সারা বছর যেমন ভাবে মানুষ দিনরাত গোনাহে লিপ্ত থাকে দেখা যায় রমজান মাসেও এর ঝঙ্কার থেমে নাই। মানুষের অন্তর, চোখ, কান, হাত, পা, জিহ্বা কোনোটিই গোনাহমুক্ত থাকতে পারে না। পানাহার ও ইন্দ্রিয় কামনা এবং চোখ, কান, জিহ্বা, হাত, পা-কে পাপ হতে মুক্ত রেখে অন্তরকে সব ধরনের কুচিন্তা ও বৈষয়িক লোভ-মোহ থেকে মুক্ত করে আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন হওয়াই হচ্ছে উচ্চস্তরের রোজা।
রোজা রাখার সময় সবার আগে দেহের রোজা রাখতে হবে আর দেহের রোজার ভিত্তি হচ্ছে অন্তরের রোজা। অন্তরের হেদায়াতই সব ইবাদতের মূল লক্ষ্য আমরা
সবাই ঈমানের রসে পাপী অন্তর যদি সিক্ত না করতে পারি তাইলে পাপাচার ও কামাচারের মতো কাজ কে নিয়ন্ত্রণ করা কখনো সম্ভব নয় হবে না,রোজা কষ্ট করে রাখলে ও তা কখনো রোজা বলে আল্লাহ কাছে গন্য হবে না।
রোজা হচ্ছে পেটকে হারাম খাদ্য ও পানীয় থেকে বাঁচিয়ে রাখা।এখন যদি আমরা ঘুষ খাই ডাকাতি করে চুরি করে খাই তাইলে? রোজার সময় দিনের বেলায়ও পেটকে হালাল খাদ্য থেকে বিরত না রাখি তাইলে তা কখনো রোজা আল্লাহ কাছে গ্রহণ হবে না, এবং হারাম জিনিস বর্জন করা। মূলত দেহের রোজার বিশুদ্ধতা নির্ভর করে পেটের রোজার ওপর।
আমাদের জিহ্বাকে বেহুদা কথা ও গোনাহের কাজ থেকে সংযত ও বিরত রাখাই হচ্ছে জিহ্বার রোজা।আমরা তো অশ্লীল কথা জন্য অনেক ক্ষেতি আছে তাইলে অশ্লীল কথা থেকে বিরত থাকাই উচিত মন্দ ব্যবহার ও মিথ্যা বলার দরুন অনেকের রোজা নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য রোজাদারকে কম কথা বলে বেশি বেশি কুরআন পাঠ, সৃষ্টিকে নিয়ে গবেষণা, তাওবাহ, তাসবীহ, দাওয়াতের কাজ ও নেকের কাজে ব্যস্ত থাকা আমাদের দরকার।
চোখ হলো মনের আয়না। যে কোনো গোনাহের কাজ করার আগে চোখ প্রথমে তা দেখে এবং পরে মনকে প্রলুব্ধ করে।আর এই চোখ দিয়েই দুনিয়ার সব খারাপ কাজ করি আমরা তাই চোখের হেফাজত করা মানেই মনের হেফাজত করা। অশ্লীল, হারাম ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে চোখের দৃষ্টিকে ফিরিয়ে রাখা এবং মনে রাখবেন নেক ও ভালো কাজের প্রতি চোখ খুলে রাখা ও দেখাই হচ্ছে চোখের রোজা।
আমরা তো বাঙালী ভালো কথা, হেদায়াতের কথা, কল্যাণের কথা শোনা আমাদের পেটে হজম হয় না তাই এই গুলা কম শুনি, মন্দ কথা, অশ্লীল গানবাজনা যথাসম্ভব রোজার সময় পরিহার করুন তাইলে কানের রোজা হবে,
পা-কে বিপথগামী না করা। অর্থাৎ পাপাচারের পথে, খারাপ পথে পা না বাড়িয়ে শান্তি ও কল্যাণের পথে পা বাড়ানো হয় তাইলে আপনার পায়ের রোজা হয়ে যাবে
হাত দিয়ে কোনো পাপের কাজ বা মানুষের ক্ষতি হয় এমন কাজ না করাই হাতের রোজা।এখন যদি এই হাত দিয়ে আমরা এই মাসে পাপ, খারাপ কাজ যদি না করি তাইলে বুঝতেই পারতাছেন আমাদের সমাজ কি হবে? আল্লাহ আমাদের হাত দিয়েছেন সৎ কর্ম করার জন্য, মুনাজাত করার জন্য। জিনিসপত্রে ভেজাল মিশাতে, ওজনে কম দিতে, মারামারি, খুনাখুনি করতে, অসৎ উপায় অবলম্বন করতে বা কলমের আঁছড়ে দুর্নীতি বা জুলুম করার জন্য নয়। তাইলে এই মাসে আপনি রোজা রাখবেন তাই এই গুলা থেকে বিরত থাকুন প্লিজ দেখবেন সমাজ কি রকম পালটে গেছে,কিন্তু কয়জন পারবে??? সেটাই দেখার বিষয়,
আমাদের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গই আল্লাহর কাছে পবিত্র আমানত।সেইজন্য আমাদের সবাইকে যথাযথ ভাবে তা ব্যবহার করা প্রতিটি রোজাদারের ফরজ দায়িত্ব,।
আমাদের সবাইকে আল্লাহ সঠিক ভাবে সঠিক নিয়মে রোজা রাখার তাওফিক দিন আমিন,।
প্রেমিক প্রেমিকা কে একটা ফ্রি উপদেশ দিতে চাই,
কাল থেকে পবিত্র মাহে রমজান শুরু তাই আপনারা যারা ইটিসপিটিস করেন তাদের কে বলতাছি যদি রোজা রাখেন তাইলে ইটিসপিটিস সংযত রাখিয়েন,
ইন্দ্রিয় কামনা, চোখ, কান, জিহ্বা, হাত, পা-কে অশ্লীল মুক্ত রেখে অন্তরকে সব ধরনের কুচিন্তা ও বৈষয়িক লোভব-মোহ থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা কইরেন, লোক দেখানো রোজা রাখিয়েন না,
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস থাকার নামই রোজা নয়। মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের রোজাই প্রকৃত রোজা।