somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বার বার মুখ দিয়ে বাংলা শব্দ বের হচ্ছিল।

১১ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১০ই আগষ্ট ২০১৫, গত কালকের ঘটনা।
ক্লাস শেষ করে দুপুরের দিকে আমরা তিন বন্ধু মিলে বাসায় ফিরছিলাম।
তখন, কয়েকজন রিক্সাওয়ালা আমাদেরকে ডাকলো।
দূর থেকেই দেখলাম, তাদের সাথে দু’জন ভিনদেশি রয়েছে। একজন পুরুষ এবং অপরজন মহিলা।
আমরা কাছে যেতেই এক রিক্সাওয়ালা বললো, ‘মামা দেখেন তো উনারা কই যাবে’।
আমার বন্ধু সৌরভ তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতেই মহিলাটি বললেন যে তাঁরা কিছু কেনাকাটা করবেন, কিন্তু কোন বড় শপিংমল থেকে নয়, সাধারণ একটা মার্কেট থেকে।
বন্ধু তাদেরকে নিউ মার্কেটে পাঠিয়ে দিতে চাইতেই আমি বললাম, ‘ না ওটা অনেক দূরে উত্তরা থেকে, তার চেয়ে রাজলক্ষীতে যাক’।
ঠিক হলো তাদেরকে একটা রিক্সায় করে পাঠিয়ে দেবো।
আবার আমি ভাবলাম, আমার যেহেতু কাজ নেই তাহলে আমিও যাই সাথে তাদেরকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসতে।
ঠিক হলো আমিও যাবো সাথে।
আমাদেরকে রিক্সায় উঠিয়ে দিয়ে চলে গেলো আমার দুই বন্ধু তারানা এবং সৌরভ।
তিনজনেই একটি রিক্সায় উঠে পরলাম সোনারগাঁও জনপদ থেকে রাজলক্ষীর উদ্দেশ্যে।
রাস্তায় যেতে যেতে অনেক কথা হলো মহিলাটির সঙ্গে।
তার নাম জেল (পুরো নাম জানি না), তিনি একজন ব্যারিস্টার এবং থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে।
তার কিছু কথা আমার খুব ভালো লেগেছিলো আবার কিছু কথা খুবই খারাপ।
তিনি যেতে যেতে যখন বললেন, আমার দেশের মতো গরীব দেশ আর কোথাও তিনি দেখেননি তখন আমার খুবই খারাপ লেগেছিলো। আবার যখন বললেন, আমার দেশের মানুষের মতো ভালো মনের মানুষ তিনি আর কোথাও দেখেননি তখন গর্বে আমার বুক ফুলে উঠেছিল।
একসময় তিনি কাঁঠালের বর্ণনা দিয়ে জানতে চাইলেন, এটা জ্যাকফ্রুট কিনা, আমি বললাম হ্যাঁ।
তাকে বাংলায় ‘কাঁঠাল’ বলতে শেখাতে গিয়ে আমি যখন বারবার কাঁঠাল বলছিলাম তিনি তখন বলছিলেন ‘থাথাল’। তবে, কয়েকবার চেষ্টার পর অবশ্য ‘কাথাল’ বলতে পেরেছিলেন।আবার আমার নামের উচ্চারণের ক্ষেত্রে তিনি শাদী না বলে শ্যাডি বলতেন।
তিনি আমাকে একবার বলে বসলেন, ‘ তোমার ইংরেজি তো অনেক ভালো, কোথা থেকে শিখলে এমন বলা?’
আমি এই কথার আগে ভালো ভাবেই তাল মিলিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু এটা বলার পর আর কিছু খুঁজে পাচ্ছিলাম না বলার মতো।
শুধু বললাম, ‘ আমার তো মনেহয় আমি ইংরেজি ভালো বলতে পারি না।‘
তিনি বললেন, ‘ না তোমার ইংরেজি অনেক ভালো’।
যাই হোক, তার কোন কথার উত্তরে যদি ইয়েস বলতে হতো তাহলে কেমন করে জানি মুখ দিয়ে ‘হ্যাঁ’ অথবা নাক দিয়ে ‘হুঁম’ বেরিয়ে যেত। তারপরে অবশ্য ঠিক করে নিতাম।
রাজলক্ষীতে পৌঁছে দেখতে পেলাম ফুটপাথের দোকানগুলো আর আগের মতো নাই, বেশিরভাগই উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
তারপরেও তাদের সাথে থেকে কিছু জিনিস কিনে দিলাম, আবার কিছু জিনিসের দাম তাদের কাছে বেশি মনে হওয়ায় কিনলেন না।
কেনাকাটা শেষ হলে, তাদেরকে তাদের ঠিকানা অনুযায়ি পৌঁছে দিলাম।
উপরের পুরোটা জুড়ে কেবল মহিলাটির কথাই বলেছি, ছেলেটির কথা বলিনি।আসলে ছেলেটির সাথে তেমন কথা হয়নি আমার।শুধু তার নাম ড্যানিয়েল এবং সে ডক্টর জেলের সাথে এসেছে এইটুকুই শুধু জানানো হয়েছে আমাকে।
যাকগে, তাদের সাথে যাবার আমার আরেকটি কারণ ছিল। সেটা হলো, এর আগে আমি অনেকবার শুনেছি যে এখানকার রিক্সাওয়ালা, দোকানদার সবাই নাকি বিদেশি মানুষ দেখলেই ভাড়া বা দাম অনেক বেশি চেয়ে বসে।
আমার শোনা কথা গুলো কালকে ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
আমার দেশের মানুষের মন যে আসলে অনেক ভালো সেটা বুঝতে পেরেছি।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×