somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্য ফার্ম: জন গ্রিশাম , অনুবাদ , ১ম পর্ব

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিচেল ওয়াই ম্যাকডিয়ারের সিভি শতবারের উপর দেখার পরও, তাকে অপছন্দ করার মত কোনো কারণ খুঁজে পান নি ফার্মের সিনিয়র পার্টনার। অন্ততপক্ষে সিভিতে এমন কিছু নেই। তার মেধা আছে, দেখতে সুদর্শন, উচ্চবিলাসি। দারুণ ব্যাকগাউন্ড, সাথে আছে উপরে ওঠার তীব্র ক্ষুধা। সে বিবাহিত, যা ফার্মে জয়েনের প্রথম শর্ত। ফার্ম কখনও অবিবাহিত কোনো লয়ারকে নিয়োগ দেয় নি। তাছাড়া ফার্ম ডিভোর্স, পরকিয়া, ড্রিংকিংকে সবসময় চরমভাবে অনুৎসাহিত করে। কনট্রাক্টেই ড্রাগ টেস্টের কথা উল্লেখ আছে। তার একাউন্টিং এর উপর ডিগ্রি, একবারে সিপিএ এক্সাম পাস করা এবং ট্যাক্স লয়ার হিসাবে ক্যারিয়ার গড়তে চাওয়ার ইচ্ছা, এই ট্যাক্স ফার্মে জয়েনের ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে রাখছে। ম্যাকডিয়ার শ্বেতাঙ্গ। ফার্ম কৃষ্ণাঙ্গ কাউকে নিয়োগ দেয় না। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া অতি গোপনীয়তার সাথেই সম্পন্ন হয়। চাকরির কোনো বিজ্ঞাপন দিয়ে সিভি আহ্বান তারা করে না। অন্যান্যরা চাকরির বিজ্ঞাপন দিবে, এরপর লোক দেখিয়ে কৃষ্ণাঙ্গ কাউকে বেছে নিবে। এই ফার্ম সরাসরি নিয়োগ দেয় এবং সম্পূর্ণ সাদা চামড়াদের কোম্পানি এটি। তাছাড়া ফার্মের লোকেশনও মেমফিসে। সেরা সব কৃষ্ণাঙ্গদের লক্ষ্য থাকে নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন কিংবা শিকাগো। ম্যাকডিয়ার পুরুষ মানুষ। এই ফার্মে কোনো নারী লয়ার নেই। এই ভুল একবার মাত্র করেছিল সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময়ে। হার্ভার্ডের নাম্বার ওয়ান র্যাংক করা নারীকে নিয়োগ দিয়েছিল তারা। মাত্র চার বছর টিকেছিল সে। এরপর এক গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায়।
সব কাগজপত্র ম্যাকডিয়ারকেই এগিয়ে রাখছে। সে ফার্মের প্রথম চয়েজ। সত্যিকার অর্থে বলতে এই বছর তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। ফাইনাল লিস্ট খুবই ছোটো ছিল। তাই এবার হয় ম্যাকডিয়ার, না হয় কেউ নয়।

ম্যানেজিং পার্টনার রয়েস ম্যাকনাইট, ফাইলটা পড়ে শেষ করলেন। ফাইলের উপর লেখা:
মিচেল ওয়াই ম্যাকডিয়ার
হার্ভার্ড



এক ইঞ্চি মোটা ফাইলের ভিতরে ছোট প্রিন্টের অক্ষরে কিছু তথ্য আর ছবি। এটি বানিয়ে দিয়েছে প্রাক্তন কিছু সিআইএ এজেন্টদের পরিচালিত বেথেস্টারের এক প্রাইভেট ইন্টিলিজেন্স কোম্পানি। ফার্মের ক্লায়েন্ট হওয়াতে এই তদন্তের কাজ তারা বিনামূল্যেই প্রতি বছর করে দেয়। তাদের ভাষ্যমতে, সব দিক থেকে ঠিকঠাক স্বচ্ছ ল স্টুডেন্টদের খুঁজে বের করাটা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। তারা অতি সহজেই এগুলো বের করতে পারে। তথ্য গুলো সব তাদের হাতের মুঠোতেই থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ম্যাকডিয়ার নর্থইস্ট ছেড়েছে কারণ তার হাতে তিনটা জবের অফার আছে – দুইটা নিউ ইয়র্কে, একটা শিকাগোতে। সবচেয়ে বেশি অফার পেয়েছে ছিয়াত্তর হাজার ডলারের আর সবচেয়ে কম আটষট্টি হাজার। সে হাই ডিমান্ডেবল ক্যান্ডিডেট। তার কাছে সেকেন্ড ইয়ারে থাকতে, পরীক্ষায় নকল করার সুযোগ এসেছিল। সে তা না করেও ক্লাসের সর্বোচ্চ গ্রেড পেয়েছিল। মাস দুয়েক আগে তাকে কোকেন অফার করা হয়েছিল, এক ল স্কুল পার্টিতে। সবাই যখন কোকেনের নেশায় পাগল, সে না বলে ওখান থেকে চলে এসেছে। সে অকেশনালি বিয়ার খায়। তবে নিয়মিত ড্রিংকিং করার মতন টাকা পয়সা তার কাছে নেই। ঘাড়ে নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছে সে তেইশ হাজার ডলারের স্টুডেন্ট লোনের বোঝা আর পেটে ক্ষুধা।
রয়েস ম্যাকনাইট ফাইলটা বন্ধ করে একটা স্মিত হাসি দিলেন। ম্যাকডিয়ারকেই তাদের দরকার।
ল্যামার কুন, বত্রিশ বছর বয়স। এই ফার্মের পার্টনার সে এখনও হয় নি। বেনডিনি, লাম্বার্ট এন্ড লকি ট্যাক্স ফার্মের তরুণ রূপকে উপস্থাপন করার জন্য, বাকি দুই পার্টনার তাকে এখানে রেখেছে। তার চেহারার তারুণ্যের ছাপ আর কথা বার্তার চটপটে ভাব, তা বেশ ভালোভাবেই প্রকাশ করে যাচ্ছে। যদিও এই ফার্মকে তরুণদের ফার্ম বললে খুব একটা ভুল হবে না। বেশিরভাগ পার্টনারই পঞ্চাশের কাছাকাছি কিংবা পঞ্চাশ পেরিয়েই হাতে অঢেল টাকা পয়সা নিয়ে অবসরে চলে যায়। ল্যামার কুনকেও এই ফার্মের পার্টনার করা হবে। বাকি জীবন নিশ্চিত ছয় ডিজিটের ইনকাম সে দারুনভাবে উপভোগ করবে। একটা শান্ত, নিস্পৃহ দৃষ্টি ছুড়ে ল্যামার কুন হোটেল সুটের চারপাশে দেখল। এই সুটের ভাড়া দৈনিক হাজার ডলারের উপরে। আরেক কাপ কফি মগে ঢালতে ঢালতে, হাতের ঘড়িতে সময় দেখে নিল। দুই পার্টনারের দিকে এক নজর তাকাল। তারা বসে আছে জানালার কাছের ছোট কনফারেন্স টেবিলে।
ঠিক আড়াইটার সময় দরজায় নক করার শব্দ পেল। ল্যামার বাকি দুই পার্টনারের দিকে মুখ ঘুরাল। তারা সিভি আর ফাইলটা একটা খোলা ব্রিফকেসে রেখে জ্যাকেট ঠিক করতে শুরু করলেন। ল্যামার জ্যাকেটের উপরের বাটন লাগিয়ে খুলে দিলো দরজা।
“মিচেল ম্যাকডেয়ার?” হাসিমুখে হাত বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো সে।
“হ্যাঁ।” দুজনে হাত মিলাল আলতো করে।
“নাইস টু মিট ইউ, মিচেল। আমি ল্যামার কুন।”
“মাই প্লেজার। আমাকে প্লিজ মিচ বলেই ডাকবেন।” সে ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে পুরো রুমে একবার চোখ বুলিয়ে নিল।
“ওকে, মিচ।” কাঁধে হাত দিয়ে সাথে করে রুমের ভিতরে নিয়ে গেল ল্যামার তাকে। বাকি দুই পার্টনার অপেক্ষা করছে পরিচিত হবার জন্য। বেশ উষ্ণ অভ্যর্থনাই পেল ম্যাকডিয়ার। এসে থামল কনফারেন্স টেবিলের সামনে। কোটের বোতাম খুলে একটু আরাম করে পায়ের উপর পা তুলে বসল । দেশের সেরা তিনটি ফার্মে চাকরির অফার তার কাছে। এই ফার্মে জয়েন করার কিংবা এখানে ইন্টারভিউ দেয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না। ম্যাকডিয়ার জানে, এই ফার্ম তাকে চায়। তাই তার মধ্যে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস কাজ করছে। শুধুমাত্র আগ্রহ থেকেই এখানে আজ এসেছে সে। এসে দারুণ অভ্যর্থনাও পেয়ে গেল।
ফার্মের সিনিয়র পার্টনার অলিভার ল্যাম্বার্ট টেবিলের উপর কনুইয়ে ভর দিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করলেন ম্যাকডিয়ারের সাথে। তিনি সবসময়ই বেশ সাবলিল ও অভিজ্ঞ এসব ব্যাপারে। একষট্টি বছর বয়স তার। জীবনের বেশির সময়ই ব্যয় করেছেন এডমিন্সট্রেশন আর ফার্মে কাজ করা দেশের সবচেয়ে ধনী লয়ারদের মধ্যে ঝামেলা মিটমাট করার কাজে। তরুণ লয়ারদের কাউন্সিলিং করানোর কাজটাও তিনিই করতেন। নতুন নিয়োগের ব্যাপারগুলোও তিনি দেখেন, তার লক্ষ্য এখন মিচেল ম্যাকডিয়ারকে নিয়োগ দেয়া।
“ইন্টারভিউ দিতে দিতে বিরক্ত?” অলিভার ল্যাম্বার্ট জিজ্ঞেস করলেন।
“না। জবে জয়েন করতে হলে তো ইন্টারভিউ দিতেই হবে।”
হ্যাঁ, হ্যাঁ। মাথা নেড়ে সবাই সম্মতি জানালেন। এখন পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই আছে। এতদিনের পরিশ্রম তাদের বৃথা যেতে দেয়া যাবে না। ম্যাকডিয়ারকে তাদের চাই।
“আমি একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারি?” ম্যাকডিয়ার বলল।
“অবশ্যই।”
“কেনো নয়?”
“যে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করতে পারেন।”
“আপনারা এই হোটেল রুমে কেনো ইন্টাভিউ নিচ্ছেন? বাকিরা তো ক্যাম্পাসেই ইন্টারভিউ নেয়, জব ফেয়ার করে।”
“দারুণ প্রশ্ন।” সবাই মাথা ঝাঁকিয়ে পরস্পরের দিকে তাকালেন। আসলেই ভালো প্রশ্ন করেছে ম্যাকডিয়ার।
“আমি বোধহয় আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব, মিচ,” ম্যানেজিং পার্টনার রয়েস ম্যাকনাইট বললেন, “আপনি হয়ত বুঝতে পারছেন, আমরা আর দশটা ফার্মের মতন নই। আমরা সবার থেকে আলাদা আর এটা আমরা গর্বের সাথেই বলি। এই ফার্মে একচল্লিশ জন লয়ার আছে। তাই বলতে পারেন অন্যান্য ফার্মের তুলনায় অনেকটাই ছোট। এক গাদা লোককে নিয়োগ আমরা দেই না। প্রতি বছর বেছে বেছে সেরা একজন। আমরা দেশের যে কোন ফার্মের চেয়ে বেশি স্যালারি আর সুযোগ সুবিধা অফার করি। আর এটা আমি মোটেও বাড়িয়ে বলছি না কিন্তু। তাই নিয়োগের ব্যাপারে খুবই খুঁতখুঁতে আমরা। আপনাকে এবার সিলেক্ট করা হয়েছে। আপনাকে গত মাসে যে চিঠিটা পাঠানো হয়েছে, তার আগে আমরা দেশের সেরা ল স্কুল গুলোর দুই হাজার থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্টদের যাচাই বাছাই করেছি। শেষমেশ একটা মাত্র চিঠি পাঠানো হয়েছে, আর সেটা আপনার কাছে। আমরা আমাদের নিয়োগ নিয়ে বিজ্ঞাপন দেই না, কারও কাছে সিভিও চাই না। আমাদের মত আমরা কাজ করে যাই, অন্য সবার থেকে আলাদাভাবে। এজন্যই এখানে আর কি।”
“আচ্ছা, বুঝতে পারলাম। এটা কী ধরণের ফার্ম?”
“ট্যাক্স ফার্ম, কিছু সিকিউরিটি, রিয়েল এস্টেট আর ব্যাংকিং এর কাজ হয়। তবে আশি শতাংশ এখানে ট্যাক্সের কাজ। এজন্যই আপনাকে আমরা সিলেক্ট করেছি, মিচ। আপনার ট্যাক্স লয়ার হিসাবে আগ্রহ আর এডুকেশনাল ব্যাকগ্রাউন্ড অসাধারণ।”
“ওয়েস্টার্ন কেন্টাকিতে যাওয়ার পিছনে কারণ কী ছিল?” অলিভার ল্যাম্বার্ট জিজ্ঞেস করলেন।
“একদম সহজ হিসাব। তারা আমাকে ফুটবল খেলার বিনিময়ে ফুল স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। এছাড়া আমার জন্য কলেজের খরচ চালিয়ে যাওয়াটা অসম্ভব ছিল।”
“আপনার পরিবার সম্পর্কে আমাদের বলুন।”
“এটা কি খুব বেশি জরুরী?”
“অন্য কারও কথা জানি না, তবে আমাদের ফার্মের জন্য খুবই জরুরী, মিচ,” রয়েস ম্যাকনাইট হাসি মুখে বললেন।
সবাই একই কথা বলে, মনে মনে বলে ম্যাকডিয়ার। “আচ্ছা। আমার যখন সাত বছর বয়স বাবা মারা যায়, কয়লা খনিতে কাজ করতে গিয়ে। মা আবার বিয়ে করে ফ্লোরিডা চলে গেল। আমার দুই ভাই ছিল- রাস্টি মারা গেল ভিয়েতমানে। অন্যজনের নাম রে ম্যাকডিয়ার।”
“সে কোথায়?”
“মাফ করবেন, এটা আপনাদের মনে হয় না জানলেও চলবে,” রয়েস ম্যাকনাইটের দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে কথাটা বলল ম্যাকডিয়ার। ফাইলে যদিও রে ম্যাকডিয়ারের ব্যাপারে কিছু তথ্য দেয়া আছে।
“দুঃখিত,” ম্যানেজিং পার্টনার আস্তে করে জবাব দিলেন।
“মিচ, আমাদের ফার্ম তো মেমফিসে,” ল্যামার বলল। “এটায় কি আপনার কোনো অসুবিধা আছে?”
“একদম না। আমার ঠাণ্ডা খুব একটা ভালো লাগে না।”
“আপনি কখনও মেমফিসে গিয়েছেন?”
“না।”
“আমরা আপনাকে অতি সত্ত্বর ওখানে পাঠাচ্ছি। আর নিশ্চিত থাকুন আপনার ভালো লাগবে।”
মিচ আলতো করে হাসল, তাদের সাথে তাল মিলিয়ে মাথা ঝাঁকাল। এরা এতোটা নিশ্চিত কীভাবে হচ্ছে, মিচ ঐ শহরের ঐ ছোটো ফার্মে গিয়ে জয়েন করবে, যেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে ওয়াল স্ট্রিট?
“ক্লাসে আপনার র‍্যাংক কেমন ছিল?” মি. ল্যাম্বার্ট জিজ্ঞেস করলেন।
“টপ ফাইভ।” সেরা পাঁচ শতাংশ নয়। সেরা পাঁচে ছিল সে। তাদের জানার জন্য এতটুকু উত্তরই যথেষ্ট। তিন হাজার জনের মধ্যে সেরা পাঁচ। সে বলতে পারত যে সে ক্লাসে তৃতীয় ছিল, দ্বিতীয় থেকে কয়েক পয়েন্ট নাম্বার পার্থক্য, আর প্রথমও তার ধরা ছোয়ার ভিতরেই ছিল। কিন্তু সে বলল না। সে জানে তার সামনে বসা মানুষ গুলো শিকাগো, কলম্বিয়া আর ভান্ডারবিল্টের বেনামি সব ল স্কুল থেকে এসেছে। আইনজীবীদের তথ্য দেয়া মার্টিনডেল হাবেল পিএস থেকে জেনেছে ম্যাকডিয়ার। এদের ক্লাসের র্যাংক নিয়ে অত মাথা ব্যথা থাকার কথা না।
“হার্ভার্ড বেছে নেয়ার কারণ কী ছিল?”
“আসলে হার্ভার্ডই আমাকে বেছে নিয়েছে। আমি কয়েক জায়গায় এপ্লাই করেছিলাম। সব জায়গা থেকেই ডাক পেয়েছি। হার্ভার্ড আমাকে বেশি সুযোগ সুবিধা দিয়েছিল, আর্থিকভাবে আর কী। তাই হার্ভার্ডকে বেছে নেয়া। আমার কাছে মনে হয়েছিল হার্ভার্ডই সেরা। এখনও তাই মনে করি আমি।”
“আপনি ওখানে অনেক ভাল রেসাল্ট করেছেন,” ব্রিফকেসটা থেকে সিভিটা বের করে দেখতে দেখতে বললেন মি. ল্যাম্বার্ট।
“ধন্যবাদ, আমি আমার যথা সম্ভব চেষ্টা করেছিলাম।”
“আপনার ট্যাক্স আর সিকিউরিটি কোর্সের রেসাল্ট তো অনবদ্য।”
“আমার আসল আগ্রহের জায়গাই তো ওটা।”
“আমরা আপনার লেখাও পড়লাম, দারুণ।”
“ধন্যবাদ। আমি গবেষণার ব্যাপার গুলো উপভোগ করি।”
তারা মাথা ঝাঁকিয়ে এই নির্জলা মিথ্যেটায় সায় দিয়ে দিলো। এটা হয়ত বলতে হয়, তাই বলা। কোনো ল স্টুডেন্টই সচেতন মনে গবেষণাকে ভালোবাসতে পারে না।
“আপনার স্ত্রী সম্পর্কে কিছু বলুন,” নম্র গলায় রয়েস ম্যাকনাইট বললেন। তারা আরেকটা প্রস্তুতি নিচ্ছে ম্যাকডিয়ারকে অস্বস্তিতে ফেলার। প্রতিটা ফার্মই যে কোনভাবেই হোক দুর্বল দিকটা খুঁচিয়ে বের করবেই।
“আচ্ছা। ওর নাম অ্যাবি। ও ওয়েস্টার্ন কেন্টাকি থেকে প্রাইমারি ডিগ্রি নিয়েছে। আমাদের গ্রাডুয়েশনের এক সপ্তাহের মাথায় আমরা বিয়ে করি। গত তিন বছর ধরে ও বোস্টন কলেজের কাছের একটা প্রাইভেট কিন্ডারগার্টেনে পড়াচ্ছে।”
“আর আপনাদের বিবাহিত জীবন?”
“আমরা আমাদের বিবাহিত জীবনে সুখী। একজন অন্য জনকে সেই হাই স্কুল থেকে চিনি।”
“আপনি কোন পজিশনে খেলেন?” ল্যামার জিজ্ঞাসা করল। পরিবেশটা একটু স্বাভাবিক করার জন্য।
“কোয়ার্টারব্যাকে। হাই স্কুলের শেষ ম্যাচে হাঁটুতে ব্যথা পেলাম, তার আগ পর্যন্ত আমাকে ভালোই ডাকা হত খেলায়। একমাত্র ওয়েস্টার্ন কেন্টাকি ছাড়া বাকি সবাই মুখ ঘুরিয়ে নিল ঐ ঘটনার পর। আমি মোটামুটি চার বছরের মতন খেলেছি, এমনকি জুনিয়র টিমেও। কিন্তু হাঁটুর সমস্যা আর পুরোপুরি ঠিক হয় নি।”
“ফুটবল আর এ গ্রেড দুইটা একসাথে কীভাবে সামাল দিতেন?”
“আমি পড়ালেখাটাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছি সবসময়।”
“আমার যতদূর ধারণা, ওয়েস্টার্ন কেন্টাকি খুব একটা ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না,” ল্যামার একটা বাঁকা হাসি দিয়ে মুখ ফসকে কথাটা বলে ফেলল। সাথে সাথেই বুঝতে পারল এভাবে কথাটা বলাটা উচিত হয় নি। ল্যাম্বার্ট আর ম্যাকনাইট ভ্রু কুঁচকে ল্যামারের দিকে তাকালেন এবং তারাও বুঝতে পারলেন এই কথাটা বলার জায়গা এটা না।
“হ্যাঁ, অনেকটা কানসাস স্টেটের মতন,” মিচ চটজলদি জবাব দিয়ে দিলো। তারা চুপ হয়ে গেলেন, একসাথে তিনজন হতবাক আর নির্বাক হয়ে পরস্পরের দিকে তাকালেন। ম্যাকডিয়ার জানে ল্যামান কুন কানসাস স্টেটে পড়াশুনা করেছে। তার সাথে কখনও ল্যামার কুনের দেখা হয় নি। ইন্টারভিউ কারা নিবে সে সম্পর্কেও ধারণা থাকার কথা না ম্যাকডিয়ারের। সে মার্টিনডেল হাবেল পিএস থেকে এদের সবার সম্পর্কে তথ্য নিয়েছে। এই ফার্মের একচল্লিশ জন লয়ারের সবার তথ্য নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেছে। এক পলকেই তার মনে পড়ে গিয়েছে, এই একচল্লিশের একজন ল্যামার কুন পড়াশুনা করেছে কানসাস স্টেটে। সামনে বসা তিন জনই একই সাথে অবাক এবং মুগ্ধ।
“আমার মনে হয় এটা বলাটা আমার উচিত হয় নি,” ভুল বুঝতে পারার সুরে বলল ল্যামার।
“ব্যাপার না,” হাসি মুখে বলল মিচ। এটা মনে রাখার মতও কোনো বিষয় নয়।
অলিভার ল্যাম্বার্ট মৃদু কেশে গলাটা পরিষ্কার করলেন। আবার কিছু ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন শুরু করলেন তিনি।
“মিচ, আমাদের ফার্ম ড্রিংকিং আর বহু নারীসঙ্গের ব্যাপারে মোটামুটি কঠোর। এই ফার্ম পবিত্র জায়গা, ব্যাপারটা এমন নয়। কিন্তু আমাদের কাছে ব্যবসাটাই সব কিছুর ঊর্ধ্বে। আমরা ছোটো ফার্ম কিন্তু সবাই অনেক পরিশ্রম করি, অঢেল টাকা কামাই করি।”
“আমার কোনোটার প্রতিই দুর্বলতা নেই।”
“আমরা আমাদের ফার্মের যে কোনো মেম্বারকে যে কোনো সময় ড্রাগ টেস্ট করার ক্ষমতা রাখি।”
“আমি ড্রাগ নেই না।”
“ভালো। আপনার ধর্মীয় মতবাদ কী?”
“মেথডিস্ট।”
“আচ্ছা। এখানে আপনি সব রকম মানুষই পাবেন। ক্যাথোলিক, ব্যাপটিস্ট, এপিস্কোপলিয়ান। এসব ব্যাপারে আমাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু আমাদের জানা দরকার, তাই জিজ্ঞেস করা। ধর্মীয় দিক থেকেও আমরা চাই আমাদের এই ফার্মে ভারসাম্য থাকুক। আমরা একটা পরিবার। আমরা বিশ্বাস করি হাসি খুশি লয়ার মানেই কর্মক্ষম লয়ার। এজন্যই জিজ্ঞেস করা আর কী।”
মিচ স্মিত একটা হাসি দিয়ে মাথা নেড়ে সায় দিলো।
তারা তিনজন একে অপরের দিকে তাকালেন, এরপর ফিরলেন মিচের দিকে। তার মানে এখন তারা ইন্টারভিউয়ের আসল মুহূর্তে চলে এসেছেন। এই মুহূর্তে ইন্টারভিউ গ্রহণকারীরা এক দুইটা বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার প্রশ্ন করে সচারাচর। মিচ আবার ওর পায়ের উপর পা তুলে বসল। টাকা পয়সার ব্যাপারটাই এখানে মুখ্য বিষয়, মিচ চিন্তা করছে বাকি জায়গা গুলোর তুলনায় এখানে তারা কেমন অফার করবে?
যদি সেটা ভালো না হয়, তাহলে তোমাদের সাথে দেখা হয়ে অনেক ভালো লাগল, মনে মনে ভাবে মিচ। আর যদি সেটা আকর্ষণীয় হয়, তাহলে আমরা পরিবার, বিয়ে, ফুটবল কিংবা চার্চ নিয়ে কথা বলতে পারি।
কিন্তু সে জানে, বাকি সব ফার্মের মতন এরাও এই ব্যাপারটা এড়িয়ে যাচ্ছে। দুনিয়ার যাবতীয় সব নিয়ে কথা বলবে, টাকা পয়সার ব্যাপারে এত সহজে মুখ খুলবে না। মুখ এবার মিচেরই খুলতে হবে। নম্রভাবে কথাকে সে দিকে নিয়ে যেতে হবে।
“প্রথম দিকে আমার কী ধরণের কাজ করা লাগতে পারে?”
তারা আস্তে করে মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দিলেন, তারা এই প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত। ল্যাম্বার্ট আর ম্যাকনাইট দুজনেই তাকালেন ল্যামারের দিকে। এটা তার উত্তর দেয়ার কথা।
“এখানে বছর দুই শিক্ষানবিশ সময়। যদিও এটা অন্য সব ফার্মের মতন না। আমরা আপনাকে সারা দেশে ট্যাক্স সেমিনার গুলোতে পাঠাব। এখানেই শেষ ব্যাপারটা এমন নয়। আপনি আগামী শীতে দুই সপ্তাহ কাটাবেন ওয়াশিংটনে আমেরিকান ট্যাক্স ইনস্টিটিউটে। আপনাকে টেকনিক্যালি দক্ষ করার জন্য যা যা করার সব করব আমরা। তাছাড়া বিভিন্ন ট্রেনিং এর আয়োজন নিয়মিতই করা হয় সবার জন্য। আপনি যদি ট্যাক্সের উপর মাস্টার্স করতে চান, আমরা তারও সব ব্যবস্থা করে দিব আমাদের খরচে। আসলে প্রথম দুই বছর এত রিসার্চ আর প্রাকটিসিং কাজ করতে হবে যে, আপনি বোর হয়েও যেতে পারেন। কিন্তু আমরা আপনাকে মোটা অঙ্কের টাকা দেব এর বিনিময়ে।”
“কী পরিমাণ?”
ল্যামার মুখ ঘুরিয়ে রয়েস ম্যাকনাইটের দিকে তাকাল, তিনি মিচের দিকে তাকিয়ে বললেন, “বেতন আর অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিয়ে আপনি মেমফিসে আসার পর আমরা কথা বলতে পারি।”
“আমি আমার আশানরূপ সুযোগ সুবিধা না পেলে মেমফিসে যাচ্ছি না,” সে হেসে জবাব দিলো, দৃঢ় কিন্তু নম্র কন্ঠে। তার হাতে তিনটা ভালো বেতনের চাকরির অফার আছে।
পার্টনাররা একে অপরের দিকে তাকিয়ে অল্প করে হাসলেন, মি. ল্যাম্বার্ট বলা শুরু করলেন। “আচ্ছা। ব্যাসিক স্যালারি আশি হাজার ডলার প্রথম বছর, সাথে বোনাস। দ্বিতীয় বছর পচাশি হাজার, সাথে বোনাস। স্বল্প ইন্টারেস্ট মর্টগেজ লোন, যাতে করে আপনি একটা বাড়ি কিনতে পারেন। দুটি দেশের ক্লাব মেম্বারশিপ। আর একটা বিএমডব্লিউ, আপনার পছন্দ মত কালারের অবশ্যই।”
তারা মিচের ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে রইলেন। বিস্ময়ে তার চেহারার কী হয়, মুখ ফুটে কী বলে তা দেখার জন্য। সে দাঁত চেপে বসে থেকেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না। এরপরও অবাক হওয়া চাপিয়ে রাখাটা অসম্ভব। সে চাপা হাসি মুখে এনে বিড়বিড় করে বলল, “এরা কি সিরিয়াস?”
