-রাত্রীর ফারাক যেহেতু চোখে পড়ে না। সেহেতু সাদা-কালোর পার্থক্য তেমন বুঝতে পারিনা। কিন্তু কিছুদিন আগের একটি ঘটনায় জনমনে কিছুটা হলেও দাগ কেটে গেছে। সেদিন শহরের মূল রাস্তার ফটকে এক আগুন্তুককে আসতে দেখে আমরা অস্থির হয়ে পড়ি। এর আগে এরকম আগন্তুক কখনোই চোখে পড়েনি। লম্বায় সে যেন আমাদের অট্টালিকাগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে। সাদা আলখেল্লা পরিহিত আগন্তুকের কপালে একটি মশাল অঙ্কিত উল্কি থেকে এক ধরনের আলো বিচ্ছুরিত হতে থাকে। এই আলোতে শহরবাসীর চোখ যেন ঝলসে যাওয়া শুরু করলো। সবার আকুতি শুনে শহরের মেয়র আগন্তুককে কতল করার ঘোষণা দিলেন। কূখ্যাত খুনীরা আড়মোরা ভেঙ্গে উঠে লেগে পড়লো আগন্তুককে বধ করার জন্য। শেষ পর্যন্ত আগন্তুককে কতল করা হলো। আর দূরে, শহর ছেড়ে বহুদূরে মৃতদেহটি রেখে আসা হলো। শহরে এরপর শহরবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। কিন্তু সেই উল্কি অঙ্কিত মশালটি খুঁজে পাওয়া গেলনা।

এইতো কিছুদিন আগে শহরে আমাদের এক নিকটাত্মীয় ইহধাম ত্যাগ করলো। মারা যাওয়ার খবর শুনে আমরা দুই ঘন্টার মধ্যে মৃত আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছলাম। এই সামান্য দুই ঘন্টা আমরা মুখমন্ডলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আনা প্রসিদ্ধ প্রসাধন ছিটিয়ে নিয়েছিলাম। মুখাবয়বের প্রসাধন রক্ষা করে যারযার সাধ্যমত আধা ঘন্টার মত কাঁদলাম। এরপর কিছু স্বর্গীয় উক্তি পাঠ করে মৃত ব্যক্তির সৎকার সম্পন্ন করলাম। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনা মিঠা মন্ডাই খেলাম। মৃত আত্মীয়ের বংশ গৌরব নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু করলাম আর আগত অতিথি বৃন্দের পরিপাটির বিষয় নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করতে করতে যার যার অট্টালিকায় চলে আসলাম।

শহরের কূঁড়েঘরবাসীরা আমাদেরকে যথেষ্ঠ সমীহ করে চলে। কারণ তারা আমাদেরই কল্যাণে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে বিশেষ বিশেষ খাবার উপভোগ করে থাকে। তারা পুঁথিমালা জপে এবং বিভিন্ন পুজো অর্চনা করে আমাদের সকল অমঙ্গল দূর করে থাকেন। যাওয়ার সময় মঙ্গলঘাট থেকে কেনা পায়জামা-পাঞ্জাবী, শাড়ী অথবা ধূতি নিয়ে হাসিমূখে ফেরত যান। এই তো সেদিন আমাদের সেই আত্মীয় হারানো প্রতিবেশীর বাড়ীতে বিশালাকার একটা অনুষ্ঠান হয়ে গেল। তাদের মৃত বাবা মায়ের টানানো ছবি ওয়াল থেকে পড়ে ফ্রেমের গ্লাস ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। আর সঙ্গে সঙ্গে একটি টিকটিকির মৃত্যু ঘটে। এরপর কয়েকদিন ঐ অট্টালিকায় তাদের বাবা মায়ের প্রেতাত্মা ঘুরাফিরা করে। একশতটি গরু আর দুইশতটি খাসি জবাই করে কূঁড়েঘরবাসীদের খাওয়ানো হয়। সাথে পুরো শহরবাসীও সারাদিন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে থাকেন। এই অনুষ্ঠানটি সরাসরি আমাদের টিভি পর্দায় দেখানো হয়। আমাদের শহর ছাড়াও অন্য এলাকার লোকজনও অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।

শহরের মেয়রকে খুশী করা ছাড়াও বিশেষ বিশেষ দিনে আমরা পার্টির ডাক দেই। পার্টিটি একটি সুরম্য অট্টালিকার মধ্যে অনেক জাকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ঐ পার্টিতে কোন প্রকার নিরামিষ নিষিদ্ধ। যারযার বাসার ফ্রিজ থেকে একপ্রকার টাটকা আমিষ বিভিন্ন প্রকার মশলা দিয়ে অতিশয় সুস্বাদু করে রান্না করে নিয়ে আসি। আমরা আমাদের আমিষ গুলো লুটোপুটি করে কয়েকদিন ধরে ভাগাভাগি করে খাই। অতিরিক্ত বা উচ্ছিষ্ট আমিষে পচন ধরে নষ্ট হয়ে যায়। অনেক সময় ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়াও দেখা দেয় পুরো পার্টিরুম জুড়ে। ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়াগুলো অতি দক্ষ সুইপার দ্বারা বিশেষ এক পরিস্কারকের মাধ্যমে পরিস্কার করা হয়। এই ময়লাগুলো সুওয়ারেজ লাইন হয়ে যাওয়ার সময় কূঁড়েঘরওয়ালা বাড়িতে কিছু গন্ধ লেগে যায়। তারা দীর্ঘদিন নাক চেপে বসবাস করে। আর আমাদের দিকে চেয়ে হাত-পা ছোড়ে।

