
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানের রচয়িতা ভাষা সৈনিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী বৃহস্পতিবার ভোরে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যান । তার বয়স ৮৮ হয়েছিল । বিবিধ অসুখে ভুগছিলেন তিনি । আমাদের শৈশবে একুশের ভোরে প্রভাত ফেরিতে যে গান গেয়ে খালি পায়ে রাস্তা দিয়ে শহীদ মিনারে যেতাম তা গাফফার চৌধুরীর রচনা । এটা জানতে বা তাকে চিনতে আমরা কলেজ পর্যন্ত পৌঁছেছি । গানটার সুর দিয়েছিলেন আব্দুল লতিফ । পরে আরেক যোদ্ধা আলতাফ মাহমুদ যে সুর দেন তাইই আমরা শুনছি বা গাইছি। আব্দুল লতিফের সুর দেওয়া গান আমি নিজেও শুনিনি কখনো । তো গাফফার চৌধুরীর এই ঐতিহাসিক গান এমন ভাবে ডানা মেলেছে যে তা এখন একুশের একমাত্র থিম সং । একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার বটে । আজ থেকে শত বছর বা হাজার বছর পর এই গান মানুষ গাইবে তা ভেবে আমি খুব আনন্দ পাচ্ছি । আমাদের জাতীয় সঙ্গীত বদলানোর ষড়যন্ত্র মর্দে মুমিন আর কমিউনিস্টরা করে বটে কিন্তু এখানে তারা হাত লাগায়নি । কবিতা আকারে এটি পড়লে অতি আধুনিক গদ্য কবিতা হিসাবে ধরা দেবে কিন্তু একমাত্র আলতাফ মাহমুদ অত্যন্ত সাহসী হয়ে এতে সুরের ধারা জড়িয়ে অসাধারন গানে রুপান্তর করেছেন । আলতাফ মাহমুদ ৭১ সালে বাড়ি থেকে পাক হানাদার বাহিনী দ্বারা ধৃত হন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার অপরাধে নিহত হন । আব্দুল গাফফার যুদ্ধের শুরুতেই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে চলে যান । তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের কিছু সীমিত কাজে যোগ দেন । ৭৪ সালে লন্ডন গিয়ে তিনি আর ফেরেননি , ওখানেই থিতু হন । লন্ডন থেকে একটা সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা বের করতেন যার কপি আমি পিকিঙ্গে ডাক যোগে পেতাম । আব্দুল গাফফার চৌধুরী তার গানের মাঝে বেচে থাকবেন বাঙ্গালীর হৃদয়ে । দোয়া ।।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