আশি হাজার ডলার মেমফিসে মানে সেটা নিউ ইয়র্কে এক লাখ বিশ হাজার ডলারের সমান। আর তারা কী বলল, বিএমডব্লিউ? তার মাজদার অবস্থা যেন তেন। স্টার্ট দিতেই জীবন বেরিয়ে যায়।
“এর সাথে আরও কিছু সুযোগ সুবিধা আছে, ওগুলো নিয়ে মনে হয় মেমফিসে আলাপ করাটাই ভালো হবে।”
হুট করে মেমফিসে যাওয়ার একটা তীব্র বাসনা অনুভব করল মনে মনে। এটা তো নদীর পাড়েই, তাই না?
মুখ থেকে হাসি তাড়িয়ে আবার আগের মতন আলোচনায় ফিরে আসলো সে। শক্ত মুখে, সিরিয়াস ভঙ্গিতে অলিভার ল্যাম্বার্টের দিকে তাকিয়ে বলা শুরু করল সে, যেন টাকা পয়সার ব্যাপারের আলাপ আলোচনা সব ভুলে গিয়েছে।
“আপনাদের ফার্ম সম্পর্কে আমাকে আরও বিস্তারিত বলুন।”
“একচল্লিশ জন লয়ার আছে আমাদের ফার্মে। আমাদের থেকে আকারে বড় বড় ফার্মের থেকে, লয়ার প্রতি আমাদের উপার্জন অনেক বেশি। বলতে পারেন দেশের যে কোনো বড় ফার্মের তুলনায় সেটা ঈর্ষণীয়। আমাদের কাজ শুধু ধনী ক্লায়েন্টদের নিয়ে – কর্পোরেশন, ব্যাংক আর টাকা পয়সাওয়ালা মানুষজন যারা আমাদের মোটা অঙ্কের ফি দিতে পারবে। কখনও কোনো অভিযোগ জানাবে না। আমাদের সাথে যারা ট্যাক্স নিয়ে কাজ করে, তারা আমাদের আন্তর্জাতিক মানের সেবায় খুশি। আমাদের সেবা তাদের জন্য যেমন লাভ জনক তেমনি ঝামেলা বিহীন।”
“ফার্মের পার্টনার হতে কতদিন সময় লাগে?”
“গড়ে বছর দশেক, অবশ্যই কঠিন দশ বছর। আমাদের পার্টনারদের জন্য বছরে হাফ মিলিয়ন উপার্জন করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বেশির ভাগই পঞ্চাশের আগেই অবসরে চলে যায়। আপনাকে কোম্পানির সাথের সব দেনা পাওনা মিটমাট করতে হবে। সপ্তাহে আশি ঘন্টা সময় দিতে হবে। তবে এসব কিছুর ফল আপনি পাবেন, যখন আপনাকে আমরা কোম্পানির পার্টনার বানাবো।”
ল্যামার একটু ঝুঁকে বলা শুরু করল, “ছয় ডিজিটের উপার্জনের জন্য আপনাকে কোম্পানির পার্টনারই হতে হবে, ব্যাপারটা কিন্তু এমন নয়। আমি এখানে সাত বছর হলো আছি। কিন্তু আরও চার বছর আগেই আমি ছয় ডিজিট পার করেছি।”
মিচ কিছুক্ষণের জন্য ভাবল। হয়ত বছর ত্রিশের সময় ইনকাম লাখ ছাড়াবে। এমনকি দুই লাখের কাছাকাছিও চলে যেতে পারে। মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে।
তারা সবাই মিচকে মনযোগ সহকারে দেখছেন। তার মনের মধ্যে কী চলছে, কীসের হিসাব করছে, হয়ত তারা অনুমান করতে পারছেন।
“মেমফিসে ইন্টারন্যাশনাল ট্যাক্স ফার্মের কাজটা কী?” সে জিজ্ঞেস করল।
মি. ল্যাম্বার্ট হাসি মুখে সবার দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়া শুরু করলেন, “বেশ ভালো প্রশ্ন।” চোখ থেকে চশমাটা খুলে পাশে রাখতে রাখতে বললেন, “মি. বেনডিনি ১৯৪৪ সালে এই ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নিজে ট্যাক্স লয়ার ছিলেন। ফিলাডেলফেলিয়ায় কাজ করতেন। সাউথের কিছু ধনী কাস্টমার তিনি যোগাড় করে ফেললেন। তাদের নিয়েই কাজ করার সাহস দেখালেন। মেমফিসে এসে ঘুঁটি গাড়লেন। পঁচিশ বছর ধরে তিনি ট্যাক্স লয়ার ছাড়া আর কাউকে কোম্পানিতে নেন নি। তার দারুণ ফলাফলও পেয়েছিলেন তিনি। আমাদের কেউ আসলে মেমফিসের না। কিন্তু আমাদের ওখানে ভালো লাগে। ঐ ওল্ড সাউথার্ন শহরটাই আমাদের সব কিছু এখন। সে যাই হোক, বেনডিনি সাহেব মারা যান ১৯৭০ সালে।”
“এখন কোম্পানির পার্টনার কয়জন?”
“বিশ জন। সক্রিয় আর কী। আমরা একটা ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণের করার চেষ্টা করি সবসময়। একজন পার্টনারের বিপরীতে একজন করে সহযোগী। জানি এটা ব্যয়বহুল। তবু আমাদের কাজ করার ধরণটাই আসলে আলাদা।”
“চল্লিশ পঁয়তাল্লিশের মধ্যে আমাদের সব পার্টনারই মাল্টিমিলেনিয়ার হয়ে যায়,” রয়েস ম্যাকনাইট পাশ থেকে বললেন।
“সবাই?”
“ইয়েস স্যার। আমরা এর গ্যারান্টি দিচ্ছি না। কিন্তু আপনি জয়েন করেন। কঠোর পরিশ্রমে দশ বছর পার করেন। পার্টনার হন। এরপর আরও দশ বছর অপেক্ষা করেন। আপনি যদি পঁয়তাল্লিশে মিলেনিয়ার না হন, তাহলে সেটা গত বিশ বছরে প্রথম ঘটনা হবে।”
“দারুণ পরিসংখ্যান।”
“এই ফার্মটাই দারুণ, মিচ,” অলিভার ল্যাম্বার্ট বললেন, “আর আমরা এসব নিয়ে যথেষ্ট গর্ব করি। আমাদের নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ। আমরা একে অপরকে যেভাবে পারি সহযোগিতা করি। অন্যান্য বড় ফার্মের মতন আমাদের মধ্যে, একজনের সাথে অন্যজনের খুনে প্রতিযোগিতা নেই। আমরা খুব সাবধানতার সাথে নিয়োগ দেই। আমরা জানি আমরা কাকে নিয়োগ দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে প্রতিটি নিয়োগপ্রাপ্ত সহযোগী লয়ারকে যত দ্রুত সম্ভব কোম্পানির পার্টনার বানানো। তার জন্য আমরা যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ, শ্রম, সময় ব্যয় করি। বিশেষ করে নতুনদের পিছনে। এসব আপনি অন্যান্য ফার্মে পাবেন না। আমাদের ফার্ম ছেড়ে চলে গিয়েছে কোনো লয়ার, এমন ঘটনা নেই বললেই চলে। আমাদের লয়ারদের ভালো রাখার দায়িত্ব পুরোটাই আমরা নিজেদের কাধে নিয়ে নেই।”
“আমার কাছে আরেকটা দারুণ পরিসংখ্যান আছে, মিচ,” মি. ম্যাকনাইট যোগ করলেন। “গত বছর, আমাদের মতন কিংবা আমাদের চেয়ে বড় ফার্ম গুলোতে কর্মচারিদের টার্ন ওভার মানে ছাটাই, চাকরি ছেড়ে দেয়া বা নতুন কর্মচারি প্রতিস্থাপনের হার ছিল ২৮ শতাংশ। আর সেটা বেনডিনি, ল্যাম্বার্ট এন্ড লকিতে শূন্য শতাংশ। বুঝতে পারছেন, গত বছর এই হার ছিল আমাদের শূন্য। কোনো লয়ারের আমাদের ফার্ম ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা শেষ কবে ঘটেছে, তা মনে করতে স্মৃতি হাতড়াতে হবে।”
