আজ থেকে প্রায় ৬/৭ বছর আগের ঘটনা। আমি যাত্রাবাড়ীর কাছে একটি বাজারের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম । সেখানে রাস্তার পাশে একটি মাংসের দোকানে দেখলাম পাশাপাশি দুইটি গরু বেঁধে রাখা আছে । আরেকটি গরুকে তাদের সামনেই জবাই করে চামড়া সরিয়ে নেয়া হচ্ছে । গরুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে বিভিন্ন অংশ আলাদা করা হচ্ছে । ফ্যাল ফ্যালল করে তাকিয়ে সেই দৃশ্য দেখছে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা গরু দুটি। দেখে আমার খুবই খারাপ লাগলো । গরু হলেও তারাও কিন্তু প্রাণী। তাদের ও অনুভূতি আছে।
তারা হয়তো ভেতরে ভেতরে আতঙ্কে থর থর করে কাঁপছিল । আর ভাবছিল, একটু পরেই তাদের ও পালা আসবে । চকচকে ধারালো ছুরি দিয়ে তাদের গলা কেটে নেওয়া হবে । তাদের চামড়া খুলে ফেলা হবে । কুপিয়ে আলাদা করা হবে পুরো শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ।।
প্রকাশ্যে সাধারন মানুষের চোখের সামনে পশু জবাই করলে সেটা মানুষের মনে দারুণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শিশুদের মনের খুবই প্রভাব ফেলে। বারবার এই দৃশ্য দেখলে তাদের হৃদয়ের সংবেদনশীলতা ধীরে ধীরে কমে যাবে। তাদের মন থেকে মায়া মমতা ও উঠে যেতে থাকবে। বড় হতে হতে তাদের মাঝে নিশংসতা ও বাড়বে।
সারা পৃথিবীর কোথাও বাংলাদেশের মতো এমন প্রকাশ্যে পশু জবাই করার দৃশ্য চোখে পড়বে না। কুরবানীর সময় তো একটা মহা উল্লাসের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তারা প্রকাশ্যে যেখানে সেখানে পশু জবাই করে। পশুর রক্তে পথঘাট ভেসে যায় । তাদের শরীরের বর্জ্য পরিবেশ নোংরা করে। পুরো ঢাকা শহরে বিশ্রী এক ধরনের গন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়ায়। পরিবেশ হয়ে দাঁড়ায় অস্বাস্থ্যকর ও অসহ্য।
সারা পৃথিবীর কোথায় সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত কসাইখানা ছাড়া প্রকাশ্যে পশু জবাই করার কোন নিয়ম নেই । কেবলমাত্র বাংলাদেশেই যেখানে ইচ্ছা পশু জবাই করে বেড়ায় মানুষ। মানুষের মাঝে নিসংসতা আর নির্মমতা ছড়িয়ে পড়ে । এক সময় তাদের হাতে চলে যায় পশু জবাই করার ছুরি। তারা সেই ছুরি চালায় অন্য মানুষের বুকে , গলায়।
ব্লগার রাজীব নূর সাহেবের পিতা এক জন মুক্তহস্ত আরো উদার মনের মানুষ। উনি বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর দ্রুত রোগ মুক্তির জন্য কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি। উনি যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন । আবার মুক্তহস্তে দরিদ্রদের দান করেন। তাঁর আগের মত সুন্দর জীবন ফিরে আসুক।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫৬