গাজা ইস্যুকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ মধ্যপ্রাচ্য। এরই মধ্যে লেবাননের ইরানপন্থি সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতময় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে নতুন মাত্রায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার। নতুন এই পরিস্থিতি নিয়ে নানা সমীকরণ মেলাচ্ছে পরাশক্তি দেশগুলো।
গেল ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর ওয়াকি-টকি ও পেজার বিস্ফোরণের মাধ্যমে লেবাননে শত শত মানুষকে হতাহত করেছে ইসরায়েল। এরপর তারা সরাসারি বিমান হামলা চালায়। ২০ অক্টোরব থেকে দেশটিতে পুরোদমে হামলা শুরু করে ইসরাইল। ইতোমধ্যে ৬ শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তারা।
এই অবস্থায় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইসরায়েলকে সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তবে নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— হামলা থামবে না, চলবে। শুধু তাই নয়, দেশটিতে স্থল অভিযান পরিচালনা করার পরিকল্পনাও করছে ইসরায়েল। দেশটির একটি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম বলেছে, লেবাননে সম্ভাব্য স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, লেবাননে স্থল অভিযান চালাতে মহড়া চালাচ্ছে সেনারা। অর্থাৎ লেবাননে মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে। আর সহজেই বা অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই এ যুদ্ধ থামার ইঙ্গিত নেই।
এই অবস্থায় লেবানন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, পর্তুগালসহ অনেক দেশ। এ ছাড়াও দেশটিতে যেতে নিজ দেশের নাগরিকদের বারণ করেছে চীন। এ ছাড়া রাশিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া, তুরস্কসহ আরও অনেক দেশ লেবাননে নিজ দেশের নাগরিকদের ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্ক করেছে। অর্থাৎ বিশ্ববাসী লেবাননে ইসরায়েলের হামলার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত।
গাজায় ইসরায়েলের অভিযান চলছে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে। তবে এ পর্যন্ত লেবানের প্রতিরোধ যুদ্ধা এবং হুথি যুদ্ধা ছাড়া, অন্য কেউ-ই হামাসের পাশে সরাসরি অবস্থান নেয়নি। মুখে ফাঁকা বুলি আওড়ানো, জাতিংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে ভোটদান এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা ছাড়া মূলত কোনো দেশই ফিলিস্তিনিদের জন্য তেমন কিছু করতে পারেনি।গাজায় হাজার হাজার মানুষ হত্যার দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও এখন পর্যন্ত ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন নিতে পারেনি। লেবাননের ক্ষেত্রেও মুসলিম বিশ্ব বিক্ষোভ মিছিল এবং হুমকি-ধমকি দেওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দিগন্ত