somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা শহর

২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :










অনেকদিন ধরেই ভাবি বাংলাদেশ নিয়ে লেখা দরকার । লক্ষ ছবি তুলি কিন্তু তা পি সি তেই জমে থাকে , আলোর মুখ দেখে না । আজ ছবি নিয়ে বসেছিলাম । এসে গেল গাওসিয়া – নিউমার্কেটের ছবি । ফুলুরি দিয়ে শুরু করা যাক । গাওয়াসিয়ার একদম কোনে যে দোকান খানি তার নাম ছিল রুহি সুইটমিট এবং এখনো তাই আছে । ৭৬ সালের নভেম্বরে দেখি কোনের দোকানটার সামনে একটা ছোট ষ্টোভের উপর ছোট সাইজ ব্যাচেলর কড়াই । তাতে ফুলুরি ভাজা হচ্ছে । আশেপাশে কেউ নেই । গাওসিয়া মার্কেটের ভেতরে রাতে গরু থাকত । বাইরে দুই বা তিনটি দোকান নিশ্চিত লসে চলত । এলিফ্যানট রোড ফাকা , গাওসিয়া থেকে সায়েন্স ল্যাব ফাকা মাঝে পেট্রোল পাম্প । চন্দ্রিমা ছিলনা । নিউমার্কেটের উত্তর দেয়ালএর পাশে বিশাল কাচা বাজার বিশাল ছাউনির নিচে । নুর ম্যানশন নিচের তলায় কিছু দোকান ছিল বাকি সব ফকফকা । বেশ আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কি হচ্ছে এখানে । পালং শাক ডাল বাটা দিয়ে ভাজা হচ্ছে । নাম দিলাম ফুলুরি । দাম বিশ পয়সা এক প্লেট । গুনে দেখলাম ৭ কি ৮ পিস দিয়েছে । আমরা দুজন খেলাম এবং দোকানদারকে আশ্বাস দিলাম বেশ স্বাদের হয়েছে কিন্তু । মলিন হাসি হেসে উত্তর দিল টিকলে হয় । ওরা বিকেলে জিলাপি ভাজত কিছু আর মিষ্টি একরকম মাত্র । আরও দুজন গাহাক এগিয়ে এল আগ্রহ নিয়ে । আমাদের দিকে তাকালে চোখের ইশারায় বললাম উক্কে বস । ওরাও দাড়িয়ে খেতে খেতে মুখের সন্দেহজনক মানচিত্র পাল্টে ফেলল । ব্যাস ওই শুরু । দেশ ছাড়ার আগে দাম বেড়ে আট আনা হল , মানুষ কিছুটা বেড়েছে । ৮৫ সালে ছুটিতে এসে দেখলাম আগের সেই এতিম ভাব আর নেই । দোকান পাট বেড়েছে সাথে মানুষ বেড়েছে । ফুলুরি বেশ চলছে । কড়াই বড় , ফুলুরি দেড় টাকা । খেলাম মন ভরে । ৮৮ সালে হাট বাজার বসে গেছে গোটা এলাকায় । চন্দ্রিমা একতালা । নিউমার্কেটের ভেতরে জমেছে কিন্তু তখনও দোকানিরা বারান্দা আর মার্কেটের রাস্তা দখল করেনি । এরপর বহুভাবে এই এলাকায় এসেছি এবং চারিদিকে মানুষের চেয়ে দোকানের পরিমান বাড়তে দেখে আতংক বোধ করেছি । গাওসিয়ার ভেতরের গরুর ইজ্জত মেরে শাড়িওয়ালারা দশ পনেরো হাজার টাকার দাম হেকে পুনস্থাপন করেছে । ২০০০ সালে বিকট অবস্থা । আমরা শপিঙ্গে এলে ফুলুরি খেতে বা ঠোংগা ভরে বাসায় নিতে ভুলি না । এখন পালং নয় কলমি শাক দিয়ে পোষায় , কলমি শব্দটি আমার কানে কানে বলল । ২,৪,৬,৮,১০ টাকায় ঠেকেছে । কি ভিড় , সাথে শামি কাবাব ধরিয়ে দাম করেছে ২০ টাকা । এই সেদিন ২০১৯ এই ছবি তোলার সময় ওদের শুরুর গল্প বললাম । ফুলুরিই বিক্রি হয় লাখ টাকার । স্বাদ কমেনি , তেতুলের টক একই রকম আছে ।
খুব কম কথায় বলে দেই । গোটা এলাকা এক বীভৎস রুপ নিয়েছে । ফুটপাত দখল , নিউমার্কেটের ভেতরে রাস্তা দখল , বারান্দা আগেই শেষ । ভেতরে গাড়ি ঢোকে আর এখানেই আপত্তি । গোটা এলাকায় ফাকা জায়গা নেই । ভাবছেন ব্যাবসা হচ্ছে খুব? জি না , দোকানী গাহাককে কলার ধরে শাসাচ্ছে নেবেননা দাম করলেন কেন ? ঠ্যাং ভাইঙ্গা দিমু । খুব অসহায় লাগছিল । ২০১৫ সালে চন্দ্রিমার দোতালায় দাম করে দোকান থেকে বেরিয়ে আসতেই ১০/১২ বছরের শিশু আমি ও আমার স্ত্রীকে বলল “আপনারা এই মার্কেটের কলঙ্ক” । আমরা দৌড়ে পালালাম । ঝামেলাহিন মানুষেরা আর ওদিকে যাইনা । আমরা কিছু দোকান খুজে পেয়েছি যেখানে অপমান অপদস্থ হতে হয়না । ঢাকা কলেজের উল্টো দিকের দোকানে দর দাম করে মাল না নেওয়ায় কিশোরীকে শরীরে হাত দিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিল । ঢাকা কলেজের দাঙ্গাবাজ নেতারা এইসব দোকানের তোলা তোলে আর প্রটেকশন দেয় । আশপাশের মানুষ কিছুই বলল না , আমিও না ।
ছবিগুলো নিউমার্কেটের ওভারব্রিজের ওপর , রুহি সুইট মিট আর নিউমার্কেটের ভেতর থেকে তোলা ।























সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:২৫
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×