আজ মঈনের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন।
ক্যাম্পাসে ঢুকতেই কিছুদূর বসে থাকা কয়েকজন ছেলে মেয়ের মাঝে থেকে একজন ছেলে তাকে ডাকল।
মঈন এগিয়ে গেল তাদের দিকে।
সেখানে যেতেই একজন মঈনকে তার নাম জিজ্ঞেস করল।
মঈন তার নাম বলল।
ছেলেটা বলল,
-তুমিতো নতুন ভর্তি হইছ, আমরা তো তোমার সিনিয়র। আমাদের কিছু কথা যে শুনতে হয়।
মঈন বলল,
-বলুন।
ওখান থেকে অন্য এক ছেলে বলল,
-ভাইয়া একটা গান শুনাও তো।
মঈন বলল,
-ভাইয়া গান তো জানি না।
এবার আগের ছেলেটি রেগে গিয়ে বলল,
-গান জানোছ না মানে?মুখের উপর জানি না বলছ তোর এত সাহস ক্যামনে হইল?
মঈন বলল
-স্যরি ভাইয়া।
ছেলেটি বলল,
-কিসের স্যরি?? কানে ধর।
মঈন মাথা নিঁচু করে দাড়িয়ে আছে দেখে ছেলেটি ধমক দিল।মঈন নিজের দুই হাত দুই কানের কাছে নিয়ে গেল
তখনি ছেলেটি বলল,
-থাম, কানে ধরা লাগবে না। ওরে একটা কিস দে(পাশে বসে থাকা মেয়েটিকে দেখিয়ে)
ছেলেটির কথা শুনে মঈন হতভম্ব হয়ে গেল।
মেয়েটি ছেলেটির পিঠে একটা থাপ্পর দিয়ে বলল
-ধুর কি বলিস এসব?
ছেলেটি মেয়েটার কথা কানে নিল না।
মঈনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-কিরে, কিস দে।
তার পরেও মঈন দাড়িয়ে আছে দেখে ছেলেটি বলল,
-কিরে কিস করবি নাকি প্যান্ট খুলে ক্লাসে যাবি?নিচে ছোট প্যান্ট আছেতো? নইলে কিন্তু নুনু ঝুলতে ঝুলতে যাবে।
মঈন কোন উপায় না পেয়ে ঝুকে মেয়েটিকে কিস করতে যাবে ঠিক তখনি ছেলেটি কসে একটা চড় বসালো মঈনের গালে।
ফলে মঈনের একমাত্র চশমাটি দূরে ছিটকে পরে ভেঙ্গে গেল এবং মঈনের চোখ থেকে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পরল।
ছেলেটি বলল,
-যা, বেয়াদব ছেলে।
মঈন ভাঙ্গা চশমাটি কুড়িয়ে নিয়ে চলে আসার সময় ছেলেটি বলল,
-শোন, শার্ট খুলে যা।
মঈন কিছু না বলে শার্ট খুলে চলে আসার সময় লক্ষ্য করল অন্য সবাই মিটি মিটি হাসছে।
মঈনের মনে হল জীবনের প্রথম সে শয়্তানের হাসি দেখছে।
সে এতিম খানায় অবেহেলার মাঝে বড় হয়েছে কিন্তু আজকের মত কষ্ট কোনদিন পায়্নি।
নতুন চশমা কি করে জোগাড় করবে সেই চিন্তায় দু'চোখ ভরে যায় অশ্রুতে।
আচ্ছা ওদেরকি কষ্ট বোঝার ক্ষমতা নেই? ওরাকি শুধু আনন্দ টুকুই বুঝতে পারে?
কই কেউ তো একবারের জন্যও বলল না,
মঈন তোমার কি কষ্ট হচ্ছে?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:০০