বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তার সদস্য দেশগুলির উপর কোনও প্রশাসনিক কর্তৃত্ব নেই এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু করোনার মত জরুরী পরিস্থিতিতে তথ্য প্রকাশে বা পরামর্শ প্রদানে অনেক ক্ষেত্রে এই সংস্থা বিলম্ব করেছে। অনেক ক্ষেত্রে একাধিক বার তাদের নির্দেশনা পরিবর্তন করেছে। এতে তাদের কর্মতৎপরতা ও দক্ষতা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সমালোচিত হয়েছে। নিম্নলিখিত অভিযোগ সমূহ এই সংস্থার বিরুদ্ধে করা হচ্ছে;
১। করোনা ভাইরাস যে মানুষের মাধ্যমে ছড়াতে পারে এটা নিশ্চিত হতে WHO অনেক দেরি করেছে। যার ফলে রোগটা দ্রুত ছড়িয়ে পরে।
২। করোনা ভাইরাস যে একটা বৈশ্বিক সমস্যা হতে যাচ্ছে তা উপলব্ধি করতে WHO বিলম্ব করেছে। একই গ্রুপের SARS এবং MERS ভাইরাস সম্পর্কে WHO এর অভিজ্ঞতা থাকার পরও এই বিলম্ব গ্রহণ যোগ্য নয়। জানুয়ারির ৩০ তারিখেও উহান থেকে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধের ব্যাপারে কোনও পরামর্শ দিতে তারা প্রয়োজন বোধ করেনি। অথচ আরও আগেই এ ব্যাপারে তাদের পরামর্শ দেয়া উচিত ছিল।
৩। প্রথম দিকে WHO মাস্ক ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করেছে। অথচ এখন তারা বলছে মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। এসব বুঝতে এত দেরী হওয়াটা এরকম একটা বৈশ্বিক সংস্থার ক্ষেত্রে আশা করা যায় না।
৪। WHO কিছুদিন আগে বলেছে করোনা উপসর্গবিহীন মানুষের করোনা ছড়ানোর ঘটনা বিরল। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে এটা বিরল ঘটনা নয় শুধু ছড়ানোর মাত্রাটা এখনও নির্দিষ্টভাবে জানা যায় নাই।
৫। হাইড্রক্সিক্লরকুইন এর ব্যাপারে বার বার মত পালটিয়েছে। একবার এর উপর গবেষণাকে উৎসাহিত করেছে আবার পরে বলেছে এটার উপর গবেষণার দরকার নাই।
৬। প্রথমদিকে চীন যে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছিল এটা ধরতে WHO বিলম্ব করেছে। এটা ইচ্ছাকৃত/ অনিচ্ছাকৃত উভয়টাই হতে পারে। চীনের প্রতি WHO র পক্ষপাতিত্ব আছে বলে অনেকে মনে করে। চীনের স্বচ্ছতার ও কর্মতৎপরতার ব্যাপারে তারা প্রশংসা করেছে। অথচ চীন যে তথ্য লুকিয়েছে এটা এখন সবাই জানে।
৭। তাইওয়ান ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে করোনা সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক তথ্য WHO কে দিয়েছিল। যদিও তাইওয়ান WHO এর সদস্য নয় বরং WHO একে চীনের অংশ মনে করে। তারপরও ব্যাপারটার দ্রুত তদন্ত করা উচিত ছিল নিজস্ব উদ্যোগে। কিন্তু তখন তারা এটাকে গুরুত্ব দেয় নাই।
৮।
হালনাগাদ নতুন তথ্য -
০৮ জুলাই ২০২০
করোনা বাতাসেও ছড়াতে পারে এ কথা অবশেষে স্বীকার করতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এত দিন ধরে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে গুরুত্ব দেয়নি। বাতাসে সম্প্রতি ভাইরাস ছড়ানোর বিষয়টি নিয়ে সংস্থার আনুষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ২০০ জনের বেশি গবেষক। তাঁরা স্বাস্থ্য সংস্থাকে একটি খোলা চিঠি লেখেন, যাতে জাতিসংঘের এই সংস্থাকে এ ঝুঁকি সম্পর্কে যথাযথ সতর্ক করতে ব্যর্থ বলে অভিযোগ দেওয়া হয়।
শুরুতে যদি এই সংস্থা উপরে বর্ণীত বিষয়গুলি নিয়ে আরেকটু তৎপর হত তাহলে করোনায় মৃত্যু কম হত।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:২৬