বিজ্ঞান জীবনের নিদৃষ্ট কোন সংজ্ঞা দিতে না পারলেও; জীবণকে বেঁধে ফেলেছে, কতকগুলো বৈশিষ্ঠের মাঝে
. কোষীয় কাযর্কলাপ: জীবের দেহে প্রাণ থাকলে , তার কোষীয় কাযর্কলাপ চলতে থাকে। মেরিল্যান্ড ও ক্যালিফোর্নিয়ার আবিষ্কৃত কোষে যা ঘটে।
. প্রজণন: জীব হবে প্রজণনশীল। এরা Asexual, Sexual বা Budding পদ্ধতিতে বংশবৃদ্ধি করবে।
. Metabolism বা বিপাক ক্রিয়া ঘটবে।
. প্রতি প্রজন্মে কিছুটা Mutation বা পরিব্যাপ্তি ঘটবে।
. Ecosystem বা বাস্তুসংস্থানে অন্য জীব ও পরিবেশের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়া থাকবে।
এই বৈশিষ্ট আদি প্রাণ ব্যাক্টেরিয়া থেকে শুরু করে উচু শ্রেণীর সকল জীবের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু যদি ভাইরাসের কথা বিবেচনা করি তবে? এদের কোষে সাধারণত প্রোটিন নির্মিত ক্যাপসিড (ভাইরাসের খোলস) এবং DNA অথবা RNA থাকে। ভাইরাস এমনিতে জড় বস্তুর ন্যায়, কিন্তু যখন এটি পোষক কোষে সংক্রামিত হয়, তখন এটিতে প্রাণের স্পন্দন দেখা দেয়। বিভিন্ন অনুজীববিদ ভাইরাসের বিভিন্ন ভাবে সংজ্ঞা দিয়েছেন। লুরিয়া ও ডার্নেল ১৯৫৭ সালে সংজ্ঞা প্রদান করেন, “ভাইরাস এমনিতর অস্তিত্ব যার জিনোম নিউক্লিক এসিডে গঠিত এবং যা পোষক কোষের ভেতরে, সংস্লেষণের মাধ্যমে অনুলেপন সৃষ্টি করে ও বিশেষ দ্রব্যের সংশ্লেষণ করে সম্ভাব্য জিনোম অন্য কোষে সঞ্চালিত করে।” সংজ্ঞাটা এট্টু কঠিন হয়ে গেল না! সবচেয়ে মজার কিন্তু ছোট্ট সংজ্ঞা দিয়েছেন বোধহয় ১৯৬৪ সালে হ্যাহোন, “A virus is a particle of heredity in search of chromosome! অর্থাৎ ক্রোমোজোমের সন্ধানে প্রাপ্ত বংশগতির একটি খন্ডাংশই হচ্ছে ভাইরাস!”
ভাইরাসকে পূর্ণাঙ্গ জীব বা অনুজীব বলা যায় না কারন, পোষক কোষের বাইরে এদের জীবনের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। এদের কোষে অনান্য জীব কোষের মত Organelles যেমন সাইটোপ্লাজম, প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া ইত্যাদি নেই। সুতরাং এদের কোষীয় কাযর্কলাপ নেই! তবু কিছু অনুজীববিদ এদের Protobiota বলে অভিষিক্ত করেন! ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রজনন শব্দটা ব্যাবহার করা যায় না, কারন এরা পোষক কোষের DNA এর সাথে নিজেদের DNA যুক্ত করে পোষক কোষকে বাধ্য করে নিজেদের কপি তৈরি করতে। এদের নিজস্ব জিনগত বৈশিষ্ট্য নিউক্লিক এসিডে সংরক্ষিত থাকে, এবং তাতে মিউটেসান ঘটতে দেখা যায়; কিন্তু হয় DNA থাকে অথবা RNA থাকে, দুই ধরনের নিউক্লিক এসিড একসাথে থাকে না। এ তো গেল ভাইরাসের জীব বৈশিষ্ট্য, কিন্তু বায়োকেমিস্টরা একে জড় পদার্থ হিসাবে দাবি করে। তাদের দাবিও অমূলক নয়। ভাইরাসকে অনায়াসে স্ফটিকে রুপান্তর করা যায়, কোনরূপ অভ্যান্তরীন পরিবর্তন ছাড়ায়। এদের বিপাকীয় এনজাইম নেয়, শক্তির প্রয়োজনও হয় না; কারন এরা পুরোপুরি পোষক কোষের উপর নির্ভরশীল। তাই এদের খুব সহজেই জৈব-রাসায়নিক পদার্থ বলা যায়। তারপরও জীব ও জড় উভয় বৈশিষ্ট্য থাকার কারনে ভাইরাস একটি অনন্য সত্বা। সাধারণত এদের অকোষীয় অনুজীব বলা হয়। এরা জীব ও জড়ের মধ্যবর্তী অবস্থা যা ল্যাবে তৈরি করা যায়, সুতরাং একদিন নিশ্চয় স্বতন্ত্র জীব তৈরি করা সম্ভব হবে। মেরিল্যান্ড ও ক্যালিফোর্নিয়ার অবস্য অনেকটা পথ এগিয়ে গেছেন এব্যাপারে।
আগের পর্ব
চলবে>>>
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৫৪