এখন গ্রন্থকার হওয়া খুব সহজ হইয়া গিয়াছে,যে কেউ চাইলেই বই ছাপাতে পারেন। বই মেলায় নতুন প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা হাজার ছাড়াইয়া গিয়াছে। অধিকাংশ গ্রন্থকার মনে হইতেছে সাম্রাজ্যবাদ ভাবধারার কাছে নতি স্বীকার করিয়াছে, আমরা সকলেই এই ভাবধারার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করিতে বদ্ধ পরিকর। অবশ্য সাম্রাজ্যবাদের সাংস্কৃতিক প্রকাশ এমনই হইয়া থাকে।
’তৃতীয় বিশ্বের সাহিত্য’ নামে ইংরেজি পত্রিকায় একটি কলাম পরিয়াছিলাম,সেখানে বাংলাদেশের বই মেলা নিয়ে বহু প্রশংসা রহিয়াছে।ইহা লইয়া আমরা আত্নপ্রসাদে লিপ্ত হইতে পারি। অনেকেই হয়ত বলিবেন, ইহা এমন কি নতুন বলা হইল ? আমাদেরকে তৃতীয় বিশ্ব বলিয়া যে আখ্যায়িত করা হয় তাহার মধ্যে লুকায়িত আছে এক সত্য,বিশ্ব যে স্বাধীন ও পরাধীন এই দুই ভাগে বিভক্ত এই সত্যটি নানা কথার অলংকারের আড়ালে চাপা পড়িয়া যায়।এই সত্যটি অন্তত আমার শ্রবন-প্রতিবন্ধি দুই কান পর্যন্ত আসিয়া পৌছাইয়াছে।কোন দেশের সাহিত্যকে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিশ্বের বলিয়া আলাদা করাটা হইতেছে উপনিবেশবাদের বর্তমান রুপ।
বিশ্বকে আমরা যাহার যেমন ইচ্ছা ভাগ করিতে পারি,সেই ভাগাভাগিতে আমার কোন আপত্তি নাই,আমার আবেগ অন্যত্র আর তাহা হইল সাহিত্য লইয়া ভাগাভাগি। বেশি পিছনে যাইবার প্রয়োজন নাই উনিশ শতকের গোড়া পর্যন্ত বিশ্বসাহিত্য বলা হইত,বলা হইত নানান দেশের নানান ভাষার ভেদ কাটিয়া বিশ্বসাহিত্য গড়িয়া উঠিয়াছে । কিন্তু শুধু পন্য লুটিয়াই সাম্রাজ্যবাদের সাধ মিটিল না,অধীন দেশের পন্য তৈরির ক্ষমতাও সে লুটিয়া লইল। তাঁর শক্তিমত্তা এতটাই প্রবল যে সাহিত্যের দুনিয়াও সে আবার নতুন করিয়া দুই ভাগে ভাগ করিল।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫১