somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কয়েক হাজার শর্ত মেনেই অামরা এবং অামাদের মহাবিশ্ব!!

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অামাদের দৃশ্যমান পৃথিবী, গ্যালাক্সি-পুরো মহাবিশ্বের তুলনায় মাত্র ৫ ভাগ হতে পারে।
সমস্যা হলো, বাকী ৯৫ ভাগ অাসলে কি সেটা বিজ্ঞানীরা এখনও সঠিকভাবে প্রমাণ করতে পারেননি।
ধারণা করা হচ্ছে, বাকী মহাশূণ্য ডার্ক ম্যটার এবং ডার্ক এনার্জি ।
কিন্তু এগুলো অনুমান মাত্র। ডার্ক ম্যটার অাসলে কি দিয়ে গঠিত এবং এটা অালোর প্রতিফলন বা শোষণ কোনটাই করেনা কেন সেটাও এখন অজানা। মূল কথা এগুলো আমাদের জ্ঞানের সীমার বাইরেই থেকে গেছে।
সাধারনত অামাদের চোখে কোন বস্তু দেখতে হলে তার প্রথম শর্ত হলো বস্তুর উপর অালোর প্রতিফলন। বলা বাহুল্য, অামাদের মহাবিশ্বের অতি সামান্য অংশই অামরা দেখি এবং সেটা নিয়েই গবেষণা করছি। বাকী বিষয়গুলো অধরাই থেকে গেছে।
সৌরজগতের গঠন তার ক্রিয়া পদ্ধতি সত্যিই অভিনব। এখানে এমনই একটা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বিদ্যমান যাকে সুক্ষ থেকে অতি সুক্ষ বলা যায়।

অামরা পৃথিবী নামক যে গ্রহে বাস করি সেটা টিকে থাকার জন্য এবং অামরা মানুষ তথা প্রানী টিকে থাকার জন্য অজস্র শর্ত মেনে চলতে হয়। এই শর্তগুলো সামান্যতম ব্যত্যয় হলেই অামাদের টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব।
মাত্র কয়েকটি শর্ত গভীরভাবে ভাবলে অনেক জিজ্ঞাসা সামনে এসে যাবে


