সারাদিন পেটের দায়ে নানান ধরনের ঝামেলার মধ্য দিয়ে যেতে হয় । কোন সময় পাওয়া যায় না । তাই বাজার করার জন্য বেছে নিতে হয় সন্ধ্যা বেলাটা।
আমি সাধারণত সাড়ে সাতটার পরে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হই বেশিরভাগ সময়ই ।
আজকাল বাজারে চলাফেরা করেছি মোহাম্মদপুরের আল্লাহ করিম জামে মসজিদের আশেপাশের এলাকাগুলোতে।
এই এলাকার দোকানগুলিতে ঘোরাঘুরি করতে ভালো লাগে। কারণ অসংখ্য দোকানপাট। পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্রেতা।
পরিবেশটা যেন গম গম করছে। দেখে মনে হয় যেন বৈশাখী মেলা বসে গেছে।
সে যাই হোক এখানে অসংখ্য দোকানপাট এর মধ্যে নানান ধরনের জিনিসপত্র সাজানো আছে। আমি মূলত কিনি কাঁচা বাজারের জিনিসগুলো।
বাংলাদেশের হিসাব মতে কোন দোকানে জিনিসপত্রের দাম লেখা থাকে না ।
তাই যে কোন দোকানে গেলে কমপক্ষে পাঁচটা জিনিসের দর দাম জিজ্ঞেস করতে হয়। যেমন পটল কত করে কেজি, আলু কত করে কেজি, পেয়াজ কত করে কেজি ইত্যাদি । দোকানদার অনেক সময় বিরক্তি সহকারে বলেন- একদম ১০০ টাকা, একদাম ১২০ টাকা ইত্যাদি।
জিনিসপত্র কেনা শুরু করার পূর্বে আমি কমপক্ষে দুই তিনটা দোকানে দাম যাচাই করি। তারপরে কেনা শুরু করি।
সমস্যাটা হয়ে যায় এখানেই । কোন দোকানে দাম জিজ্ঞেস করলে দোকানদার চায় আমি ওই দামেই কিনে নিই ।
কিন্তু কোন ক্রেতাই দোকানদারের চাওয়া ওই দামে কিনবে না । কেননা এরা ন্যায্য দামের থেকে অনেক বেশি দাম বাড়িয়ে বলে । যেহেতু প্রথমে কিনব না তাই শুধু দামটা জিজ্ঞেস করে জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি কে কেমন দাম চাচ্ছে।
কিন্তু অসুবিধা হচ্ছে কোন দোকানদার আমার চেহারা দেখে আমাকে পাত্তা দেয় না।
যেমন আজকে কমপক্ষে সাতটা দোকানে আমি দাম জিজ্ঞেস করেছিলাম ।
জিজ্ঞেস করার পরে যেহেতু সাথে সাথেই আমি কেনার দাম বলবো না তাই প্রত্যেকটা দোকানী আমাকে বলেছে," তুমি কত দিবা? "
আমি তাদের এই প্রশ্নে অবাক হইনি । আমার কাছে মনে হয়েছে আমাকে মনে হয় দেখতে রিকশাওয়ালা , ভ্যানওয়ালা, দারোয়ান কিংবা ভিক্ষুকের মতো দেখতে লাগছে ।
নইলে আমি যেখানে তাদেরকে আপনি করে বলছি তারা আমাকে সরাসরি তুমি করে বলবে কেন ?
তাই এখন থেকে ঠিক করেছি - দোকানে যাওয়ার আগে টাই টুগ একটু ভালো করে বাঁধবো। গায়ে কালো কোট চরাবো। তারপরে বাজারে যাবো। যাতে দোকানদাররা আমাকে বড় কোন হামলা চোমড়া ব্যক্তি মনে করে এবং আপনি করে কথা বলে।
ভুলে গেলে চলবে না যে বিশ্ব বিখ্যাত কবি জনাব শেখ সাদীও তাঁর পোশাক-আশাক কম দামি ছিল বলে আমিরের বাড়িতে যোগ্য সম্মান পাননি।
আমি তো কবি ও না। তাহলে দোকানদাররা আমাকে কেন ন্যূনতম সম্মান করবে! দোকানদারদের কি দোষ?
অফ টপিকঃ বয়সের দিক চিন্তা করলে আমি কিন্তু অলরেডি হাফ সেঞ্চুরি পার করে ফেলেছি