তারা মনযোগ দিয়ে এখনও মিচকে দেখছেন। সম্পূর্ণরূপে তার আস্থা অর্জন করতে পেরেছে কি না তাই খেয়াল করছেন। কোম্পানির প্রতিটা নিয়ম আর শর্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মিচের এই ফার্মে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা, মিচকে রাজি করানোর জন্য তাদের প্রয়াস যেন সব নিয়ম কানুন নিয়ে আলোচনাকে ঢেকে দিয়েছে। তারা তাদের দিক থেকে যতটা সম্ভব ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। বাকিটা নিয়ে পরেও কথা বলা যাবে।
অবশ্যই তারা যেসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, তার চেয়ে ঢের বেশি তথ্য তাদের হাতে আছে। যেমন তার মা এখন থাকছে, পানামা বিচের কাছের এক সস্তা কলোনিতে। তাদের ছেড়ে গিয়ে, বিয়ে করেছিল এক ট্রাক ড্রাইভারকে। যে লোক মারাত্মক মদখোর। তারা জানেন কয়লা খনিতে তার বাবা মারা যাবার পর, তার মা একচল্লিশ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ পেয়েছিল। পুরোটাই তিনি নষ্ট করেছেন। ভিয়েতনামে বড় ছেলে মারা যাবার পর তার মাথা আরও খারাপ হয়ে যায়।
তারা জানেন, মিচ এই ব্যাপারটাও এড়িয়ে গিয়েছে যে, সে বড় হয়েছে তার ভাই রে এর কাছে। নিদারুণ অভাবের মধ্যে। রে এর অবর্তমানে কিছু সহানুভূতি দেখানো আত্মীয়স্বজনদের কাছে। অভাবে পিষ্ট মানুষ গুলোর মধ্যে যে উপরে ওঠার প্রবল বাসনা থাকে, এই ব্যাপারেও তারা অবগত। সে সপ্তাহে ত্রিশ ঘন্টা সারারাত খোলা থাকা সুপার মার্কেটে কাজ করেছে, ফুটবল খেলেছে, সাথে সাথে অসাধারণ রেসাল্টও করেছে। তারা জানেন সে এসব করতে গিয়ে হয়ত ঠিকভাবে ঘুমাবার সময়টাও পায় নি। তার এসব করতেই হতো। তার পেটের ক্ষুধা কেউ এসে মিটিয়ে দিয়ে যেত না।
“আপনি তাহলে আমাদের সাথে সাথে দেখা করতে আসছেন, তাই তো?” অলিভার ল্যাম্বার্ট জিজ্ঞেস করলেন।
“কখন আসতে হবে?” মিচ জিজ্ঞেস করে। কল্পনায় ভাসছে থ্রি সিরিজের সানরুফ সহ কালো বিএমডব্লিউ সেডান।
***
পুরনো ভাঙাচুরা মাজদা হ্যাচব্যাকটা দাঁড়িয়ে আছে, কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন নিয়ে। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে পড়ে এই অবস্থা। অ্যাবি দরজাটা খুলে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করল। দুই বারের চেষ্টায় সফল হলো সে। চাবি ঢুকিয়ে গাড়িটা স্টার্ট দিলো। মাজদা চলতে শুরু করল ধীরে ধীরে। গাড়ির গতি বাড়ার সাথে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল সে।
তিনটা জব অফার মিচের কাছে। আর একটা নতুন গাড়ি মাস চারেকের মধ্যে। অ্যাবি আর একটু ধৈর্য ধরলেই পারে। গত তিন বছর ধরেই অভাবের সাথে লড়াই করে আসছে তারা। দুই রুমের এক স্টুডেন্ট এপার্টমেন্টে কোনোমতে জীবনযাপন করছে। ক্লাসমেট আর সহকর্মীদের নানা কটু কথা ওরা এড়িয়ে চলছে প্রতিনিয়ত। কেন্টাকি থেকে আসা বলেও হয়ত ওদের একটু অন্যরকম চোখে দেখছে। তবু সব কিছু পাশ কাটিয়ে সফলতা ঠিকই ওদের হাতে ধরা দিচ্ছে।
অ্যাবি নিউ ইয়র্কের চেয়ে শিকাগোই বেশি পছন্দ করে। যদিও স্যালারি কম ওখানে, তবু এই বোস্টন থেকে অনেক দূরে, কেন্টাকির কাছে ওটা। তবে মিচ কী করতে যাচ্ছে, তা শুধু সে একাই জানে। কিছুই জানায় না অ্যাবিকে। গোপন করে রেখেছে সব নিজের কাছেই। এমনকি স্বামীর সাথে নিউ ইয়র্ক আর শিকাগোতে যাওয়ার আমন্ত্রণও পায় নি সে। মিচ নিয়ে যায় নি সাথে করে। আসলেই কী করবে মিচ তা অনুমান করতে করতে ক্লান্ত অ্যাবি।
পাহাড়ের কাছে গাড়িটা পার্ক করে হাঁটতে শুরু করল অ্যাবি। দুই ব্লক পেরিয়ে চলে আসলো তার এপার্টমেন্টের কাছাকাছি। দাঁড়িয়ে থাকা, দুই তলা ত্রিশটা বিল্ডিং এর একটাতেই ওদের এপার্টমেন্ট। দরজার সামনে এসে দাঁড়াল অ্যাবি। পার্স থেকে খুঁজে চাবি করতে যাবে তখন খট করে দরজাটা খুলে গেল। মিচ! মিচ টেনে অ্যাবিকে ঘরের মধ্যে নিয়ে গেল। আলতো ধাক্কায় ফেলে দিলো সোফার উপর। ঝাপিয়ে পড়ল আদর করার জন্য। গলায় ঠোঁট ছুঁইয়ে জড়িয়ে ধরল শক্ত করে। অ্যাবি উপভোগ করছে প্রতিটা স্পর্শ। দশ মিনিটের মতন একটা চুমো মনে করিয়ে দিলো সেই প্রেমের প্রথম দিকের কথা। চুমো ব্যাপারটা তখন আনন্দের ছিল, রহস্যের ছিল, প্রচণ্ড আকাঙ্ক্ষিত ছিল।
“এটা কী ছিল?” অ্যাবি বলল। “উপলক্ষটা কী?”
“কোনো গন্ধ পাচ্ছ?” মিচ জিজ্ঞেস করে।
অ্যাবি নাক টেনে গন্ধ নেয়, চারপাশে তাকায়, “হুম। পাচ্ছি। কীসের গন্ধ?”
“চিকেন চাউমিন আর এগ ফু ইয়ং। অং বয়েজ থেকে এনেছি।”
“বুঝালাম। এখন কারণটা তো বলো!”
“সাথে এক বোতল এক্সক্লুসিভ চাবলিস।”
“তুমি কী করেছে মিচ, বলবে আমাকে?”
“আমার সাথে আসো।” রং করা ছোট কিচেন টেবিলের দিকে এগিয়ে গেল দুজন। লিগ্যাল প্যাড, কেসবুকের পাশেই ওয়াইনের বোতলটা রাখা। তার পাশে চাইনিজ খাবার গুলো। আইনি সরঞ্জামগুলো সরিয়ে রেখে টেবিলটা ফাঁকা করল। খাবার গুলো বিছিয়ে নিল ফাঁকা জায়গায়। ওয়াইনের বোতলটা খুলে গ্লাসে ঢালল মিচ।
“আমি আজকে দারুণ একটা ইন্টারভিউ দিয়েছি।”
“কোথায়?”
“তোমার মনে আছে, ঐ যে মেমফিসের এক ফার্ম থেকে চিঠি পেলাম গত মাসে?”
“হ্যাঁ। কিন্তু তুমি অতটা আগ্রহ দেখাও নি।”
“হ্যাঁ ওটাই। আমি মুগ্ধ। ওখানে সব ট্যাক্স নিয়ে কাজ আর টাকা পয়সাও দিবে বেশ।”
“কী পরিমাণ?”
মিচ প্যাকেট খুলে চাউমিন ঢালতে লাগল দুই প্লেটে। সয়া সস ছিটিয়ে দিলো উপরে। অ্যাবি অপেক্ষা করছে উত্তরের। আরেকটা প্যাকেট থেকে এগ ফু ইয়ং বের করে ভাগ করতে শুরু করল। ওয়াইনে চুমুক দিয়ে হাসি মুখে তাকাল অ্যাবির দিবে।
“কত দিবে?” অ্যাবি আবার জিজ্ঞেস করে।
“শিকাগোর চেয়েও বেশি। ওয়াল স্ট্রিটের চেয়েও বেশি।”
অ্যাবি ওয়াইনে একটা বড় চুমুক দিয়ে দ্বিধার চোখে তাকাল মিচের দিকে। ভ্রু জোড়া উঁচু করে, কপাল কুঁচকে আরও কিছু শোনার অপেক্ষা করল। চোখ ছোট করে জিজ্ঞেস করল, “সেটা কত?”
“আশি হাজার প্রথম বছর। সাথে বোনাস। পঁচাশি হাজার দ্বিতীয় বছর। সাথে বোনাস।” চাউমিন মুখে নিয়ে উদাসীন আর নিঃস্পৃহ গলায় জবাব দিলো মিচ।
“আশি হাজার?” অ্যাবি আবার জিজ্ঞেস করল।
“হ্যাঁ সোনা। আশি হাজার। টেনেসিতে আশি হাজার ডলার মানে একশ বিশ ডলার নিউ ইয়র্কে।”
“নিউ ইয়র্কে কে যেতে চায়?” অ্যাবি জিজ্ঞেস করে।
“সাথে লো ইন্টারেস্টে মর্টগেজ লোন।”
মর্টগেজ – শব্দটা এই এপার্টমেন্টে কখনও উচ্চারণ করা হয়েছিল কি না মনে পড়ছে না অ্যাবির। এমনকি শেষ কবে, নিজেদের একটা বাড়ি কিংবা এরকম কিছু নিয়ে কথা বলেছে, ভুলে গেছে সে। শেষ কয়েক মাস ধরে তাদের আলোচনায় যদিও একটা ভালো থাকার জায়গা, কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে ভবিষ্যতে কিছু একটা করার বিষয়গুলো আসলেও, আরও অনেক পরে হয়ত মর্টগেজের চিন্তা আসত।
ওয়াইনের গ্লাসটা টেবিলের উপর রেখে অ্যাবি চোখে মুখের বিস্ময় লুকিয়ে বলল, “তুমি কী বলেছ, আমি শুনি নি।”
“লো ইন্টারেস্টে মর্টগেজ লোন, যাতে আমরা নিজেদের জন্য একটা বাড়ি কিনতে পারি। তাদের কাছে এটাও খুব ইমপর্ট্যান্ট, তাদের লয়াররা যেন জাঁকজমক জীবনই যাপন করে। তাই যতটা কম ইন্টারেস্টে সম্ভব তারা টাকার ব্যবস্থা করে দিবেন।”
“তার মানে তুমি বলছ, আমাদের বাড়ি, পাশে বাগান, উঠোন সব থাকবে?”
“হ্যাঁ। অনেক টাকা ভাড়ার ম্যানহাটনের এপার্টমেন্ট না। তিনটা বেড রুমের বাড়ি। উঠোন, বাগান, ড্রাইভ ওয়ে, দুইটা গ্যারেজ। আর হ্যাঁ, গ্যারেজে বিএমডব্লিউ।”
কয়েক মুহূর্ত সময় লাগল অ্যাবির কথাটা বুঝতে। এরপর বলল, “দাঁড়াও দাঁড়াও, কী বললে? বিএমডব্লিউ? কার বিএমডব্লিউ?”
“আমাদের, সোনা। আমাদের বিএমডব্লিউ। ফার্ম জয়েনের সাথে সাথেই বিএমডব্লিউ দিচ্ছে আমাদের। এটা ধরতে পারো জয়েনিং বোনাস। প্রতি বছর আরও পাঁচ হাজার করে ধর এটার জন্য। আমরা নিজেদের পছন্দের কালার নিতে পারব। আমার মনে হয় কালোটাই ভালো হয়। তোমার কী মনে হয়?”
“আর ভাঙ্গাচুরা গাড়ি না, লেফটওভার, অন্যের ব্যবহার করা জিনিস না,” মাথা নেড়ে ধীরে ধীরে বলল অ্যাবি।
মুখে চাউমিন নিয়েই হাসি দিয়ে তাকাল অ্যাবির দিকে মিচ। অ্যাবির মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছে। মিচ এসব বলছে কী? মিচ হয়ত বলতে পারত, নতুন ফার্নিচার কিংবা ওয়ালপেপারের কথা। অনেক দিন পর পুলে যাওয়ার কথা। কিংবা ওদের বাচ্চা নিয়ে আলোচনা। কালো চোখ, হালকা বাদামী চুলের ফুটফুটে একটা বাচ্চার কথা।
“আরও কিছু সুযোগ সুবিধা আছে, সেসব নিয়ে তারা পরে কথা বলবে।”
“আমি বুঝতে পারছি না, এরা এতো সুযোগ সুবিধা কেন দিবে? এরা এতো উদার কেন হবে?”
“আমিও একই প্রশ্ন করেছিলাম। আসলে তারা খুব যাচাই বাছাই করে নিয়োগ দেয়। আর তারা তাদের সেরা লয়ারদের জন্য তাই টাকা পয়সার ব্যাপারে কোনো কার্পণ্য করে না। তাদের টার্ন ওভার রেটও শূন্য। এছাড়া সেরা লয়ারদের মেমফিসে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজী করাতেও মনে হয়, বেশি টাকা অফার করা ছাড়া আর কোনো উপায় তাদের নেই।”
“এটা বাড়ির কাছাকাছিই হবে,” অ্যাবি মিচের দিকে না তাকিয়েই বলল।
“আমার কোনো বাড়ি ঘর নেই। বলতে পারো তোমার বাবা মায়ের কাছাকাছি হবে এটা। কিন্তু আমি এই ব্যাপারটা নিয়েই চিন্তিত।”
অ্যাবি কথাটা ঘুরিয়ে অন্য দিকে নিয়ে গেল, যেন ওর পরিবার সম্পর্কে সবটাই বলা শেষ। “তুমি রে এর কাছাকাছিও থাকতে পারবে।”
মিচ আস্তে করে মাথা নাড়ল। ডিমটা মুখে পুড়ে চিন্তা করল অ্যাবির বাবা মায়ের কথা। প্রথম দেখা। ড্রাইভওয়েতে এসে নেমেছিলেন তাদের দামী ক্যাডিলাক থেকে। এসে চারপাশের পরিবেশ দেখে ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েছিলে। তারা হয়ত ভাবছিলেন, এই চালচুলোহীন ছেলে; টাকা পয়সা, পরিবার ছাড়া সদ্য পাস করা পঁচিশ বছর বয়সী ল স্টুডেন্ট কীভাবে তাদের মেয়ের জন্য সব কিছু ম্যানেজ করবে? এই সামর্থ্য এই ছেলের আছে? অনেক কষ্টে মুখে হাসি ফুটিয়ে তারা কথা বলছিলেন তবু মিচের সাথে। যেন সব কিছুই একদম ঠিকঠাক। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই কথা বার্তা শেষ করে বেরিয়ে এসেছিলেন তারা। হয়ত ওখানে বেশিক্ষণ থাকলে মি. সাদারল্যান্ড মিচকে জিজ্ঞাসা করে বসতেন, এই ঘুপচি কলোনির ভাড়া কত? মিচ হয়ত নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বলে দিত, এসব নিয়ে আপনার না ভাবলেও চলবে। কথা অত দূর গড়ায় নি। মনে ভীষণ কষ্ট নিয়ে তারা ফিরে গিয়েছিলেন কেন্টাকিতে। সেই তারা, তাদের পরিচিত জনেরা, এখন জানবে, মেমফিসে কী দারুণ অবস্থায় কাটাচ্ছে তাদের মেয়ে আর মেয়ে জামাই। সব কিছুর জন্য অ্যাবি তাদেরকে সরি বলতেই পারে। কিন্তু অ্যাবি এই কাজটা হয়ত করবে না। প্রথম থেকেই ভীষণ তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে আসছিলেন তারা মিচকে। তারা মিচকে এতোটাই তাচ্ছিল্য করেছিলেন যে, দুজনের বিয়েতে পর্যন্ত তারা আসেন নি।
“তুমি কখনও মেমফিসে গিয়েছিলে?” জিজ্ঞেস করে মিচ।
“একদম ছোটো থাকতে। এক গির্জায় গিয়েছিলাম যতোটা সম্ভব। কিন্তু আমার কিছুই মনে নেই, শুধু মনে আছে একটা নদীর পাশে শহরটা ছিল।”
“তারা আমাদেরকে মেমফিসে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।”
“আমাদের! মানে আমাকেও?”
“হ্যাঁ। তারা তোমাকে নিয়েই যেতে বলেছে।”
“কখন?”
“সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই। তারা আমাদের বিমানে করে বৃহস্পতিবার বিকালে নিয়ে যেতে চায়, আমরা ছুটিটা ওখানেই কাটাব।”
“আমি কিন্তু অলরেডি ফার্মটাকে ভালোবেসে ফেলেছি”


