এবার কাশ্মীর নিয়ে নয় বা লাদাখের অংশ বিশেষ নিয়েও না , লড়াই চাল নিয়ে । সেকি চাল তো কর্কট রেখা বরাবর সবখানেই হয় , তাহলে ? ভারত আর পাকিস্তান চির প্রতিদন্ধি স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময় থেকেই । ভারত সরকার সম্প্রতি বাসমতি চালের জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জিআই ট্যাগের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে আবেদন করেছে।এই আবেদনে বলা হয়েছে বাসমতি চাল ভারতীয় উপমহাদেশের একেবারে স্বতন্ত্র একটি চাল। আকারে এটি লম্বাটে। অনন্য স্বাদ ও সুগন্ধের কারণে সারা বিশ্বে ভারতীয় এই চালের সুখ্যাতি রয়েছে। পাকিস্তান ভাবছে এতে করে তাদের চাল রফতানির ব্যাপারটা ধাক্কা খাবে । তাই লাগাও হৈ চৈ । পাকিস্তানের তো জঙ্গি ট্যাগ লাগানোই থাকে । গতকয়েকদিন আগে প্যারিসে শারলি হেব্দো অফিসের সামনে দুজনকে ছুরি দিয়ে আহত করেছে এক পাকিস্তানি । পাকিস্তানের অবস্থা ত্রিশঙ্কু । ভারত এই সুযোগে একটু নাড়াচাড়া দিয়ে দেখল শত্তুর ঠিক হ্যায় কি নেহি ।
ভারত বলছে, হিমালয়ের পাদদেশীয় অঞ্চল, বিশেষত ইন্দো-গাঙ্গেয় অঞ্চলে বাসমতি চাল উৎপন্ন হয়। ভারতে কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান ড. অশোক কুমার সিং বলেছেন, সবচেয়ে ভাল মানের বাসমতি চাল উৎপাদিত হয় ভারতের যে সাতটি রাজ্যে সেগুলোকে ইতোমধ্যে জাতীয়ভাবে জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জিআই দেওয়া হয়েছে। জম্মুর তিনটি জেলা, অরুণাচল, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তরাখণ্ড ও উত্তর প্রদেশের কিছু এলাকায় ভাল মানের বাসমতি চাল হয়। এসব রাজ্যকে ইতোমধ্যেই জিআই ট্যাগ দেওয়া হয়েছে। জাতীয়ভাবে এই ট্যাগ দেওয়ার পর সেটা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও নিতে হয়। ভারত এখন সেটাই করেছে। পাকিস্তান মনে করে ভারতের এধরনের পদক্ষেপ নেওয়া একেবারেই উচিত হয়নি। কারণ এই চাল শুধু ভারতে নয়, পাকিস্তানেও উৎপাদিত হয়।
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর, বালুচিস্তান, গুর্জরানওয়ালা, মান্দি বাহাউদ্দিন, হাফিজাবাদ, সিয়ালকোট, শেইখুপুরা, গুজরাট এবং পাঞ্জাবে উৎপাদিত বাসমতি চালের খ্যাতি রয়েছে ইউরোপের বাজারে। ভারতীয় এই আবেদনের পর পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে যে দিল্লিকে এই ট্যাগ দেওয়া হলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে পাকিস্তানের বাসমতি চাল রপ্তানির বাজারে বড় ধরনের ধ্বস নামবে।ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশের পর পাকিস্তান সরকারও ভারতীয় আবেদনের জবাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কাছে পাল্টা আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সিন্ধু নদী পাঞ্জাবের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় পাঁচটি উপনদীর সৃষ্টি হয়েছে তাই এটাকে পাঞ্চ আব বা পাঞ্জাব বা পঞ্চ নদীর সমাহার বলা হয় । হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা টলটলে পানিতে সিন্ধুর আশপাশ অত্যন্ত উর্বর । বাসমতি চাল , গম, যব , ভুট্টার বিশাল চাষাবাদ হয় এই পাক- ভারত সীমান্ত অঞ্চলে । কাজেই এক সময় আমেরিকা নিম গাছ পেটেন্ট করার বদ উদ্দেশ্য নিয়ে যে ইতর কর্ম শুরু করেছিল তা ভেস্তে দিয়েছিল এক আমেরিকান মহিলা কোর্টে রিট আবেদন করে । এবারো চালের ব্যাপারটা অনেকটা সেদিকেই গড়াচ্ছে ।
আমার সন্দেহ হচ্ছে ভারতের নাগরিক আইন বিধি , ১৯৭২ সালে সিকিম গ্রাস , নেপাল নিয়ে উৎপাত , কাশ্মীর নাটক , বাংলাদেশে প্রবাহিত নদী সমুহে নিয়ন্ত্রন একই সুতোয় গাথা । এক সময় জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন ইস্যুতে বাংলাদেশ , পাকিস্তান, নেপাল , ভুটান কে দাবি করে বসবে ভারত । করোনায় বিধ্বস্ত ভারতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের কার্যক্রম বন্ধ করেছে গতকাল থেকে ।
আমাদের দিনাজপুরের কালিজিরা চালের যে সুগন্ধ তা বাসমতীতে নেই কিন্তু । কালিজিরা চাল যেন টিকে থাকে , হুম !!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৭