দীর্ঘদিন ধরে আমরা শ্বাসকষ্টে ভুগছিলাম। কারণ বাতাসের অক্সিজেন অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পাচ্ছে। আজকে আকস্মিকভাবে শহরের টিভিগুলোতে একটি জরুরী বার্তা ঘোষিত হতে থাকে। আবহাওয়া কেন্দ্র জানাচ্ছে আমাদের শহরের অক্সিজেন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। আর মাত্র ছয় ঘন্টা আমরা বাঁচতে পারবো। আমাদের যত দ্রুত সম্ভব শহর ছেড়ে পালাতে হবে। শহরে বড় বড় দ্রুতযান বাস গুলো নিয়ে আমরা বেড়িয়ে পড়লাম। সামনের বাস গুলোতে শিশুদেরকে উঠিয়ে দিয়ে আমরা পেছনের বাসে আসীন হলাম। ততক্ষণে আমাদের তিনঘন্টা পেরিয়ে গেছে। রাস্তায় গাড়ীগুলো অতি দ্রুত চলতে গিয়ে বিশাল এক জ্যাম লেগে গেছে। শহর কেন্দ্রেই আমাদের বাস গুলো একঘন্টা আটকে থাকলো।

শহর ছেড়ে এখন আমাদের গাড়ী গুলো উপশহরে এসে পৌঁছেছে। আমাদের হাতে আর দুই ঘন্টা সময়। এর মধ্যে দুইশত কিলোমিটার পেরিয়ে যেতে হবে। একশ কিলোমিটার বেগে গাড়ী এগিয়ে চলছে। সমান তালে বাড়ছে আমাদের শ্বাসকষ্ট। আমাদের ড্রাইভারদের মাঝে প্রতিযোগিতা লেগে গেছে। বেগতিক চালানো শুরু করেছে তারা। ইতিমধ্যে কয়েকটি গাড়ী একসিডেন্ট করে ফেললো। কতগুলোর আবার চাকা ফেটে গেল। আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কেউ মারা গেল, কেউবা হলো রক্তাক্ত। দীর্ঘ ধকলের পর আমরা ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছি। তাই একে অন্যের রক্ত পান করা শুরু করলাম। কয়েকজন আবার ড্রাইভারের রক্ত পান করা শুরু করলো। ড্রাইভার বাঁধা দেয়াতে আমরা উত্তেজিত হয়ে পড়লাম। এবার সবাই মিলে তাকে অলীক ভঙ্গিতে কতগুলো বর্জ্য ছুড়ে দিলাম। সে সেগুলো অনীহা সত্ত্বেও গিলে খেল। এরপর আমাদের গাড়ী এলোপাথারীভাবে সামনে এগিয়ে যেতে লাগলো।

শিশুদের গাড়ীতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় আমাদের গাড়ীতে একটি শিশু উঠে পড়েছে। সে সম্ভবত সেই কূঁড়েঘরবাসীদের কারো সন্তান হবে। কারণ তার শরীর প্রায় রক্তশূন্য আর দেখতে একটু অদ্ভুত বেশের। হঠাৎ করে আমাদের গাড়ী সামনের গাড়ীর সাথে ধাক্কা খেল। এই সময় প্রচন্ড ঝাঁকুনি সহ্য করতে না পেরে শিশুটি বমি করে দিল। বমির গন্ধ আমাদের কাছে অসহ্য হয়ে উঠলো, শ্বাসকষ্ট যেন আরও বাড়তে থাকলো। তাকে দ্রুত সর্বশেষ শিশুদের গাড়ীটিতে উঠিয়ে দেয়া হলো। এদিকে সময় প্রায় শেষের দিকে। ঐ তো আমরা কাঙ্খিত শহরে এসে পৌঁছেছি। মাঝখানে শুধু একটি পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রীজ। এরকম শহর আমরা দীর্ঘদিন দেখিনা। সবুজের সমারোহ শহরটিকে করেছে মায়াবী অচিনপুরী। বিভিন্ন প্রজাতির ফুলে ফলে শোভিত হয়ে আকর্ষন আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। গাছে গাছে পাখি ডাকছে, ফুলে ফুলে মৌমাছি আর প্রজাপতিরা উড়ে বেরাচ্ছে। দূর থেকে তাই মনে হচ্ছে! আমাদের মনে পড়ে গেল! এরকম শহরের মত জায়গাতেই তো আমাদের শিশুরা কম্পিউটার গেম খেলতো।

শিশুদের শেষ গাড়ীটি ঐ শহরে পৌঁছে গেছে। কিন্তু আমাদের গাড়ী আর এগোচ্ছে না। দূর থেকে অদ্ভুত গড়নের সেই শিশুটিকে দেখা যাচ্ছে। অবাক করা কান্ড! আমাদের শহরে আসা সেই সাদা পোশাকধারী আগন্তুকটিকে দেখা যায়! শিশুটি ঐ আগন্তুকের কপালে মশাল অঙ্কিত উল্কিটি লাগিয়ে দিল। এরপর এক রহস্যময় আলো ছড়িয়ে পড়লো। যে আলোতে শিশুরা হয়ে উঠলো প্রাণবন্ত। আর আমাদের চোখ ঝলসে যেতে শুরু করলো। আকস্মিকভাবে একমাত্র যোগাযোগ রক্ষাকারী ব্রীজটি নদীতে ভেঙ্গে পড়লো।


উৎসর্গঃ হাসান মাহবুব
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১০:৩৬
৯৫টি মন্তব্য ৯৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×