লেটস টেক শেয়ার বাজার। বিএনপি তার দুই আমলে কোন শেয়ার বাজার লুট করে নাই। কিন্তু, ৯১ থেকে ৯৫ ই বিএনপি শেয়ার বাজার সাজায় দিলো, ১৯৯৬ ই ক্ষমতায় এসে আ ওয়ামী লীগ এক বছরের মধ্যে শেয়ার বাজার লুট করে । একই কাজটা হয়েছে ২০১০ ই । বিএনপির অধীনে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত শেয়ার বাজার ছিল, ক্লিন এন্ড ফেয়ার। কম্পিটিনেন্ট ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটের নিজস্ব ইন্সেন্টিভে অপারেট করেছে-কিন্তু, ২০০৮ ই ক্ষমতা পেয়ে আওয়ামী লীগ দুই বছরের মধ্যে শেয়ার বাজার লুট করে।
তো যদি বিএনপি আওয়ামি লীগ সমান বদমাশ হয় তবে, বিএনপির দুই দুইটা আমলে ১০ বছরে শেয়ার বাজার কেন প্রটেক্টেড থাকলো ?
এবং শেয়ার বাজার লুটের স্কেল যদি দেখেন, এইটা আকার যে কোন ব্যাংক লুট ও ট্রাঞ্জেকশানাল লুট থেকে বেশী।
বাংলাদেশের দুর্নীতিমগ্ন প্রশাসনে বিএনপি ও আওয়ামি লীগ দুইটাই ট্রাঞ্জেকশানাল করাপশনে অংশ নিয়েছে(এই ক্ষেত্রেও বিএনপির লুটের স্কেল নিয়ে, যে আলাপ প্রথম আলো ডেইলি স্টাররা করেছে, সেইটা নিয়ে এখন আমার খুব লজিকাল প্রশ্ন আসছে, এতো হাজার হাজার কোটি টাকা যদি লুট বিএনপি করে শাস্তি দিতে আওয়ামি লিগের ক্যাংগারূ কোর্টকে তারেক রহমানের শাশুরির ৫০ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডেপোজিটের ডোনেশান, বা জিয়া অরফেনেজ ট্রাস্টের কুয়েতের ২ কোটি টাকার ডোনেশান দিয়ে শাস্তি দিতে হয় কেন ? বাকি লুটের টাকা কৈ? )
কিন্তু, বিএনপি কখনই জনগণের সেভিংস লুট করতে হাত বাড়ায় নাই।
শেয়ার বাজার ও ব্যাঙ্কে থাকে পাব্লিকের ব্যক্তিগত সেভিংস - আওয়ামি লীগ সিস্টেমেটিকালি সেই অর্থ লুটের ম্যাকানিজম করেছে। বিএনপি কখনই সেইটা করে নাই।এইটা পারে নাই বলে না, এইটা করার কোন ইন্টেনশান বিএনপি দেখায় নাই, চাইলে খুব সহজেই পারতো।
কিভাবে করেছে, তার পরিস্কার উদাহরন ও ম্যাকানিজম আমি উন্নয়ন বিভ্রমে ব্যাখ্যা করেছি।
শেখ হাসিনার অর্থমন্ত্রি হলো মোস্তফা কামাল যাকে শেয়ার বাজার ক্ল্যালেঙ্কারির তদন্তে ইব্রাহীম খালেদ রিপোর্টে খুব স্পস্ট ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইব্রাহিম খালেদ রিপোর্টের দুইটা পাতায় মোস্তফা কামাল ও তার পরিবারের কে কে কিভাবে কত টাকার শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন তা উল্লেখ করা আছে। এই রিপোর্টটা প্রকাশিত না হলেও, লিক হয়েছে এবং এখনো গুগল সার্চ করলে পাবেন। ফলে চিহ্নিত শেয়ার বাজার স্ক্যামারকে শাস্তি না দিয়ে শেখ হাসিনা প্রথমে পরিকল্পনা মন্ত্রি ও পরবর্তীতে অর্থমন্ত্রি বানিয়েছেন।
কিন্তু, খালেদা জিয়ার অর্থমন্ত্রি কে ছিল ? সাইফুর রহমান। সাইফুর রহমান সাহেব যেভাবে শেয়ার বাজারে নিয়মতান্ত্রিকতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা মার্কেটের ভ্যাটেরান লোকদেরকে প্রশ্ন কইরেন। আমি ডিটেলস দিলাম না।
