somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শৈত্য সুখ - ২য় অংশ - গল্প

২৮ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সি সি ফোরাম

তাহিরপুরের উপরে পাকা রাস্তা হয়েছে আগেই। আগে তাদের যাতায়াত হত নৌকায় । সচিব হলে মন্ত্রিকে ধরে এই রাস্তার ব্যাবস্থা হল।
মাঝপথে নেমে হাঁটাহাঁটি আর চা খেলেন।
দুপুর নাগাদ পৌঁছে গেলেন।
তাকে স্বাগত জানাতে শ’ খানেক লোক হাজির। মেঝ ভাইকে জড়িয়ে ধরলেন। পাচ বছর পরে গ্রামে এসেছেন , পৌত্র নাতি নাতনিদের অনেককেই দেখেন নি বা বড় হয়ে গেছে। তাদের আদর করে সবার সাথে হাত মেলালেন। হেটেই দুদিকের গাছ গাছড়ার মাঝের রাস্তা দিয়ে সামনের উঠোনে দাঁড়ালেন । প্রথমেই তার মাটির ঘর। উচু মাটির পোতা আর গোটা উঠোনে গোবরের লেপ দেওয়ায় চকচক করছে। তার টিনের চালে লাউ গাছ তরতর করে বেড়েছে। মাটির সিঁড়ি বেয়ে বারান্দায় উঠলেন বাঁশের রেলিং ধরে। বারান্দায় মাজেদের বাবার স্মৃতিময় ইজি চেয়ারখানা রাখা।বড়ভাই আগেই চলে গেছে অনন্ত যাত্রায়। তার ছেলে দুটো বিয়ে থা করে বাবার মাছের ব্যাবসায়ে ভীষণ ব্যাস্ত থাকে। ঘরটি একসময় বাড়ির সামনের দহলিজ ঘর ছিল এখন মাজেদের মাটির ঘর। মাটির দেওয়াল। উপরে টিন। ঘরে দুদিকে দুটো পালং , মাটির দেওয়ালে একটা দরজা বসেছে , উৎসুক হয়ে দেখলেন একটা টয়লেট আর তাতে হাই কমোড , হেসে ফেললেন। কলও বসেছে , পেছনে হাসিমুখ মেঝ ভাই বললেন উপরে ট্যাংকি আর পানি তোলার মটরও আছে ।
দুপুরে মাজেদ চার রকম মাছ আর সারছাড়া শীতের সব্জি একটু বেশিই খেয়ে ফেলেছেন।
ভর সন্ধ্যায় বিশ্রাম থেকে উঠলেন। উঠোন ভর্তি লোক। চেয়ার অনেক, তাতে মানুষ ভর্তি , অনেকেই দাড়িয়ে, ওপরে শামিয়ানা টাঙ্গানো। মাজেদ হাসলেন। বড় লাইট দিয়ে রাতের আড্ডা হবে। এর মধ্যেই সুনামগঞ্জের ডি সি আর থানার ও সি এলেন। চা দেওয়া হল বড় একটা কেটলি থেকে ঢেলে ঢেলে প্লাস্টিকের কাপে। বাইরের অনেকেই চা শেষ করে কাপটি সযত্নে চাদরের নিচে রেখে দিল।খাটি দুধের সাথে নতুন গুড় দিয়ে জ্বালানো চা যে কি অমৃত স্বাদ তা যে না খেয়েছে তাকে বোঝানো যাবেনা। ডি সি তার অনেক জুনিয়র কর্মকর্তা ছিল ।তাদের জানাশোনা খুব ভাল ছিল। খবর নিল শরীরের । ও সি মেঝ ভাইকে বলল টহল এদিকে থাকবে , আপনাদের খবর নেবে। ওরা আবার আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদায় নিল।
