somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন মূকের জবানবন্দি

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৩:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মাঝে মাঝেই ব্যাপারটা আমার দৃষ্টিতে ধরা দেয় অথবা ঝেঁকে বসে আমার উপর। ঘরে ফেরা সূর্যের রেশ যখন রাত্রিকে সম্ভাষনের প্রস্তুতি নেয়, তখন ধূসর দিগন্তে নির্বিকার পাক খেয়ে খেয়ে উড়ে চলে এক শঙ্খচিল। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় বুঝতে পারি হৃদস্পদনটা তাল মিলিয়েছে শঙ্খচিলের ডানার সাথে। চারপাশের এত কোলাহল ডিঙ্গিয়ে আমি শুনতে পাই হাপর টা্নার মত হৃদযন্ত্রের শব্দ। একসময় শঙ্খচিল পাখা দুটো ছেড়ে দেয় সটানে, আর আমার গভীর থেকে বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস, ক্রমশ ডুবে যেতে থাকি একাকীত্বের গভীর অন্ধকারে। লড়াই করি প্রতিনিয়ত। সাধ হয় জয় করি এই যুদ্ধ। আমি জানি সবারই ইচ্ছে হয়।

ইচ্ছের বিপরীতে হার এসে আমাকে আলিঙ্গন করে। পরাজয়ের লজ্জায় ছুটতে থাকি পশ্চাৎপানে। একদম নিশ্চিত অতীতের চৌকাট পর্যন্ত। অনিশ্চিত ভবিষ্যতটা তখন বিষম তেতো লাগে। পালিয়ে বেড়াই, সবার থেকে, নিজের থেকে। চারপাশের অচেনা মুখগুলোতে অলীকতা ভর করে।
বিরক্তির উদ্রেক করে অলীক সঙ্গ।

অস্থির সময়টাতে আমাকে ছেড়ে যায় প্রিয় শব্দেরা। প্রতিশ্রুতি ভেঙ্গেছে শব্দের দল।
ঝি ঝি পোকার উৎসব আয়োজন আর খামখেয়ালী ছুটাছুটি অসহ্য লাগে।
অনাদরে অবহেলায় ঘরের এক কোণে নিশ্চল অস্তিত্ব জানান দিয়ে যায় প্যাডেল আর কয়েকজোড়া স্টিক।
আমি জানি তাদেরকে স্পর্শ করা মাত্রই শুরু হবে রক্তক্ষরণ। নাক-চোক-মুখ বেয়ে ফিনকি দিয়ে অবিরাম হোলিখেলায় মেতে উঠবে রুধির প্রবাহ। তার সাথে বেরিয়ে আসবে শিরার নিচে উৎ পেতে থাকা অন্ধকার। আমি পবিত্র হব বলে অন্ধকারকে স্বাগত জানাই। পুঞ্জীভুত অন্ধকার গ্রাস করে নেয় আমার সত্তা। নিঃসীম কালোর জগতে আমি উদভ্রান্তের মত আছড়ে পড়ি এক টুকরো আলোর আশায়। এক চিলতে আলোর জন্য তৃষ্ণার্ত থাকে চোখজোড়া। কোটর ছেড়ে বেরিয়ে পড়বে বলে আমাকে ভয় দেখায়।

আমি প্রবোধ গুনি, সামনেই আলোক নগর।
নিরন্তর হাঁটি। পেছনে পড়ে থাকে ধানশালিক আর ঘাসফড়িং। উঁচু গলার অভিসম্পাত শুনি। আমার সম্মুখভাগ অদৃশ্যমান তাদের কাছে। নাহলে তারা জানত এই পথে আলপনা একে যাওয়া রক্তের জন্ম হাসিতে নয়, চোখে।
রক্তে লেগে আছে অশ্রু, রক্তাশ্রু। অশ্রুতে লেগে আছে করজোড় নিবেদন। মার্জনা চাই।

হেরে যাওয়া ভয় পেয়ে বসে, আবার হারিয়ে যাই নিশ্চিত অতীতে যেখানে বসে বিরান সমুদ্রতটে ডুবে ছিলাম কোলাহলময় মদিরতায়। অবিরাম প্রানচঞ্চল জলের ধারা উষ্ণ অভিবাদনে নিয়মিত বিরতিতে ডেকেছিল তাদের উৎসবে যোগ দিতে, হাতের আংগুল ভাঁজ করে কাছে ডাকার মত ইশারা করে। অগ্রাহ্যে আমি তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিলাম রঙের মোহে, আলোর লোভে।

দিনের শেষে, এই রঙ মিথ্যে। এই আলো অসার।
ধ্রুব সত্য হয়ে থাকে জমাট অন্ধকার।












শঙ্খচিল এখনো উড়ছে। সন্ধ্যার প্রস্থানে জায়গা করে নেয় রাত্রি। গভীর রাত্রি।
অন্ধকার কাটতে থাকে শঙ্খচিলের ডানা।
ক্রমশ ডানায় ফাটল ধরে।
ব্যাথায় নির্বাক চোখ জন্ম দেয় দু’ফোটা জল।
শংখচিল জানে কতটা তীব্রতায় সে কাঁদে।


















সকালে নগরবাসী দেখতে পায় পথের ধারে পড়ে আছে ডানাহীন এক শঙ্খচিল।
আমি তখনো দুঃস্বপ্নের ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারিনি।
















New blood joins this earth
And quickly he's subdued
Through constant pained disgrace
The young boy learns their rules

With time the child draws in
This whipping boy done wrong
Deprived of all his thoughts
The young man struggles on and on
he's known
A vow unto his own
That never from this day
His will they'll take away










উৎসর্গ- আমার চারপাশ ঘিরে থাকা মানুষগুলোকে। নিয়ত মনে হয় তাদের ভালবাসা আর স্নেহের বিপরীতে আমি তাদেরকে কিছুই দিতে পারিনি

আর ব্লগার আরিশ'কে, ইদানিং তার গল্পগুলো আমাকে অনেক বেশি টানে।



**লিরিকটি 'মেটালিকা'র 'আনফরগিভেন' এর।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:২৯
২৯টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×