একটানা তিনদিন ছুটি । আমার ছুটি প্রতিদিন । ইচ্ছে হল একটু ঘুরে বেড়াই । আমি যেদিকে যেতে চাই কন্যা সেদিকে রাজী না । হতাশা গ্রাস করল আমায় । এবার প্রস্তাব হল মিরপুর ডি ও এইচ এসের মধ্যে ঘুরব । রাজী আমি । রিকশা নিয়ে ১২ নাম্বারে গিয়ে হলুদ জ্যাকেটের ব্যাটারিবিহীন রিকশায় চড়ে আবার যাত্রা শুরু । ১২ নাম্বারের এদিকে বানিজ্যিক দালান অনেক কিন্তু ভাড়াটে নেই । এখানে বুফেগুলো বেশ বড় , দুবার এসেছি খেতে । সোসাইটির বড় উচু রেসিডেনশিয়াল এলাকায়ও একই অবস্থা । মানুষজন ভয়াবহ কম । আমরা মিরপুরে আসার আগে আমি জানতে চেয়েছিলাম এই সোসাইটির বাড়িগুলো কেমন হবে । কন্যা বলল ওখানের বড় সমস্যা গৃহকর্মী নিয়ে । আমাদের এক দুজন থাকে এবং তারা ভাল নেই । এবার দেখা মিলল বিশাল পুকুর বা লেকের । বাচ্চারা খেলছে , বয়স্করা পুকুরের চারদিকে চমৎকার বাধানো রাস্তায় হাঁটছেন । আমরা নেমে হাটা শুরু করলাম । একটা অসাধারন পরিবেশ বিরাজ করছে এখানে । শান্তির জায়গা বটে । গাছপালা আর সবুজের সমারোহে ডি ও এইচ এসের গোটা পরিবেশ আমার খুব ভাল লাগলো । হটাত মনে হল হাটতে কষ্ট হচ্ছে , দুপায়ের উরু বরাবর চিনচিন ব্যাথা । এটা হয় হাটতে বেরুলে কিন্তু আজ একটু ভিন্ন । দাড়িয়ে কিছুক্ষন জিরিয়ে নিয়ে আবার শুরু করলাম । হিপ জয়েন্ট ক্ষয় শুরু হয়েছে আগেই , হয়ত আরও বেড়েছে । একটা চমৎকার সন্ধ্যা কাটিয়ে ফিরে এলাম ।
দুটো হিপ জয়েন্ট পালটেছেন এমন এক আত্মীয় বললেন ভাল নেই রে ভাই , না পালটালে মনে হয় ভালই ছিলাম । বেশ চিন্তার ব্যাপার । আগে মাইল কে মাইল হাঁটতাম কোন বাধা ছাড়াই । ইদানিং হাঁটুতে অপারেশনের পর বুঝতে পারছি আগের তেজ নেইরে শাহ আজিজ , বার্ধক্য তোকে ঘিরে ফেলেছে , ধাক্কা গুঁতো খেয়েই জীবন চলবে । মানুষের জীবনটা এমনিই ।
চারিদিকের রুপকথা আনন্দগাঁথা কেমন বিবর্ণ হয়ে আসছে শাহ সাহেব , টের পাও !
মাথার ওপর ভাঙ্গা চালের সববাধা এড়িয়ে চাঁদের আলো তোমার মৃদু ভরসা আশা
সব হতাশা ১২ নম্বর সিগন্যাল নিয়ে আসছে ঝাঁপিয়ে কি তরতাজা আর খাসা
দুঃখগুলো পুষে পুষে ক্লান্ত কবি চাই একটু সুখের সন্ধান মরা জলে হৃদয়টা খায় খাবি
ঘুরে ফিরে সারাটা উঠোন আর হাৎনের কোনে কোনে হাতড়ে ফিরি দরকার শুধু সুখের চাবি ।
( অসমাপ্ত কবিতা) ৩১/৮/২০২৩
আবারো যাব ঐ পার্কে , বেঞ্চে বসব আর সাথে নেওয়া শুকনো খাবার খাব বা চিবাবো । দল বেধে গেলে মজা হবে আড্ডা দিতে ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৬