শীত জেকে ধরেছে মাজেদকে । তিনি মোটা জ্যাকেট , তার ওপরে কাশ্মিরি শাল, মাথায় উলের মাঙ্কি ক্যাপ, পায়ে উলের মোটা মোজা । তাতেও শীত মানছে না। আবার চা খেলেন শরীর গরম করার জন্য।কৈশোর আর যৌবনের সেই ড্যাম কেয়ার মাঘের শীত আর নেই। পড়ন্ত বয়েসে কুচকে যাওয়া চামড়ায় মাঘ জেকে ধরেছে।যেন বলছে ‘পাঁচটি বছর অপেক্ষায় থেকেছি – আসিসনি কেন’? বড় অভিমানী কণ্ঠ , ভালবাসায় ভরা। যাক তার মাটি আর খড় মেশানো দেওয়াল ঘরের ভেতর খুব গরম থাকে।মালসায় তুষের আগুন ঘরকে গরম রাখে দারুন।
চেয়ারে সামনের দিকে বসা তার বন্ধুরা শুধু আছে, বাকিদের অনেকেই চলে গেছে। বাড়ির সবাই অন্য কিছু গ্রামবাসীর সাথে ওদিকটায় আগুন পোহাচ্ছে। তাদের মাঝেও শুকনো পাতা , ডাল পালা জ্বলছে, বেশ আরাম নিচ্ছে সবাই।
আলাপে আলাপে লীগ দল চলে এল। তুমুল চলছে । উত্তেজনায় কেউ কেউ চাদর খুলে দাড়িয়ে পড়েছে । ঝগড়া দেশী রাজনীতির রন্ধ্রে মিশে গেছে। উপভোগরত মাজেদ চুপ করে বসে থাকা মাদ্রাসার সাবেক প্রিন্সিপালকে জিজ্ঞাসা করলেন কিরে জামাত তুই মাঠে নামোস না ক্যান, জমতাছেনা ক্যান জানি !! গম্ভীর উত্তর এলো ‘ জাতীয় পার্টি নাইতো তাই নামতাসি না’। হো হো উচ্চ হাসিতে গাছে বসা রাতের পাখিগুলো ঝটপট ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে গেল।
রাতের বিছানায় নরম মোটা বিদেশী কম্বল পেলেন। শোয়েব যেন একটা বস্তায় ঢুকে শুয়ে আছে। এই একদা তিনদিক খোলা দহলিজটির দেয়াল তার নির্দেশেই মাটির ব্লক দিয়ে তৈরি হয়েছে কেননা তিনি এলে অনেকে দেখা করতে আসে। বাকি বাড়ীগুলো পেছনে পর পর সাজানো । মেজভাই চাকরি থেকে অবসর নিয়ে সবার উপদেশ কানে না নিয়ে গ্রামেই দোতলা বাড়ি করেছেন ফ্লাট না কিনে। ছোট ভাই হবিগঞ্জে বাড়ি করেছে , কালে ভদ্রে আসে। শেষ মাথায় বড় ভাইয়ের পাকা দেয়াল উপরে টিন দেয়া বাড়ি। চার পাশ দিয়েই বড় বড় গাছের ঘন বাগান। গাছ কাটা নিষেধ আগাছা ছাড়া।ঢাকা থেকে গাছের চারা পাঠিয়ে দিতেন আর আগেতো গাছ ছিলই। কি গাছ নেই তাদের বাগানে !
সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল। বুঝলেন বাইরে ঘন কুয়াশা। হ্যা অদ্ভুতরকম কুয়াশায় চারিদিক ঢেকে আছে। কেউ নেই আশেপাশে,একটু গলা খাকারি দিয়েআবৃত্তি করলেন
“একদিন কুয়াশার এই মাঠে আমারে পাবেনা কেউ খুজে আর , জানি;
হৃদয়ের পথচলা শেষ হল সেই দিন- গিয়েছে সে শান্ত হিম ঘরে,------।
পেছনে কারো উপস্থিতি টের পেলেন, তার পৌত্রী, হাসি মুখে মাটির বাসনে ঢাকা কিছু নিয়ে সলজ্জ দাড়িয়ে । দিদি, এটা কি এনেছ? রসের পিঠা ,দাদাভাই। এখানে বইসা খাবা না বারান্দায় দিমু। একজন কিষাণ চেয়ার নিয়ে দাড়িয়ে। এখানেই খাব। আহা, রসে ভেজানো পিঠে ফুলে আছে , নারকেল আর গুড়ের অমৃত , নিশ্চয়ই বড় ভাবীর হাতে বানানো। দাদা পৌত্রী মিলে পিঠে খেলেন যা দিয়েছিল সবটুকু, চেটে পুটে ।

এবার বাড়ির ভিতরের অংশে সবার সাথে দেখাশোনার পর্ব । ভাবী , ভ্রাতুস্পুত্র – পৌত্রী ও পোতা-পুতনী সব মিলে জমজমাট অবস্থা। বড় ভাবী মাজেদের থেকে বড় কিন্তু বেশ আছেন । ছেলেরা ভোরেই হাওরে যায় মাছের নিকাশ করতে। আজ তারা কাকার সাথে দুপুরে খাবে। কুয়াশা কেটেছে বেশ। বাগানে ঢুকলেন গাছপালার অবস্থা দেখতে। মাজেদের পিছনে নাতি পোতাদের বিশাল মিছিল। পাতাগুলো এখনও শিশিরে ভেজা। বাচ্চাদের জিজ্ঞেস করলেন এই গাছটার নাম বলতো । সবচে ছোটটি আগে ভাগেই বলে উঠলো এই গাছের নাম ট্রি , হো হো হাসিতে বাগান মুখরিত। বাগানে দাড়িয়েই গাছের গল্প বললেন। এবার গরুর গোয়াল, ১৬ টি গরু, এড়ে ৪ টি আর গাভী ১২ টি। এদের দুধ তিনি খাচ্ছেন ও পরিবারের সবার খেতে হয় বাধ্যতামুলকভাবে। সবচে পুরনো গাভীটি তাকে দেখে উচু গলায় হাম্বা করে উঠলো। হাত বুলিয়ে বুকে চেপে ধরলেন। গরুগুলো মশারির নিচে থাকে। গায়ে পুরু চট দিয়ে বানানো পোশাক।
দুপুরে লম্বা খাওয়া ভাইপোদের সাথে, কথাবার্তা , নতুন পদ্ধতি ইত্যাদি । এরা সবাই গ্রাজুয়েট । চাকুরীর আশা না করে বাবার মাছের ব্যাবসায় নেমে পড়ল । ওরাই ভাল আছে অন্তত কেরানীর জীবন থেকে।
সবাই মিলে হাওর দেখতে গেল। হাওরের পাড়ে তেমন ঠাণ্ডা নেই। এই হচ্ছে মাজেদের অনেক স্মৃতিময় টাঙ্গুয়ার হাওর। পাখি আর হাসে ভর্তি । কত বাঁশের মাচা করা হয়েছে পাখি বসার জন্য । সাইবেরিয়া থেকে এই পাখিরা উড়তে থাকে । মঙ্গোলিয়া , চীন, তিব্বত হয়ে বাংলাদেশে। আবার ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে শুরু হবে ফিরতি যাত্রা। মাজেদ বলছিলেন তার পিচ্চি সঙ্গীদের। সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনছে দাদাভাইয়ের কথা। মেঘালয়ের হিমালয় পাহাড়ের অংশ দিয়ে এই পানি গড়িয়ে এই হাওরে পড়ে। ছোট ছোট নৌকায় চড়ে বসলেন সবাই। পানি খুব টলটলে এবং স্বচ্ছ । তীক্ষ্ণ নজরে আবিস্কার করলেন মহাশোল মাছ নৌকার নিচ দিয়ে ঘুরছে। কিছু নতুন জাতের পাখি আবিস্কার করলেন। তিনি একসময় পাখি ধরা নিষিদ্ধে সরকারী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তারপরও চুরি করে সিলেটে বিক্রি হয়।
খুব ইচ্ছে করছিল পানিতে নেমে গোসল করতে, কিন্তু পানি ছুতেই শরীর কেপে উঠলো। সন্ধ্যা নামতেই শহুরে শরীরে মাঘের কাপন ধরল। সবাই মিলে ফেরত এলেন। মোবাইলে বড় ভাবীকে বলেছিলেন গরম চায়ের কথা। ছোটবেলায় যেমনটি চুলার পাশে বসে শীত নিবারন করতেন আজ ঠিক তেমন করে চেয়ারে বসে আগুন আর চা উপভোগ করতে লাগলেন। হা হা করে বড়ভাবী এগিয়ে এলেন । মাজেদ বললেন মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে, পিচ্চিগুলো দাদা ভাইয়ের সাথেই চুলার কাছে বসে পিঠা খেতে লাগলো ।
এরই মধ্যে শোয়েব ও তার বড় ভাইরা মিলে ব্যাটারি ট্যাক্সি করে নানা সাইজের সোয়েটার , উলের টুপি, চাদর , মোজা , হাতের গ্লাভস নিয়ে এলো। সবাই পেল ও প্রতিবেশীদের দেওয়া হল। ওদের অল্প কাপড়ে শীত নিবারনের প্রচেষ্টায় মাজেদ কষ্ট পাচ্ছিলেন। এসবের খরচা কাতারের মেজপুত্র দিচ্ছে। টেলিফোনে শুনেই বাবাকে বলল তুমি ব্যাবস্থা কর আমি টাকা পাঠাচ্ছি।
রাতে কম্বলের নিচে শুয়ে শোয়েবের বড় মোবাইলে খবর দেখলেন। দেশ বিদেশের খবর দেখা তার অবসর জীবনের অংশ হয়ে গেছে। প্রতি রাতেই স্কাইপিতে কথা হয় ঢাকায়, ওরা মানে ঢাকার পিচ্চি গ্রুপ লাইনে দাড়িয়ে কথা বলে। এখানে অজগর সাপ আর বাঘ এবং ভালুক আছে কিনা তা নিশ্চিত করে। মাজেদ বলেন এখানে বন্দুক আছে, ওরা বলে বন্দুকগুলো র্যাাবের বন্দুকের মত কিনা !
পরদিন কাছেই ৫ কিলো দূরে শ্বশুরবাড়ি। ২০ কেজি মিষ্টি আর ঢাকা থেকে জোহরার দেওয়া গিফট নিয়ে পৌঁছুলেন । উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং দুপুরে চীনা হাসের অসাধারন স্বাদের মাংস দিয়ে সেমাই পিঠা। পেট পুরেই খেলেন। বিকালে চা নাস্তা খেয়ে ফেরত এলেন সামনের বছরে জোহরাকে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে।
রাতে আঁধারে কম্বলের উষ্ণ আবরনে শুয়ে মাজেদ স্মৃতিচারণ করছিলেন সবচে কাছের বাড়ির তার সমবয়সী সায়মার কথা। কি প্রেম দুজনের , চিঠিতে, কারন প্রেম একটি নিষিদ্ধ বিষয় ছিল তখন। এক দুবার রাতের আঁধারে বাগানে মিলিত হতেন দুজনে। সায়মার বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে চলে গেল ঘর-সংসার করতে। সায়মা কোথায় আছে তিনি জানেন না। আচ্ছা সায়মা কি তাকে মনে রেখেছে?? হাসেন একা একা। সায়মার কঠিন বাহুবেষ্টনী আর চুলের নারকেল তেলের গন্ধ অনুভুতি এখনও এই অর্ধশতাব্দী বাদে পান তিনি। হটাত জোহরার ঝামটা মাখা মুখখানি ভেসে উঠতেই মাজেদ দ্রুত চ্যানেল বদলে জি বাংলা থেকে বি টি ভিতে চলে এলেন।
ভোরে ঘুম ভাঙ্গার অভ্যাস তার চিরকালের। ভোরের আলোহীন কুয়াশাচ্ছন্ন বাইরের দৃশ্যটা ভিতরে শুয়ে টের পান। সুনসান চারিদিকে কিছু পাখির ডাক আর শিশির পতনের টুপটাপ আওয়াজ শুনে বুঝলেন বৃষ্টি হতে পারে। ঠাণ্ডা বেশ চড়া । প্রতিদিন ভোরের পিঠা একটু নেশা ধরিয়ে দিয়েছে। শীতকাল বেশি প্রিয় মাজেদের। চাকুরি জীবনে শীতেই ছুটি উপভোগ করতেন সপরিবারে এই বাড়িতে । হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা কনকনে শীত শরীরে কাপন ধরালেও মনকে উষ্ণ রাখত।
দুপুরে গায়কদল এলো শাহ আব্দুল করিমের আস্তানা থেকে। করিম মারা গেছেন কবছর হল। শীতে তাদের ডাক পড়ে পুরো সিলেট জুড়ে । করিম বেচে থাকতে ফাল্গুন মাসে কালনি নদীর পাড়ে দিরাই গ্রামে উৎসব হত । দলের প্রবীন নবীন গায়ক বাদকদের সাথে স্মৃতিচারন করলেন অনেক। সজ্জন করিমের জন্য যতটুকু সাধ্য মাজেদ করেছেন। গান শুরু হল। আহা মন ভরে গেল । ঢাকাতে করিমকে বাউল বানিয়ে ছেড়েছে আর ব্যান্ড গায়করা করিমের গান গাইছে নিজেদের নাম করে। ছিঃ , কি লজ্জা!
