somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের পদত্যাগ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং পরের কথা.............................................

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিনি খুবই সম্মানীত .................ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল
কেন জানি তাকে খুব সম্মান করি, তার লিখার কারনেই হোক বা জ্ঞানগর্ভের কারনেই হোক................

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী ইয়াসমীন হক।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পদ্ধতি বাতিল করায় তারা পদত্যাগ করেছেন অথচ জাফর ইকবাল এ সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ছিলেন।

এছাড়া তিনি কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং ইলেক্টিক্যাল এন্ড ইলেক্টোনিস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং ইয়াসমীন হক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।

পদত্যাগের পরের বিবৃতিটি -----------------

প্রিয় শাবিপ্রবি,

শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় এক জায়গায় কাটিয়েছি, আমরা দুজনেই এই সময়ের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করেছি। আমাদের ছাত্র-ছাত্রী এবং সহকর্মীরা আমাদের এই জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তুলেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর আমাদের কোনো ভাষা নেই।

খুব স্বাভাবিকভাবেই এই দীর্ঘ সময়ে আমরা নানা ধরনের ঘাত প্রতিঘাতের সম্মুখীন হয়েছি। নিজেদের বিশ্বাসের প্রতি আস্থা ছিল বলেই আমরা সবকিছু সহ্য করেছি- এমনকি আমরা আমাদের শিশু সন্তানদের বছরের পর বছর ঢাকায় রেখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করেছি। আমরা সব সময়েই জেনে এসেছি কিছু মানুষ আমাদের বিরোধিতা করেছে, এর সাথে এটাও জেনেছি এখানকার কিছু মানুষ আসলে আমাদের পাশে আছেন।

দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি যখন একেবারেই শেষ পর্যায়ে তখন হঠাৎ করে আমরা দেখতে পেলাম যারা এতোদিন সবসময়ে আমাদের পাশে ছিলেন- তারা আমাদের পাশে নেই। সমন্বিত ভর্তি পক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের স্বকীয়তা পুরোপুরি বজায় রেখে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। শুধুমাত্র একদিনে এক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে এবং দেশের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের ছুটোছুটি করতে হবে না। এই চমৎকার পদ্ধতিটি নিয়ে কারো কোনো দুর্ভাবনা থাকতে পারে – সেটি আমরা কখনো কল্পনাও পারিনি। আমরা পুরোপুরি অবিশ্বাস এবং বিস্ময় নিয়ে আবিষ্কার করলাম বামপন্থী এবং জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে বিরোধিতার সূচনা করলো এবং স্বাভাবিকভাবে সেটি অন্যরা গ্রহণ করলো। মাননীয় অর্থমন্ত্রী এবং মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যখন এই পদ্ধতিটির বিরুদ্ধে অবস্থান করলেন- তখন আমাদের মনে হয়েছে আমাদের সবকিছু নতুন করে ভেবে দেখার সময় হয়েছে। যারা সবসময়েই আমাদের সবকিছুর বিরোধিতা করে, আমরা তাদের বিরোধিতার বিরুদ্ধে এতদিন কাজ করে এসেছি। কিন্তু যারা আমাদের স্বজন, যাদেরকে পাশে নিয়ে কাজ করে এসেছি- তারা যদি আমাদের পাশে না থাকেন, তাহলে বুঝতে হবে অবশ্যই এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের বিদায় নেওয়ার সময় হয়েছে।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন মেনে সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও অতীতে শুধুমাত্র আমাদের উপস্থিতির জন্য অনেকবার বিশ্ববিদ্যালয়কে জিম্মি করে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নয়- সারাদেশের অসংখ্যা ছেলেমেয়েকে ক্ষতিগ্রস্থ করা হলো। আমাদের মনে হয় আমরা যদি বিদায় নেই তাহলে ভবিষ্যতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের আর এ ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে না।

৬০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসর নেওয়ার কথা ছিল- আমরা সেভাবে আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম। সম্প্রতি শিক্ষকদের অবসর নেয়ার সময় ৬৫ বছর করার কারণে আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে গেয়েছিল, এখন মনে হয় সেটিও আবার গুছিয়ে নেয়া যাবে। আমাদের একজনের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উপন্যাস লেখার ইচ্ছে, সেটিতে হাত দিতে পারব। যে শিশুকিশোরেররা চিঠিপত্র লিখে, সময়ের অভাবে তাদের উত্তর দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না- এখন থেকে সেটি সম্ভব হবে। আমাদের অন্যজনের নির্যাতিত মহিলাদের জন্য কাজ করার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল- এখন সেই পরিকল্পনার জন্য কাজ করতে পারবে। এছাড়াও আমাদের শিক্ষা ও উদ্ভাবনীমূলক কাজ নিয়ে আরো অনেক স্বপ্ন রয়েছে- আমরা এখন তার জন্য কাজ করতে পারব।

এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদেরকে নিয়ে পরিপূর্ণ একটা জীবন উপহার দিয়েছে। এই অপূর্ব অভিজ্ঞতাটি নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছি, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা- এই বিশ্ববিদ্যালয়টি যখন এই দেশ এবং এই পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে তখন আমরা গর্ব করে বলতে পারব আমরা এক সময়ে এখানে আমাদের শ্রম দিয়েছিলাম।

- মুহম্মদ জাফর ইকবাল

- ইয়াসমীন হক
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×