অনুবাদ: রিয়াদুল রিয়াদ
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৯
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গৃহবধূ থেকে প্রধানমন্ত্রী; অভিভাবক শূন্য হলো বাংলাদেশ |

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১২


খালেদা জিয়া। ইস্পাতসম বজ্রকঠিন দেশপ্রেমের নাম খালেদা জিয়া। যিনি ভালো বেসেছেন দেশকে, নিজের জীবনের চেয়েও দেশকে ভালো বেসেছেন। দেশের বাহিরে যার নেই কোন লুকানো সম্পদ। নেই বাড়ি, গাড়ি অথবা... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৫ সালের সেরা মশকরা কোনটি

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৪



ইয়ে মানে বছর শেষ। ২০২৫ সাল বিদায় নিচ্ছে । তা আপনার কাছে ২০২৫ সালের সেরা মশকরা কোনটি ?


আমার কাছে সেরা মশকরা হচ্ছে- এনসিপির জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করা।

আরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেগম খালেদা জিয়াঃ এক দৃঢ়চেতা, সাহসী অধ্যায়ের সমাপ্তি

লিখেছেন সামহোয়্যারইন ব্লগ টিম, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৭



প্রিয় ব্লগার,
আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বেগম খালেদা জিয়া আর আমাদের মাঝে নেই, ইন্না লিল্লাহি ওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতির মাঠে বিরাট শূন্যতা

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৯

 
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগম খালেদা জিয়া এক উল্লেখযোগ্য চরিত্র। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির টালমাটাল পরিস্থিতিতে তিনি দলটির হাল ধরেন। সেনানিবাসে গড়ে উঠা দলটাকে রাজপথে বেড়ে উঠতে গৃহবধূ থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদা জিয়া মরিয়া প্রমাণ করিলেন , তিনি মরেন নাই ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৮


বেগম খালেদা জিয়া মারা গেছেন। এই খবরে জাতি শোকাহত। কিন্তু একদল মানুষ আছে যারা উনার মৃত্যুর পরেও নিজেদের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থে তার মৃত্যু নিয়ে ঘৃণ্য মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। বদনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×