আমাদের দেশে যারা ব্যবসা করেন কিংবা রাজনীতি করেন আমার কেন যেন মনে হয় তারা টাকাটাই বেশী বুঝেন। তারা কেবল সুযোগ খুঁজতে থাকেন কি করে আরো দু’দুপযসা বেশী করে কামিয়ে নেয়া যায়।
যেমন পরিবহন ব্যবসায়ীদের কথা বলা যেতে পারে। যারা বাস বা এই জাতীয় পরিবহনের মালিক তারা খালি গুণে গুণে টাকা নেন যাত্রীদের কাছ থেকে। যাত্রীদেরকে সামান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে চান না। ঢাকা শহরে যে সব বাস, মিনিবাস, বিগবাস, অটো চলে তার কোনটাই স্বাস্থ্যকর নয়। যেমন সিটগুলো খুবই চিপা, একজন বসাই দায়। সিটে বসলে পা রাখা কঠিন হয়ে পরে। মনে হয় যাত্রীদের পা না থাকলেই মনে বেশী ভালো হতো। সিটগুলো ব্যাপক নোংরা । জীবন একবারও পরিস্কার করা হয় না। ভেতরে ধোলাবালি গিজ গিজকরে। লোহার নানান অংশ বের হয়ে থাকে যাতে মানুষের জামা কাপড় ছিড়ে যায় । তাদের গায়ের চামড়া ছিলে যায়। যাত্রীদের ব্যাগ রাখার কোন ব্যবস্থাই নেই। অথচ মানুষের সাথে অন্তত একটা ব্যাগ তো থাকতেই পারে।
একটি বাসে যে কয়টি সিট থাকে তার তিনগুণ যাত্রী নেয়া হয় দাঁড় করিয়ে। বাস গাদাগাদি করে দাঁড়াতে গিয়ে কোন মানুষের মাঝে সামান্যতম দূরত্ব থাকে না। একবারে পিছনে যে যাত্রীটি দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি পড়েন মহাবিপদে। কেননা, মাঝখানের কোন স্টপেজে নামতে চাইলে তাকে দাঁড়ানো যাত্রীদেরকে ঠেলে সামনে এগিয়ে এসে তাঁরপর বের হতে হবে। সেটা খুবই কঠিন একটি ব্যাপার। এসময় পাত্রীদের অনেকেরই জামার বুতাম ছিড়ে পড়ে যায়। কারো কারো মানি ব্যাগ খোয়া যায়। নারী যাত্রীরা পড়েন আরো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। এই ভাবে যাতায়াত করেন সাধারণ মানুষজন।
একথা না বললেও চলে যে পরিবহন খুব লাভজনক একটা ব্যবসা। বাসে যে কয়জন মানুষ মানুষ বসে যাতায়াত করেন তার চেয়ে ঢেড় বেশী মানুষ দাঁড়িয়ে যান। যে সব মানুষ দাঁড়িয়ে যায় তারা যে ভাড়া দেয় তা হল লাভের উপর সোয়া সের লাভ। কাউন্টার করে যে বাসগুলো চলে তার ভাড়া অনেক বেশী। কিন্তু সেবার মান সাধারণ বাসের মতোই। সেখানে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। মানুষের পায়ের পারা খেতে হয়।
সাধারণত শহরে যাতায়াতের জন্য কম আয়ের মানুষই বাস ও অন্যান্য পাবলিক পরিবহনে যাতায়াত করে। তবে আন্তঃজেলায় চলাচলের জন্য সব ধরনের আয়ের মানুষই বাস ব্যবহার করে। অবশ্য কিছু বাস আছে যেগুলো বলা হয় এসি বাস। এগুলোর ভাড়া বেশী।
আমাদের মনে রাখা দরকার, যাত্রীরাও মানুষ। আর আশ্চর্যজনক কথা হলো বাসের মালিকরাও মানুষ। মানুষে হয়ে মানুষের সেবা করা উচিত। আমাদের দেশের একটা শ্রেণী তো নির্বাচন এলে দেশ আর দশের সেবা করার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন। এই মনোভাবটি সারা বছর ধরে বজায় থাকলে হয়তো সাধারণ মানুষ তাদের মনে অজান্তেই কিছু সেবা পেয়ে যেত। অথচ তারা সেটা পাচ্ছে না।
আফসোস!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