আরো খেয়াল করেন, মার্কেট লিবারালাইজেশানের প্রসেসে ১৯৯১ থেকে ২০০০ ই বিএনপি এবং আওয়ামি লীগ দুইটা দলের হাতেই অনেক গুলো ব্যাংক প্রতিষ্ঠা হয়। একাডেমিক রিসার্চ করে দেখবেন,১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত বিএনপি ও আওয়ামি লীগ উভয় দলের হাতেই ব্যাংকের অনুমতি গুলো পেয়েছে জেনুইন ব্যবসায়ীরা। যে লিস্টে আছে ১৯৯২ সালে, ইস্টারন ব্যাংক ও ৯৫ সালে ডাচ বাংলা, ঢাকা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও সাউথ ইস্ট ব্যাংক।
অন্য দিকে ৯৬ থেকে ০১ সালে হাসিনার আমলে অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া , মারকেন্টাইল ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক।
বিএনপি ক্ষমতায় নাই বলে, বা সামর্থ্য নাই বলে আওয়ামি লিগের সমান লুট করতেছেন যুক্তি দেওয়া লোকদের জন্যে তথ্য হইলো, ২০০২ থেকে ২০০৬ এ বিএনপি একটাও বেসরকারি ব্যাংকের পারমিশান দেয় নাই।
কিন্তু ক্ষমতা ফিরে পেয়ে আওয়ামি লীগের হাতে অনুমতি পাওয়া ব্যাংক গুলো হলো মিডল্যান্ড, ফারমার্স (বর্তমানে পদ্মা), ইউনিয়ন, মধুমতি, সাউথবাংলা, এনআরবি, এনআরবি কমার্শিয়ালস ইত্যাদি। এদের সকলের মালিকানা মুলত আওয়ামি লীগ নেতাদের। এবং এই অধিকান্স ব্যাংক এখন ধুক্তেছে। এবং প্রথম কয়েক বছরের পাব্ললিকের টাকা নিয়ে নয়ছর করে এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে মুল্ধন ঘাটতির জোগান নিয়ে চলতেছে। এর মধ্যে ফারমার্স ব্যাংক টা প্রিথিবির ইতিহাসে এক মাত্র ব্যাংক জেটা সম্পূর্ণ লুটের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে যা নিয়ে পুরো একটা বই লেখা সম্ভব।
বিএনপি সুযোগ পাচ্ছেনা, বলে আওয়ামি লিগের সমান লুট করতেছেনা, এই যুক্তি দেওয়া লোকদেরকে বলতেছি, বিএনপি আওয়ামি লীগ সমান শয়তান হইলে, ২০০২ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত কেন বিএনপি তাদের নেতা কর্মীদেরকে দিয়ে একটা ব্যাংকের পারমিশান দিলোনা। এই লুট এনাবল করার সামর্থ্য তো তাদের ছিল। জাস্ট পারমিশান দিয়ে দিলেই লুট, যেইটা লীগ ২০০৯ এর পরে করেছে।
ইন রিয়ালিটি, বিগত দুইটা টার্মে বিএনপি জনগণের সেভিংস কখনই টারগেট করে নাই। এইটা সক্ষমতার প্রশ্ন না। শেয়ার বাজার লুট করতে, ব্যাংক লুট করতে কোন সক্ষমতা লাগে না। কিছু করাপ্ট নেতৃত্বকে ব্যাংকের ডিরেক্টর হিসেবে বসায় দিলেই হয়- যে কাজ বিএনপি করে নাই।
শেখ হাসিনা ২০০৯ ই ক্ষমতায় এসেই ছাত্রলিগের নেতা বলরাম পোদ্দার আর আওয়ামি বুদ্ধিজিবি আবুল বারাকাতদের জনতা সোনালি ও অন্যান্য পাবলিক ব্যাংকের ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয় যাদের হাতে এই ব্যাংক গুলোর লুট সম্পন্ন হয়।
বিএনপি সেই কাজ করে নাই। বিএনপি পাব্লিকের এসেট রক্ষা করেছে। তাদের অদক্ষতা ছিল। মিস্ম্যানেজেমেন্ট ছিল।
কিন্তু, বিএনপি পাব্লিকের সেভিংসকে দখল করার উদ্দেশ্যে ব্যাংক ও শেয়ার বাজারকে অরকেস্ট্রেট করে নাই।
ফলে বিএনপি ক্ষমতায় নাই বলে, আওয়ামি লিগের সমান লুট করে নাই থাকলে একি সমান করতো - কারন দুইটা সমান বদমাশ- একটা নিরপেক্ষতার বয়ান, যে বয়ান আওয়ামি ফ্যাসিজমের পাটাতন নির্মাণ করেছে।
কার্টেসি: জিয়া হাসান
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