গান চলছে ‘ কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু----, কোন মিস্তিরি নাও বানাইল--, তুমি সুজন কাণ্ডারি---‘। আসর জমজমাট। বিকালে চা খাওয়ার পর আবার শুরু। মানুষে সয়লাব উঠোন। চাদর কম্বলে ঢাকা দর্শক মুগ্ধ হয়ে শুনছে । রাত ১১ টায় আসর শেষ। রাতে করিমের দলের সাথে খেলেন একসাথে। ওদের শোয়ার আয়োজন ছোট ভাইয়ের খালি ঘরে।
ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে। মাজেদের ঘরে সেই মালসায় তুষের আগুন, ঘর গরম হয়ে আছে। গরম ডাল কাচা মরিচের স্বাদে শরীরটাকে গরম রেখেছে, আরামই লাগছে।
প্রতিদিন সকালে তারই একদা লাগানো গাছের ফুল পাচ্ছেন হাতের মধ্যে । গাঁদা ফুলে বাড়ি ভর্তি। শিউলি তো অসাধারন সাথে জুই,জবা, গোলাপ -----।
গ্রামে এলেন-মাঘী পূর্ণিমা মিস করবেন?
সন্ধ্যায় বড় নাও সাজিয়ে শুধু বড়রা গেলেন । হাওরের মাঝ বরাবর অবস্থান নিলেন । কুয়াশা কম । চাঁদ উঠলো এবং আস্তে ধীরে ওপরে উঠতেই কুয়াশার আবরনে রংধনুর বৃত্ত চাঁদকে ঘিরে রইল। চাঁদ অত পরিস্কার নয়। তবুও একটা আলাদা মজা আছে এই দৃশ্যে । রাতে ঘাটে নাও ভিড়ল । মাজেদের মনটা ফুরফুরে।
আজ ফেরার দিন। খুব ভোরে প্রস্তুতি নিলেন । রাতে ঢাকা থেকে আসা গাড়িতে মাছ, পিঠার হাড়ি, শীতের সব্জি উঠলো। সবাই মাজেদকে বিদায় জানাতে এসেছে সেদিনের দেওয়া নতুন কাপড় পরে। আবার বিদায় সম্ভাষণ । ছোট পৌত্রকে বললেন সব গাছের নাম মুখস্থ করবে , আমি আবার এসে শুনব।
গাড়িতে উঠতে উঠতে মাজেদের চোখে পানি এসে গেল। আর কি দেখা হবে এদের সাথে, এই বৃক্ষমালার সাথে। বাচ্চারা গাড়ির পিছনে দৌড়াচ্ছে । গাছের পাতার শিশিরবিন্দু তার চোখের পানির মত চকচক করছে। তার হাতে একগাদা নানা রকমের ফুল, পৌত্র-পুত্রীরা দিয়েছে।
গাড়ি বড় রাস্তায় উঠলো।
হাল্কা কুয়াশা কেটে গাড়ি ঢাকার পথে।

শেষ

শীত / ঠাণ্ডা (ডিসেম্বর ২০১৫)
কপি রাইটঃ শাহ আজিজ

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৬
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×