somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিবেদকের বক্তব্য : আমার দেশ সত্ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশেষ প্রতিনিধি

১৭ ডিসেম্বর আমার দেশ-এ প্রকাশিত ‘তৌফিক এলাহী ও জয়ের বিরুদ্ধে ৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ নেয়ার অভিযোগ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে কোনো মিথ্যা, অমূলক, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য দেয়া হয়নি। সব তথ্য মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র থেকে পাওয়া। সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুসরণ করে জ্বালানি সচিব, শেভরনের পরিচালক ও পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বক্তব্য প্রতিবেদনে স্থান দেয়া হয়েছে। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য নেয়ারও চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রধানত ৪টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এক. জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কর্তারা শেভরনের কাছে থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ নিয়েছেন বলে পেট্রোবাংলার প্যাডে আবু সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী বরাবর অভিযোগ করেছেন; দুই. ওই অভিযোগ তদন্তে জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলা চিঠি চালাচালি করেছে; তিন. বিনা টেন্ডারে শেভরনকে মুচাইতে কম্প্রেসার স্থাপনের কাজ দেয়া হয়েছে; চার. কম্প্রেসারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পেট্রোবাংলার কর্মকর্তাদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে।
আমার দেশ-এর প্রতিবেদনে উল্লিখিত চারটি বিষয়ই পুরোপুরি তথ্য ও প্রমাণভিত্তিক। আবু সিদ্দিকীর অভিযোগ মন্ত্রণালয় পেয়েছে এবং তার ভিত্তিতে পেট্রোবাংলাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। পেট্রোবাংলা জবাবিপত্রে বিষয়টিতে উচ্চ পর্যায়ের লোক জড়িত এবং স্পর্শকাতর বিধায় তদন্তে অপারগতা প্রকাশ করেছে। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র আমাদের হাতে রয়েছে। শেভরনকে বিনা টেন্ডারে কাজ দেয়ার বিষয়টি প্রতিবাদপত্রেই স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। আর কম্প্রেসারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পেট্রোবাংলার দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যে প্রশ্ন তুলেছেন তার প্রামাণ্য দলিলও আমাদের হাতে আছে। তাহলে রিপোর্টের কোন অংশ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বানোয়াট তা আমাদের বোধগম্য নয়। আবু সিদ্দিকীর অভিযোগ ভিত্তিহীন না তথ্যভিত্তিক সে ব্যাপারে প্রতিবেদনে আমার দেশ-এর নিজস্ব কোনো মন্তব্য ছিল না।
প্রতিবাদপত্রে বলা হচ্ছে, আবু সিদ্দিকী নাকি কথিত অভিযোগ করেননি। আমার দেশ-এর প্রশ্ন যদি তাই হবে তা হলে অভিযোগপত্র প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রণালয় কেন পেট্রোবাংলাকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে? পেট্রোবাংলাই বা কেন অভিযোগটি আমলে নিয়ে ২৬ নভেম্বর মন্ত্রণালয়কে ফিরতি পত্র দিয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছে? শুধু তাই নয়, মন্ত্রণালয়ের পত্রের ওপর হাতে লিখে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জানতে চেয়েছেন ‘কিভাবে পেট্রোবাংলার প্যাড ব্যবহার করে অজ্ঞাত ব্যক্তি চিঠি লিখলেন সে বিষয়টি দেখুন।’
জ্বালানি বিভাগের প্রতিবাদপত্রে ধান ভানতে শিবের গীত গাওয়ার মতো আশুগঞ্জ ও এলেঙ্গায় কম্প্রেসার স্থাপনের জন্য এডিবির সঙ্গে দেনদরবার ও টেন্ডার সংক্রান্ত জটিলতার ফিরিস্তি দেয়া হয়েছে। আমার দেশ-এর আলোচ্য প্রতিবেদনের সঙ্গে যা মোটেই প্রাসঙ্গিক নয়।