শর্ত-১
বায়ুমন্ডলের যে স্তরে অামরা বাস করি অর্থাৎ ট্রোপোস্ফিয়ার যেটা ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এই স্তরে ধুলিকনা , জলীয়বাষ্প এবং অন্যান্য গাসীয় পদার্থ বিদ্যমান। মূলত: এই স্তরের উপরের দিকের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমের দিকে। অবশ্য এটা না হলে মেঘমালা সৃষ্টি হতোনা। বৃষ্টি হতোনা। এই স্তরটাই অক্সিজেন সমৃদ্ধ একটা জোন বলা যায়। বাকী অারো ৪ টা স্তরের ভীতর ওজন স্তরটা খুবই তাৎপর্যপূর্ন ।
বায়ুমন্ডলের উপরের দিকে ৫০-৮০ কিলোমিটারের এই ওজন স্তরটা অামাদের টিকে থাকার জন্য অনিবার্য একটা বিষয়। এখানকার ওজন গ্যাস সূর্য থেকে আসা অতিবেগুনী রশ্মি শোষণ করে। ফলে জীব-জন্তু, গাছপালা নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পায়।
এর পরের স্তর আয়নোস্ফিয়ার (৮০-৬৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত) আমাদের বেতার তরঙ্গে অনুষ্ঠান প্রচারে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়াও মেসোস্ফিয়ার নামক স্তরটি মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলি এই স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।
শর্ত-২
পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি এবং এর আকার একদম পারফেক্ট। আমাদের পৃথিবীর আকার যদি বর্তমান আকারের চেয়ে ছোট বা বড় হত তাহলে নানান ধরনের বিপর্যয়ের সৃষ্টি হতো। আকার বড় হলে গ্রাভিটি বা মহাকর্ষ বেড়ে যেত ছোট হলে গ্রাভিটি বা মহাকর্ষ কম হতো। যেটা জোয়ার ভাটা থেকে শুরু করে আবহাওয়া মন্ডলের অস্বাভাবিক বিপর্যয় শুরু হতো। পৃথিবী আমাদের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যেত।
ঠিক চাঁদ, সূর্যের ব্যপারটাও সেরকম। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কম বেশি হলে আমাদের পৃথিবী হয় ঝলসে যেত না হলে বরফের স্তুপে পরিনত হতো। চন্দ্রটা এবং সূর্যের আকার যদি বর্তমান অকৃতির মাত্র ১.৫ গুন বড় হতো তবে পৃথিবী কখনই বসবাসের উপোগী হতোনা। আবার মাত্র ১.৫ গুন ছোট হলেও বসবাসের উপযোগী হতোনা। সুতরাং প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট পরিমাপ, মাত্রা, দূরত্ব, গতি কাজ করছে।
শর্ত-৩
বেঁচে থাকার প্রথম শর্ত অক্সিজেন,পানি। সব প্রাণের সৃষ্টি এই পানি থেকেই। অর্থাৎ যেখানে পানি নেই সেখানে প্রানীর অস্তিত্ব অসম্ভব। যেহেতু গাছের প্রাণ অাছে সেহেতু পানি ছাড়া গাছও বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। আবার গাছের প্রজন্ম রক্ষার জন্য প্রয়োজন কিটপতঙ্গের। ধারণা করা হয়, শুধুমাত্র মৌমাছি বিলুপ্ত হলে পৃথিবীর সিংহভাগ ফসল উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে পরাগায়নের অভাবে। পৃথিবীতে দেখা দিবে খাদ্য সংকট। পৃথিবীর অসংখ্য খাদ্যের যোগান প্রত্যাক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে গাছ থেকেই পাওয়া সম্ভব। হাজার হাজার টন অক্সিজেনের যোগান গাছ কোন কাকতালীয়ভাবে দেয়ার কথা নয়। খাদ্য শৃংখল, পারস্পরিক নির্ভরশীলতা অত্যান্ত নিয়মতান্ত্রিক এবং যুক্তিনির্ভর।
শর্ত-৪
এরিস্টটল একসময় ভাবতেন, মহাবিশ্ব চিরকাল ধরেই আছে, এর কোন শুরু বা শেষ নেই। কিন্তু অাধুনিক বিজ্ঞান বলছে, অবশ্যই এই মহাবিশ্বের শুরু অাছে। তখন কোন স্থান, সময় ছিলোনা। এই মহাবিশ্ব শূণ্য থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য এটা চরম একটা পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র মেনেই হয়েছে ১৩.৫ বিলিয়ন বছর অাগে । ধরলাম, ১৩.৫ বিলিয়ন বছর পূর্বে এই মহাবিশ্বের শুরু।
কিন্তু এই শুরুটা( মহাবিষ্ফোরণ) ১৮ বা ২০ বিলিয়ন বছর অাগে কেন হলোনা তার ব্যাখ্যা বিজ্ঞানীদের কাছে নেই। এর অর্থ দাড়ায়, শুরুটা একটা পরিকল্পনার ফসল। ব্যাপার হলো, ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া অসংখ্য গ্রহ, নক্ষত্রগুলো একটা নিয়মের জালে অাটকা পড়া বা নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলাফেরা করা পরিকল্পনাবিহীন নয়। এখানে অসংখ্য শর্ত জড়িত।
হকিং বিশ্বাস করতেন, দুনিয়া বিজ্ঞানের নিয়ম মেনেই চলে। এমন হ’তে পারে নিয়মগুলো ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু নিয়মের ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য হস্তক্ষেপ করেন না।
মূলত: কোটি কোটি সৌরজগত এবং এই কোটি কোটি সৌরজগতের সমন্বয়ে গঠিত একএকটা গ্যালাক্সি। সেই বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সির কোন সৌরজগতের প্রাণের অস্তিত্ব থাকা অসম্ভব কিছু নয়। হয়তো অামরা জানার চেষ্টা করছি মাত্র। হয়তো একদিন জানতে পারবো অথবা অজানাই থেকে যাবে। এটা হয়তো অামাদের পরিচিত ইউনিভার্সের একটি ছোট গল্প।
অসংখ্য মালটিভার্সের কথা নাই বা বললাম। সেটা হয়তো অনন্তকাল ধরেই বিস্তৃতি এবং সৃষ্টি হতে থাকবে। অামরা পড়ে থাকবো অনন্ত অসীম মহাবিশ্বের এক কোনে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:৪০
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×