সি কিউকাম্বার প্রথম পেয়েছি চীনেদের খাবার টেবিলে । কোন স্বাদ নেই , জমাট বাধা চর্বির মত । চাকুরিকালে চীনারা দাওয়াত করত অহরহ । যারা সতর্ক তারা মুসলিম হালাল খাদ্য পরিবেশন করত । এবারের হোসট যা পরিবেশন করেছেন তার মধ্যে ঘন ঝোলে শশা আছে । আমাদের সহকর্মীদের অনেকে তেমন পাত্তা দেননা খাবার দাবারের ধর্মীয় সংস্কৃতিতে, কিন্তু উদ্ভট কিছু এড়িয়ে চলেন । সামুদ্রিক শশার ক্ষেত্রে একই ব্যাপার ঘটল । আমি সবার প্রতিনিধিত্ব করতে এক টুকরো খেলাম । পরে কোন এক সময়ে টেবিলে শশা চপস্তিক দিয়ে চেপে তুলতে গিয়ে তা স্লিপ করে উলটো দিকে বসা চীনা ভদ্রমহিলার প্লেটে ডাইরেক্ট ল্যান্ড করল । তিনি আমায় ধন্যবাদ দিলেন হেসে। মাছের বাজারে এই সি কিউকাম্বার দেখতাম অবাক চোখে কেমন পানিতে ডুবে থাকে নট নড়ন চড়ন । চীনেদের হারবাল মেডিসিনের দোকানে শুকানো শশা দেখেছি , কেটে টুকরো করা শশা আরও অনেক কিছুর মধ্যে মিশিয়ে দিয়ে দিল যা মাটির পাত্রে জ্বাল দিয়ে তার পানি খেতে হবে রোগীকে ।
এই শশার ভাণ্ডার শেষ হয়েছে চীন – জাপান- কোরিয়ান সমুদ্রে । এখন এটির ভাল প্রাপ্তিস্থান মাদাগাস্কার নিকটবর্তী সমুদ্রের গভীরে । দাম আকাশচুম্বী , ৩৫০০ডলার এক কেজি । মাদাগাস্কারের সাহসী ডাইভাররা প্রতিদিন সমুদ্রের গভীর থেকে তুলে আনে দুর্মূল্যের এই শশা । তাদের প্রাপ্তি সামান্য , লাভ খেয়ে ফেলে মধ্যস্বত্বভোগীরা । জীবনের ঝুকি নিয়ে তবুও তারা এই কাজ করে নিয়মিত ভাত কাপড়ের আশায় । এখন সামুদ্রিক শশার ছোট এক টুকরো দিয়ে মুল্যবান স্যুপ দেওয়া হয় ধনীদের টেবিলে । বাকি শশা শুকিয়ে চলে যায় চীনা হারবাল ঔষধের কারখানায় । বাত , কোষ্ঠকাঠিন্য , ক্লান্তি , পেশাব নিয়মিতকরন অসুখের কাজে অব্যা র্থ এই সামুদ্রিক শশা এখন দুষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১২:০৮