কম্প্রেসারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে গিয়ে প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, ঢাকায় বিরাজমান গ্যাসের নিম্নচাপ ও গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধির মহান(!) লক্ষ্যে কম্প্রেসার স্থাপনের জরুরি ব্যবস্থা নিয়ে সরকার কাজের কাজ করেছে। এ দাবিও বাস্তবভিত্তিক নয়। কারণ শেভরনকে দেয়া কম্প্রেসার বসানোর পর মুচাই পয়েন্টে গ্যাসের চাপ ১০৫০ পিএসআইজিতে উন্নীত হবে বলে প্রকল্প সারপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মজার ব্যাপার হচ্ছে বিবিয়ানা, জালালাবাদ ও মৌলভীবাজার গ্যাসক্ষেত্রে রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় পেট্রোবাংলার নথিপত্র অনুযায়ী মুচাই পয়েন্টে এখনই গ্যাসের চাপ ১০৫০ পিএসআইজি আছে। তাছাড়া শেভরন চলতি বছরের ২৪ আগস্ট পেট্রোবাংলায় গ্যাস উত্তোলনের বর্তমান ও ভবিষ্যত্ সম্পর্কে যে প্রেজেন্টেশন দিয়েছে তাতেই তথ্য দেয়া হয়েছে যে, তাদের পরিচালিত ফিল্ডগুলোয় রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১০৫০ পিএসআইজিতে গ্যাস সরবরাহ করা যাবে। এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে গত ১৫ অক্টোবর জিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দেয়া পেট্রোবাংলার পরিচালক ইউসুফ আলী তালুকদার স্বাক্ষরিত পত্রে (নং-৪০.০১.০৪/৩১)।
শেভরনকে বিনা দরপত্রে মুচাইতে কম্প্রেসার স্থাপনের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী ৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে অনুমোদন করার ১ মাস ১০ দিন পর ১৫ অক্টোবর পেট্রোবাংলারই একজন পরিচালক জিটিসিএলকে চিঠি দিয়ে কেন প্রকল্পের যথার্থতা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, সে বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলারই ভালো জানার কথা।
প্রতিবাদপত্রে আরও জানানো হয়েছে, প্রোডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্টের (পিএসসি) বিধান মেনে শেভরনকে কাজ দেয়া হয়েছে। বিনিয়োগ কর্মসূচি সংক্রান্ত সংগ্রহ নীতিমালার সব নিয়মাবলি যথাযথভাবে প্রতিপালনের দাবিও করা হয়েছে। পিএসসির কোন ধারায় এ ধরনের সুযোগ রয়েছে তা প্রতিবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়নি। পিএসসি পর্যালোচনায় ৩৭০ কোটি টাকার কাজ বিনা টেন্ডারে দেয়া যাবে, এমন কোনো বিধান খুঁজে পাওয়া যায়নি।
প্রতিবাদপত্রে আবু সিদ্দিকীর অভিযোগ অনুযায়ী ১৪ অক্টোবর টেক্সাসে জ্বালানি উপদেষ্টা কর্তৃক ২ মিলিয়ন ডলার হস্তান্তরের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। ওই তারিখে জ্বালানি উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে আদৌ গিয়েছিলেন কিনা সে ব্যাপারেও কিছু জানানো হয়নি প্রতিবাদপত্রে।
প্রতিবাদপত্রে দাবি করা হয়েছে, মুচাই প্রকল্পের জন্য শেভরনকে সরকারের পক্ষ থেকে নগদ টাকা দিতে হবে না এ দাবিও যথার্থ নয়। কস্ট রিকভারির আওতায় শেভরন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে যে গ্যাস বিক্রি করছে সেই গ্যাস বিক্রির অর্থ নগদ প্রদান করেই শেভরনকে কম্প্রেসারের মূল্য পরিশোধ করতে হবে।
কাজেই সব তথ্য-উপাত্তে প্রমাণিত হচ্ছে, আলোচ্য সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে আমার দেশ-এর একটি সত্ ও দায়িত্বশীল সংবাদপত্র হিসেবে জনগণকে দুর্নীতির অভিযোগ অবহিত করা ছাড়া অন্য কোনো ভূমিকা ছিল না। জ্বালানি মন্ত্রণালয় তাদের প্রতিবাদপত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের যে অধিকারের কথা উল্লেখ করেছে আমার দেশ তাকে স্বাগত জানায়।

Click This Link
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×