somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গিলা-কলিজা বা লটপটি

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এক সময় আমরা খুব গিলা কলিজা ভুনা পরাটা দিয়ে রসিয়ে রসিয়ে খেতাম । ঈশ্বর বিরক্ত হয়ে বাধা দিলেন । প্রেসার বাড়িয়ে হাইপারটেনশন চড়িয়ে দিলেন । ব্যাস গেলো ২৫ বছর ওসব বন্ধ হয়ে গেলো । দেশের আমিষের চাহিদা পূরণের সহজলভ্য উৎস ব্রয়লার মুরগি। বেশ কয়েকবছর ধরে দেশের রেস্তোরা ব্যবসায় হাড়হীন মুরগির মাংসের জনপ্রিয়তা বাড়ে। নামি-দামি রেস্তোরাগুলোর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু বোনলেস বা হাড়হীন মাংস। অবশিষ্ট মাংস সংবলিত হাড়গুলো ব্যবহার হতো মাছ ও মুরগির ফিডে। মুরগির মাংসের দাম বাড়া, পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের আমিষের চাহিদা সামান্য হলেও মেটাচ্ছে এসব হাড়হীন মুরগীর মাংস।

জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০-২০০টাকা। মূল্যস্ফীতির প্রভাবে কয়েক বছর ধরে মুরগির দাম আকাশচুম্বি হওয়ায় নামমাত্র মাংস সংবলিত পাঁজরের হাড়ের চাহিদা বেড়েছে। আগে এসব হাড় মাছের খাদ্য তৈরীতে ব্যবহার হলেও আয় বৈষম্যের কারণে এখন নিম্ন আয়ের মানুষ খাবার হিসেবে গ্রহণ করছেন। তাই দিন দিন চাহিদা বাড়ায় এসব হাড়ের দামও বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে পুষ্টিবিদদের কাছে মুরগির এসব হাড় খাদ্য নাকি অ-খাদ্য তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, রায়সাহেব বাজার ও কাপ্তান বাজার ঘুরে দেখা যায়, নামমাত্র মাংস সংবলিত মুরগির হাড় কেজি প্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাড়ে মাংসের পরিমাণটা বেশি থাকলে তা ১৪০টাকায় কিনতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের। আর প্রতি কেজি গিলা কলিজা ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, মুরগির পা প্রতি কেজি ১২০ টাকা ও পাখনার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।

এছাড়াও পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, যাত্রাবাড়ি ও কাপ্তান বাজার ঘুরে অন্তত ১০ থেকে ১৫ জনকে এসব লটপটি কিনতে দেখা যায়। তারা বলেন, ‘বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়লেও আয় বাড়েনি। খাবারে আয়ের বেশি অংশ ব্যয় হয়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি রয়েছে বাসা ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ। এমনকি মাসের দু’একটা দিন বাচ্চাদের মুখে ভালো খাবার তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও এসব মুরগির হাড় কেজি প্রতি ১৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বেশি মাংসসহ হাড় কিনতে গেলে আরও বেশি দাম লাগছে।’

গার্মেন্টস কর্মী নাফিসা বলেন, ‘আমার স্বামীও গার্মেন্টসে চাকরি করেন। দু’জনে মিলে যে আয় করি তা দিয়ে বাসা ভাড়াসহ খাবার খরচে সব ব্যয় হয়ে যায়। দেশি মুরগির কথা তো চিন্তায় করি না, ফার্ম’র মুরগি কখনো কখনো কেনা হয়, না হলে মুরগির হাড়-পাখনা কেনা হয়। সামর্থ না থাকায় বাচ্চাদের একটু ভালো খাবার দিতে পারছি না।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘সাধারণত রাজধানীর ভাসমান হোটেলগুলোতে লটপটি হিসেবে বিক্রি হয়ে আসছিলো এসব মুরগির হাড়। কিন্তু মুরগির দাম বাড়ায় গেল কয়েকমাস থেকে সাধারণ মানুষের কাছে এসব লটপটির চাহিদা বাড়ে। তাই দিন দিন এর দামও বাড়ছে।’

কাপ্তান বাজারের পাইকারি মুরগি ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘বড় কোম্পানি ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা আমাদের থেকে হাড়হীন মুরগির মাংস কিনেন। অবশিষ্ট যে মুরগির হাড় থাকে তা ঢাকাসহ সারা দেশের লটপটি হিসেবে ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান। এসব লটপটির কেজি বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকা করে।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আবু তোরাব এম এ রহিম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মানুষ তার আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ খাদ্যে ব্যয় করে। যখন ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে তখন তাকে নিম্ন কোয়ালিটি খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে মানুষ বাজার থেকে মুরগির যে সকল হাড় কিনে খাচ্ছে তা কি খাদ্য নাকি অখাদ্য তা দেখার বিষয়। ভালো রেস্তোরাগুলোতেও হাড় খাচ্ছে। তবে আমরা যে হাড় খাই না বিষয়টি তা নয়। হাড়ের মধ্যে মিনারে কন্টেন্ট হাইপ থাকলেও প্রটিন কম হবে। উন্নত বিশ্বে হাড় ফিডের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। যা পশুর খাদ্য হিসেবেও বিবেচিত হয়। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ তাই খাচ্ছে। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে আয়ের ব্যাপক বৈষম্য রয়েছে। সে অবস্থায় নিন্ম আয়ের মানুষ বাজারে ব্যয়ের সাথে তাল মেলাতে না পেরে এসব খাদ্য খাচ্ছেন।

পুষ্টির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, কারো এনার্জি রিকোয়েরমেন্ট যদি ফুল ফিল না হয়। তাহলে শরীর কিন্তু অন্যান্য নিউট্রেন্ট কোন কাজে ব্যবহার করতে দেয় না। সুতরাং বৈচিত্রময় অন্যান্য যাই খাক, ভাতের মূল যে কেলোরি চাহিদা রয়েছে। সেটির ঘাটতি থাকলে অন্যান্য খাবার কোন কাজে আসবে না। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ তাদের চাহিদা অনুযায়ী ভাত কিনেই খেতে পারছে না। সেই অবস্থায় আমরা পুষ্টিবিদরা কখনো এসব খাদ্যের বিষয় কাউকে পরামর্শ দেই না।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:০৫
৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন আগে দিয়ে দেখতে দিন কে বাঘ কে বিড়াল?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬



সব দলের অংশগ্রহণে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন আগে দিন। কোন দলকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে কি করেনি সেইটাও জাতিকে দেখতে দিন। পিআর পদ্ধতির জাতীয় সংসদের উচ্চ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×