এবারের পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ন্যাকারজনক ঘটনার সংবাদ দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে সত্যি ভীষণ লজ্জিত, ক্ষুব্ধ, বাকরুদ্ধ । কিন্তু আজ ঘটনা সংঘটিত হবার তিন দিন পরেও এখনও কেন কাউকেই সনাক্ত করা গেল না বুঝতে পারছি না । পুলিশ প্রশাসন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহ সবাই কেন বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছে না সেটা বোধগম্য হচ্ছে না । এই ঘটনাকে কোনভাবেই খাটো করে দেখা ঠিক হবে না ।
যদিও ঘটনার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শীর প্রামাণিক কোনো তথ্য থাকলে তা কমিটির আহ্বায়ক সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এর দপ্তরে লিখিতভাবে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে অফিস চলাকালীন সময়ে জমাদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে, তথাপিও কেন যেন একটা কিন্তু মনের ভিতর খচখচ করছে। আসল অপরাধী চিহ্নিত হবে তো ?
ভিডিও ফুটেজ নাকি সংগ্রহ করা হয়েছে, তাহলে আজ ঘটনা সংঘটিত হবার তিন দিন পরও কেন কোন কুলাঙ্গারকে সনাক্ত করা সম্ভব হলো না ? বেশ কয়েক বছর আগে যখন থার্টি ফার্স্ট নাইটে বাধন কেলেংকারী হয়েছিল তখন প্রিন্ট মিডিয়া গুলিতে গোল চিহ্নিত করে ঐ সব কুলাঙ্গার দের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল, ফলে তাদের অল্প বিস্তর সাজাও দেয়া হয়েছিল, সামাজিক ভাবে তারা হেয় প্রতিপন্ন হয়েছিল । কিন্তু সেই সময়ের চেয়ে এখন প্রযুক্তি অনেক এগিয়েছে, অনেক সহজলভ্য ও হয়েছে, তারপরও কেন ঐ সব কুলাঙ্গারদের এখনও সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না সেটা বোধগম্য হচ্ছে না ।
ঘটনাস্থল হতে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি লিটন নন্দী সহ অন্যরা যে দুইজনকে পুলিশে সোপর্দ করেছিল তাদের কেন পুলিশ ছেড়ে দিল ? তারা কারা ছিল ? তাদের কেন পুনরায় ধরা হচ্ছে না?
এই ঘটনায় দোষী যারাই হোক, হোক সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, হোক কোন চিহ্নিত রাজনৈতিক দলের ক্যাডার কাউকেই রেহাই দেয়া বা ছাড় দেয়া উচিত হবে না, পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব, এই উৎসবকে যারা কালীমালিপ্ত করেছে তাদেরকে ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই । এরা পার পেয়ে গেলে ভবিষ্যতে আমাদের আরও খারাপ ঘটনা দেখতে হবে
আমি নিজে অনেক ঘরকুনো স্বভাবের ছিলাম, আমার মনে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুর দিকে আমার আম্মু পহেলা বৈশাখে আমাকে জোর করে বাসা থেকে বের করে দিত রমনা বটমূলে যাওয়ার জন্য । এরপর কতশত স্মৃতি এই পহেলা বৈশাখকে ঘিরে, রমনা বটমূল, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, টিএসসি, আমাদের নিজের প্রাণপ্রিয় স্থান কার্জন হল সহ পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে । ভাবতে অনেক কষ্ট হচ্ছে এইভেবে যে, কোন মা কি আগামীতে তার সন্তানকে আর পহেলা বৈশাখে ক্যাম্পাসে পাঠাবে জোর করে ?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২১ রাত ১১:৩৪